Advertisement
০১ মে ২০২৪

বাইরে থেকেই পরীক্ষা, নালিশ মেডিক্যালে

গত ২৪ জুলাই পেটে ব্যথা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে বছর দেড়েকের অমিত চৌধুরী। হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শেই ওই শিশুর রক্ত, মূত্র-সহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়েছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০১:৩২
Share: Save:

নিখরচায় চিকিৎসা পরিষেবা মেলার কথা সরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন রোগীর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষাও হওয়ার কথা বিনা পয়সা। কিন্তু সেই নিয়ম ভাঙারই অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর মেডিক্যালে। হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুর পরিজনেরা লিখিত ভাবে অভিযোগ জানালেন, বাইরে থেকেই যাবতীয় পরীক্ষা করিয়ে আনতে হচ্ছে। তাতে খরচও হচ্ছে বিস্তর।

গত ২৪ জুলাই পেটে ব্যথা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে বছর দেড়েকের অমিত চৌধুরী। হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শেই ওই শিশুর রক্ত, মূত্র-সহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এ জন্য ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে ৮ হাজার টাকা। অমিতের জ্যেঠু সুনীল চৌধুরী বলছিলেন, “তিন তিনবার বাইরে থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব?” তাঁর দাবি, কেন বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হবে জানতে চাওয়ায়, চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, হাসপাতালের রিপোর্ট ঠিক নাও হতে পারে। বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোই ভাল।

শুক্রবার এ সব জানিয়ে হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন সুনীলবাবু। সুপার তখন ছিলেন না। দায়িত্বে ছিলেন হাসপাতালের সহকারী সুপার সুদীপ্ত মাইতি। তিনি বলেন, “যে সব পরীক্ষা বাইরে থেকে করানো হয়েছে তার কিছু এই হাসপাতালেই হওয়ার কথা। তা-ও কেন হাসপাতালে করানো হল না দেখতে হবে।” অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন সুপার তন্ময়বাবুও।

সুনীলবাবুর বাড়ি মেদিনীপুরের পালবাড়ি এলাকায়। স্থানীয় কাউন্সিলর সৌমেন খানকেও তিনি সব জানিয়েছেন। হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন সৌমেনবাবু। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালে সব কিছু নিখরচায় হবে। তা-ও সামান্য রক্ত পরীক্ষা কেন বাইরে থেকে করিয়ে আনতে হবে বুঝতে পারছি না।’’

মেদিনীপুরের অলিতেগলিতে গজিয়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোম, ক্লিনিক, প্যাথলজি। এ সবের সঙ্গে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের গোপন বোঝাপড়া রয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সূত্রেই চিকিৎসকেরা বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে আনতে জোর দেন। মুনাফার লক্ষ্যে চলে এই কারবার। স্বাস্থ্য দফতর সব জেনেশুনেও চুপ বলেই অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘কোথায়, কী দুষ্টচক্র রয়েছে, তারা কী কাজ করছে, তা বোঝা মুশকিল। তবে অভিযোগ এলে নিশ্চিতভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ক্লিনিকে নজরদারিও চালানো হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midnapore medical Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE