Advertisement
E-Paper

লোকসান বাড়ছে, হুকিং রুখতে আসরে তৃণমূল নেতৃত্ব

মিটারে কারচুপি এবং হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা নতুন নয়। ঘাটালের মান্দারপুর গ্রামের হুকিংয়ের ছবি বেআব্রু হতেই নড়ে বসল বিদ্যুৎ দফতর। সঙ্গে শাসকদল তৃণমূলও।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৫
আজব: মান্দারপুরের এই ছবিই চমকে দিয়েছিল। ফাইল চিত্র

আজব: মান্দারপুরের এই ছবিই চমকে দিয়েছিল। ফাইল চিত্র

মিটারে কারচুপি এবং হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা নতুন নয়। ঘাটালের মান্দারপুর গ্রামের হুকিংয়ের ছবি বেআব্রু হতেই নড়ে বসল বিদ্যুৎ দফতর। সঙ্গে শাসকদল তৃণমূলও।

হুকিং রুখতে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ চুরিতে রাশ টানতে নিয়মিত অভিযান-সহ সচেতনতার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে বিদ্যুৎ দফতরও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ করতেই হবে ।আমি জেলার প্রতি পঞ্চায়েত প্রধান এবং জন-প্রতিনিধিদের পাড়ায়-পাড়ায় বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।পা শাপাশি বিদ্যুৎ দফতরকে সাহায্য করতে সংশ্লিষ্ট প্রধানদের বলা হয়েছে।” বিদ্যুৎ দফতরের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রিজিওনাল ম্যানেজার চিরঞ্জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘বিদ্যুৎ চুরির ফলে মাসে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। তাই চুরি ঠেকাতেই হবে। অভিযান তো চলছেই। সঙ্গে সচেতনতা শিবিরও করা হবে।’’

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম-দুই জেলার পাঁচটি ডিভিশন রয়েছে। ঘাটাল, মেদিনীপুর, বেলদা, ঝাড়গ্রাম ও খড়্গপুর-এই পাঁচটি ডিভিশনে দিনে গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ৬১৫ মেগাওয়াট। প্রতি মাসে ১৫০ মিলিয়ন (শিল্প ও হিমঘর বাদে) ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এর মধ্যে দফতরের সিস্টেম-সহ বিদ্যুৎ পরিবহণ বাবদ ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ খরচ হয়। দফতরের তথ্যই বলছে, ফি মাসে ৬০ থেকে ৬৫ মিলিয়ন ইউনিটের বিদ্যুৎ বিল বাবদ আদায় হয়। বাকি ইউনিটের (বিদ্যুৎ খরচ হলেও) টাকা আদায় হয় না। সূত্রের খবর, স্রেফ মিটারে কারচুপি ও হুকিংয়ের ফলেই জেলায় কমবেশি কুড়ি কোটি টাকা দফতরের লোকসান হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, “এখনই বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ না করা গেলে গোটা দফতরটাই মুখ থুবড়ে পড়বে। আমাদেরও তো বিদ্যুৎ কিনেই সরবরাহ করতে হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরাও খুব চিন্তিত।”

বিদ্যুৎ দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, জেলা জুড়েই হুকিং চলছে রমরমিয়ে। হুকিং এর চোটে জেলা জুড়ে লো-ভোল্টেজও বাড়ছে। শুধু লো-ভোল্টেজই নয়, দফতরের পরিসংখ্যানই বলছে হুকিং করতে গিয়ে গড়ে প্রতি মাসে দু’তিন জন করে মারাও যাচ্ছেন। দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এটা সরকারি তথ্য। চুরি করতে গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। সব ঘটনায় আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়ওনি।”

বিদ্যুৎ চুরির ফলে রাজস্বে ঘাটতি এবং শাসক দলের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ সামনে আসতেই হুকিং বন্ধে তৎপর হয়েছে তৃণমূলও। ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচক-১ পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক পাল বলেন, “আমি সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠক করব। তাতে শুধু হুকিং বন্ধ নিয়েই আলোচনা হবে। এলাকার কেউ যদি হুকিং করলে দল ও পঞ্চায়েত দায় নেবে না— এই প্রচারও করব।” বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার চিরঞ্জিৎবাবুরও দাবি, “হুকিং ঠেকাতে আমরা গাঁ-গঞ্জেও এ বার কেবল তারের সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।”

Hooking Electricity Bill Loss
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy