বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট বা বিজিবিএস) শুরু হয়েছে বুধবার। সেখানে আমন্ত্রিত ‘হিন্দুস্থান এজিস এলপিজি লিমিটেড’। তবে হলদিয়ার এই পেট্রোপণ্য সংস্থা ১৮ মাস আগে আবেদন করেও জমি পায়নি। তাই এ বার বাণিজ্য সম্মেলনে বলার সুযোগ পেলে, জমি বণ্টনের কাজ দ্রুত করার আর্জি জানাতে চান সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সংস্থাটি হলদিয়ার পাতিখালিতে বিদেশ থেকে পেট্রোপণ্য আমদানি করে বিভিন্ন সংস্থায় সরবরাহ করে। হলদিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার গ্যাস সিলিন্ডারও ‘রিফিল’ করে তারা। আগামীতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি তৈরির প্রকল্পের জন্য ২০২৩ সালে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে প্রায় ১৬ একর জমি চেয়ে আবেদন করেছিল তারা। পর্ষদের তরফে তেঁতুলবেড়িয়া মৌজায় প্রায় ১৬ একর জমি দেখানোও হয় সংস্থাটিকে। তার পরে সংস্থার তরফে ‘ডিপিআর’ (ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট) জমা দেওয়া হয়। সংস্থার তরফে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে ‘ডিপিআর ভ্যালুয়েশন’ করানো হয়েছে বলে দাবি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ-সহ একাধিক দফতর ওই জমি পরিদর্শনও করেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, এর পরে রাজ্য সরকারের তরফে জানতে চাওয়া হয়, ওই জমি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হবে, না শিল্পের কাজে ব্যবহৃত হবে। জমি শিল্পের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে রাজ্যকে। সংস্থার দাবি, ওই জমিতে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি গ্যাস তৈরি করা হবে। এলপিজির ‘বটলিং প্লান্ট’ও গড়া হবে। বিনিয়োগ হবে প্রায় ২৮০ কোটি টাকা। কমপক্ষে দু’শো জনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে।
ইতিমধ্যে কেটেছে প্রায় দেড় বছর। কিন্তু সংস্থাটি জমি পায়নি। ওই সংস্থার এভিপি রথীন সরকার বলেন, ‘‘প্রায় ১৮ মাস আগে জমির জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের কাছে আবেদন করেছি। জমি দেখে ডিপিআর দিয়েছি। এখনও সবুজ সঙ্কেত পাইনি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এ বার বাণিজ্য সম্মেলনে কিছু বলতে দেওয়া হলে আবেদন করব, যত দ্রুত সম্ভব জমি দেওয়া হোক।।’’
রাজ্য সরকার যেখানে দেশ-বিদেশের শিল্প সংস্থাকে আহ্বান জানাচ্ছে, সেখানে একটি সংস্থাকে কেন জমির জন্য এত দিন অপেক্ষা করতে হবে, সে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সভাপতি প্রদীপকুমার বিজলির কটাক্ষ, ‘‘বাণিজ্য সম্মেলনের নামে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। বিগত ১৪ বছরে হলদিয়ায় নতুন কোনও শিল্প আসেনি। যে সব সংস্থা জমি চাইছে বিনিয়োগের জন্য, তাদের জমিটুকু দেওয়া হচ্ছে না।’’
কিন্তু কেন জমি দেওয়া যাচ্ছে না ওই সংস্থাকে? হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় করের জবাব, ‘‘ওই শিল্প সংস্থার আবেদন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশক্রমে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে পর্ষদ।’’ সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার ছাড়পত্র জরুরি। তা না মেলায় আটকে রয়েছে জমি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)