E-Paper

দলে রদবদলে অখিল বনাম উত্তম শিবির

সংবিধান প্রণেতা বি আর অম্বেডকরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:০৬
অখিল গিরি।

অখিল গিরি। —ফাইল চিত্র।

সদ্য মিটেছে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন। রাজ্য নেতৃত্বের চূড়ান্ত প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক ‘শিবিরে’র এক অঞ্চল সভাপতিকে সরিয়ে দিলেন তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্ব। একই সঙ্গে দলের যুব সভাপতি, অঞ্চল ভিত্তিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে উত্তম বিরোধী হিসাবে পরিচিত বিধায়ক অখিল গিরি শিবিরের নেতাদের। ‘শুভেন্দু-গড়’ কাঁথিতে তৃণমূলের কোন্দল অব্যাহত।

সংবিধান প্রণেতা বি আর অম্বেডকরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ, সোমবার দেশপ্রাণ ব্লকে তৃণমূলের কর্মসূচি রয়েছে। স্থানীয় বাইজাপুর গৌরমোহন বিদ্যাপীঠের সামনে বড় জমায়েত করার কথা। তার আগে শনিবার ব্লক তৃণমূল প্রস্তুতি বৈঠক করে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বসন্তিয়া অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তুষার পাত্রকে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই অঞ্চলে তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন দ্বিজেন বেরা। তড়িঘড়ি তাঁকে কেন সরানো হল, তা নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। অপসারিত অঞ্চল সভাপতি উত্তম শিবিরের নেতা হিসাবে পরিচিত ব্লকে। তার সঙ্গে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তরুণ জানার সম্পর্ক ভাল নয় বলে দাবি। সেই কারণেই দ্বিজেনের পজে কোপ পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও ব্লক তৃণমূলের দাবি, দলের নির্দেশ অমান্য করে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক নির্বাচনে তৃণমূলের ঘোষিত প্যানেলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন দ্বিজেন। তাই তাঁর এই ‘শাস্তি’। দেশপ্রাণ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি রাজকুমার শীট বলেন, ‘‘বারবার বোঝানোর পরেও দ্বিজেন দলের কথা রাখেননি। তাছাড়া, উনি অঞ্চল সভাপতি হওয়ার পর থেকে এলাকায় সংগঠন দুর্বল হচ্ছিল। সংগঠন শক্তিশালী করতে ব্লক কমিটির পদাধিকারীদের বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’

অঞ্চল সভাপতি ছাড়া দেশপ্রাণ ব্লকের যুব তৃণমূলে এবং অঞ্চল স্তরে অন্য সভাপতি পদেও রদবদল ঘটেছে। আর ধোবাবেড়িয়া, বসন্তিয়া, আউরাই অঞ্চলে ব্লক কমিটির কয়েকজন সদস্যকে পর্যবেক্ষ ক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। যাঁরা অধিকাংশই অখিল শিবিরের নেতা হিসাবে পরিচিত। রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন পর্ব থেকে তৃণমূলের ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছেন অখিল অনুগামীরা। উত্তম যে এলাকার বাসিন্দা, সেই দেশপ্রাণ ব্লকে বিরোধী শিবিরের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়ায় ফের সংঘাত বাড়বে বলে অনুমান। আর উত্তম বলছেন, ‘‘সাংগঠনিক বিষয়ে জেলা সভাপতি বলবেন।’’

জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়া এভাবে আচমকা রদবদল করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশপ্রাণ ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি দেবাশিস ভূঁইয়া বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে কঠিন সময় দলকে সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দ্বিজেন। এখন তাঁকে যদি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।’’ তবে রাজকুমারের ব্যাখ্যা, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে থাকাকালীন তরুণ জানাকে বলে গিয়েছিলেন সংগঠনের ভালর জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। দলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Akhil Giri TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy