E-Paper

অতিরিক্ত বিপদসীমা ছুঁল কংসাবতীর জল, সতর্ক সেচ দফতর

জলস্ফীতির কারণে নদী বাঁধগুলিতে চাপ পড়ায় পাঁশকুড়া পুরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির একাধিক এলাকায় গর্ত তৈরি হয়েছে এ দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ০৮:৫৫
পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের সেচ দফতরের কংসাবতী নদীর গেজ স্টেশন।

পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের সেচ দফতরের কংসাবতী নদীর গেজ স্টেশন। নিজস্ব চিত্র ।

টানা বৃষ্টিতে বিপদসীমার কাছাকাছি আগেই উঠে এসেছিল কংসাবতী নদীর জল। এবার সেই জল অতিক্রম করল অতিরিক্ত বিপদসীমাও। আতঙ্কিত নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মাইকিং করে সতর্ক করল ব্লক প্রশাসন। তৎপরতা বাড়াল সেচ দফতরও। বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রেখে অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যাও বাড়িয়েছে সেচ দফতর। তাদের দাবি, নদীর জল বহন ক্ষমতা কমার কারণেই এই পরিস্থিতি।

প্রশাসন সূত্রে খবর, গত বছর বন্যায় কংসাবতীতে জল বেড়েছিল ১১.৫ মিটার। রবিবার পাঁশকুড়ার সেচ দফতরের জলস্তরের মাপ অনুযায়ী, জল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.১ মিটার। যদিও বিকেলের পর সেই জলস্তর কয়েক ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।

জলস্ফীতির কারণে নদী বাঁধগুলিতে চাপ পড়ায় পাঁশকুড়া পুরসভা ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির একাধিক এলাকায় গর্ত তৈরি হয়েছে এ দিন। স্থানীয়দের মারফত সেই খবর পেয়ে, প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে গর্তগুলি রিং বাঁধ দিয়ে মেরামতির চেষ্টা চালাচ্ছে। জল গর্ত দিয়ে ঢুকতে শুরু করেছিল মানুর এলাকার নোয়াপাড়া, চৈতন্যপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পরমানন্দচক, চৈতন্যপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজয়রামচকে। পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির তরফে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিকেলের পর শুরু হয়েছে মাইকিং। বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সুরক্ষিত স্থানে এবং স্থানীয় স্কুলে স্থানান্তর করারও নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। জল ঢুকেছিল পাঁশকুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক জায়গায়। সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে তাঁদেরও।

উল্লেখ্য, গত বছর বন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক ও শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লক। চলতি বছর নদীর অতিরিক্ত বিপদসীমা অতিক্রম করায় ফের বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়েরা। রবিবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে পাঁশকুড়াতে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আজ সোমবার থেকে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ওই সমস্ত এলাকায় ভারী বৃষ্টি হলে কংসাবতীর জলস্তর আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

পাঁশকুড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখ ইবরু আলম বলেন, ‘‘নদীতে যে ভাবে জলস্তর বাড়ছে, তাতে গত বছরের মতো প্লাবনের আশঙ্কা করছি। গত বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এখনও সারিয়ে উঠতে পারিনি। নতুন করে প্লাবিত হলে আমরা সংকটে পড়ব।’’

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘গত বর্ষায় কংসাবতী নদী বাঁধ সংলগ্ন জঁদরা, মানুর, গড়পুরুষোত্তমপুর এই তিন জায়গায় ভাঙনের ফলে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চার মাস ধরে জলবন্দি ছিলেন।’’ তাঁর অভিযোগ, বন্যার এক বছর অতিক্রান্ত হলেও কাঁসাই নদীর জল বহন ক্ষমতা বাড়ানোর কোনও উদ্যোগই নেয়নি জেলা প্রশাসন এবং সেচ দফতর। অভিযোগ, কংসাবতী ব্যারেজও তৈরির পর থেকে সংস্কার করা হয়নি কেন্দ্র ও রাজ্য সেচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

পাঁশকুড়া ব্লকের বিডিও অমিত কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বাঁধের যে সমস্ত জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেগুলিকে দ্রুত বেঁধে ফেলা সম্ভব হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে নদী বাঁধে সর্বদা নজরদারি চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panskura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy