E-Paper

চূড়ান্ত হয়নি দরপত্র, কর্মী নিয়োগে বিঘ্ন

নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় গত বছর হাওড়ার একটি সংস্থাকে কর্মী সরবরাহের বরাত দেওয়া হলেও সম্প্রতি তমলুকের সংস্থাটি ফের দায়িত্ব পেয়েছে।

কেশব মান্না

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ০৮:৫৫
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দরপত্র চূড়ান্তের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। অভিযোগ, এর ফলে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার অধীন মহকুমা হাসপাতাল, ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রয়োজন মতো ‘হাউস কিপিং স্টাফ’ (সাফাই কর্মী এবং নিরাপত্তাকর্মী) নিয়োগে সমস্যা দেখা গিয়েছে। পুরনো দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী ওই সব কর্মী সরবরাহকারী সংস্থাকে বেশি লভ্যাংশ দিতে হচ্ছে বলেও দাবি।

বর্তমানে জেলায় রয়েছে দু’টি স্বাস্থ্য জেলা— পূর্ব মেদিনীপুর এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা। এই দুই স্বাস্থ্য জেলার আওতাধীন মহকুমা হাসপাতাল, ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ‘হাউস কিপিং স্টাফ’ সরবরাহ করে তমলুকের একটি বেসরকারি সংস্থা। ২০১৫ সাল থেকে (অবিভক্ত পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা) তারা এই দায়িত্বে রয়েছে। সে সময় সংস্থাটি কর্মী সরবরাহের জন্য অর্থ ছাড়াও ‘ম্যানেজমেন্ট ফি’র উপরে ৯.৮৮ শতাংশ লভ্যাংশ নিত। ২০১৭ সাল নাগাদ স্বাস্থ্য জেলা ভাগাভাগি হয়ে যায়। এর পরে ২০২৩ সালের নভেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা নতুন করে দরপত্র দেয় ওই কর্মী সরবরাহকারী সংস্থাকে। তারা সে সময় ‘ম্যানেজমেন্ট ফি’র উপরে কোনও রকম লাভ্যাংশ না নিয়েই পরিষেবা দিতে রাজি হয়।

নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় গত বছর হাওড়ার একটি সংস্থাকে কর্মী সরবরাহের বরাত দেওয়া হলেও সম্প্রতি তমলুকের সংস্থাটি ফের দায়িত্ব পেয়েছে। দাবি, এই স্বাস্থ্য জেলার ওই বরাত দেওয়ার দরপত্রের প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাই সংস্থাটি পুরনো নিয়ম মতো এখনও ন’শতাংশের বেশি হারে লভ্যাংশ নিচ্ছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের দাবি, লভ্যাংশের হার বেশি দেওয়ার ফলে তাঁদের ভাঁড়ারে অর্থ কমছে। এর ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ‘হাউস স্টাফে’র চাহিদা বাড়লেও অর্থের অভাবে সংস্থার কাছ থেকে বেশি সংখ্যক ‘স্টাফ’ নেওয়া যাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্বাস্থ্য আধিকারিক জানাচ্ছেন, অনেক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র আবার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উন্নীত হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা ও সাফাই কর্মীর দরকার রয়েছে। কিন্তু ওই সংস্থা লভ্যাংশ বেশি নিয়ে চলে যাওয়ায় অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, সমস্ত সরকারি হাসপাতাল এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে নিরাপত্তা কর্মী আর সাফাই কর্মী রাখতে হবে। সরবরাহের দায়িত্বে থাকবে বেসরকারি সংস্থা। সরকারি নির্দেশিকা মতো, প্রতি তিন বছর অন্তর ‘হাউস কিপিং স্টাফ’ সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।

নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় এই দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ করতে এত দেরি হচ্ছে কেন? এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত কুমার দেওয়ান বলেন, ‘‘হাউস কিপিং স্টাফ সরবরাহকারী সংস্থা ঠিক করতে একটি দরপত্র কমিটি রয়েছে। তারাই মূলত বিষয়টি দেখছে। চলতি মাসের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত করা হবে।’’ গোটা রাজ্যে এ ধরনের কর্মী নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা সর্বাধিক চার থেকে পাঁচ শতাংশ লাভ নিচ্ছেন। পাশের স্বাস্থ্য জেলায় একই সংস্থা কোনও লাভ ছাড়া পরিষেবা দিচ্ছে, নন্দীগ্রামে কেন ন’শতাংশের বেশি লাভ তুলে দেওয়া হচ্ছে? স্বাস্থ্য আধিকারিকের জবাব, ‘‘এই বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nandigram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy