Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
তমলুকে বঙ্গধ্বনিতে দাদা অনুগামীরা
Inner conflict

ঐক্যের সঙ্গী শাসকের দ্বন্দ্ব-ধ্বনিও

তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভিত্তিক বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচি আয়োজনের জন্য দলীয় পদাধিকারীদের নিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল কমিটির সদস্যদের নিয়ে কর্মসূচিটি দেখাশোনা করছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২৯
Share: Save:

শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসকদলের ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচি। শুক্রবার কর্মসূচি শুরু দিনই জেলার কোথাও এক মঞ্চে তৃণমূলের ‘দুই শিবিরে’র নেতাদের দেখা গেল। তো কোথাওপ্রকাশ্যে এসেছে গোষ্ঠীকোন্দল।

জেলা সদর তমলুকে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন ঘিরে কিছুদিন আগে তৃণমূলের দুই শিবিরের প্রকাশ্য বিভাজন দেখা গিয়েছিল। একদিকে ছিল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসাবে পরিচিত শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বনাথ মহাপাত্র, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাসের শিবির। অন্য দিকে ছিলেন শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের তৃণমূল নেতা তথা তমলুকের পুর প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন ও দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়ের মতো নেতারা।

এ দিন অবশ্য শহরের মানিকতলা মোড় থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত ‘বঙ্গধ্বনি’ পদযাত্রা উপলক্ষে হাজির ছিলেন বিশ্বনাথ, সুকুমার দাস, গোপাল মাইতি-সহ রবীন্দ্রনাথ সেন, দীপেন্দ্রনারায়ণ, জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি পার্থসারথি মাইতি। পদযাত্রায় ছিলেন শহিদ মাতঙ্গিনী এবং তমলুক ব্লকের নেতারাও। এভাবে দুই শিবিরের এক সঙ্গে পদযাত্রায় পা মেলানো নিয়ে শহরের রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। যদিও বিশ্বনাথ বলছেন, ‘‘তৃণমূল একটাই। এতে শিবিরের কোনও বিষয় নেই। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ আমরা এই কর্মসূচি রূপায়ণ করেছি।’’ দীপেন্দ্রনারায়ণের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। দলের সব নেতা, কর্মী, সমর্থকই এতে থাকছেন।’’

মহিষাদলে আবার ‘বঙ্গধ্বনি’তে কোন্দলের ছবি ধরা পড়েছে। এদিন ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি মিছিল মহিষাদলের ছোলাবাড়ি থেকে কাপাসএড়া মোড় পর্যন্ত যায়। আবার ব্লকের সহ-সভাপতি তাপস মল্লিকের নেতৃত্বে আরকটি মিছিল সতীশ সামন্ত রেলস্টেশন থেকে মহিষাদল সিনেমা মোড়ে যায়। ওই মিছিলে তাপস ছাড়াও ছিলেন যুবনেতা যশরাজ ব্রহ্মচারী। দু’টি মিছিল প্রসঙ্গে মহিষাদলের ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা সবাই মিলে বসে ঠিক করে দুটো মিছিল করেছি।’’ যদিও ব্লক সহ সভাপতি তাপসের দাবি, তাপস মল্লিক বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা বলছেন। বিধায়কের নির্দেশে আমরা মিছিল করেছি। ব্লক সভাপতিকে সেই মিছিলে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি মিছিলে না এসে ক্ষমতা দেখানোর জন্য আলাদা করে মিছিল করেছেন।’’

হলদিয়ায় সুতাহাটা সুবর্ণজয়ন্তী ভবন থেকে ক্ষুদিরাম স্কোয়্যার পর্যন্ত মিছিল হয়েছে। মিছিল শেষে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে অবশ্য অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর আনন্দময় অধিকারী। যিনি সম্প্রতি দলের কিছু বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। দুর্গাচকের একটি সভায় আবার ছিলেন পুরপ্রধান শ্যামল কুমার আদক, হলদিয়া টাউন তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরসভার উপ পুরপ্রধান সুধাংশু শেখর মণ্ডল, যুব সভাপতি আসগর আলী, শহর সহ-সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল প্রমুখ। ওই সভায় শ্যামল বক্তৃতা করতে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে চিৎকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দর্শকেরা। অন্য নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ দিন পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভায় বঙ্গধ্বনি যাত্রা হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র, পাঁশকুড়া শহর তৃণমূলের সভাপতি সুমনা মহাপাত্র, ব্লক সভানেত্রী কবিতা ঘড়া প্রমুখ। কর্মসূচি উপলক্ষে একটি বাইক র‌্যালি হয়েছে। কোলাঘাটের দেউলিয়াতেও বঙ্গধ্বনি যাত্রা হয়েছে। বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচি হয়েছে এগরা ত্রিকোণ পার্ক থেকে দিঘা মোড় পর্যন্ত। পটাশপুরের বিধায়ক জোতির্ময় করের উপস্থিতিতে মঙ্গলামাড়ো বাজার থেকে অমর্ষি বাজার থেকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিলে হাঁটেন। পরে সিংদায় দলীয় কার্যালয়ে ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বিধানসভা ভিত্তিক বঙ্গধ্বনি যাত্রা কর্মসূচি আয়োজনের জন্য দলীয় পদাধিকারীদের নিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়েছে। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল কমিটির সদস্যদের নিয়ে কর্মসূচিটি দেখাশোনা করছেন। তমলুক বিধানসভার মধ্যে তমলুক পুরসভা, শহিদ মাতঙ্গিনী ও তমলুক ব্লক এলাকার তৃণমূল নেতাদের নিয়ে ১৫ জনের একটি কমিটি গড়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Inner conflict TMC Bangodhani Yatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE