Advertisement
০২ মে ২০২৪
digha

ক্ষয়িষ্ণু সমুদ্র বাঁধেও কটাক্ষ শুভেন্দুকে

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দিঘা মোহনার অদূরে থাকা মৈত্রাপুরে বঙ্গোপসাগরের তীরে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় এই বাঁধ তৈরি করে সেচ দফতর।

সমুদ্র বাঁধ পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

সমুদ্র বাঁধ পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১১
Share: Save:

ক্রমাগত ঢেউয়ের ধাক্কায় ক্ষয়িষ্ণু সমুদ্র বাঁধ। এমন পরিস্থিতিতে এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বাঁধের গুণগত মানের প্রসঙ্গ টেনে প্রাক্তনকে বিঁধলেন বর্তমান!

বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। এমন পরিস্থিতিতে প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করেই বর্তমান সেচমন্ত্রীর তির্যক মন্তব্যের পিছনে ভোট-অঙ্ক খুঁজছেন জেলার রাজনৈতিক মহল। বুধবার বিকেলে দিঘা মোহনার কাছে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। পরিবর্শনের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘‘নাম করতে চাই না আগে যিনি সেচ মন্ত্রী ছিলেন। তবে এ ক্ষেত্রে কোনও রকম আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগানো হয়নি। সমস্যা সমাধানেরচেষ্টা চালাব।’’

উল্লেখ্য, রবিবার দিঘা মোহনার অদূরে মৈত্রাপুর খটি এলাকা পরিদর্শন করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কুণাল ঘোষ। এলাকায় সমুদ্র ভাঙনের কথা তৃণমূল নেতার কাছে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন এলাকার মৎস্যজীবীরা। এলাকা ঘুরে দেখে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন কুণাল। এর পরেই এ দিন সেখানে যান সেচমন্ত্রী। পাশাপাশি ভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে সেচ বাংলায় জরুরি বৈঠকও করেন। সেখানে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দিঘা মোহনার অদূরে থাকা মৈত্রাপুরে বঙ্গোপসাগরের তীরে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় এই বাঁধ তৈরি করে সেচ দফতর। খরচ হয় প্রায় চার কোটি টাকা। কাঠের রেলিং, পাথর এবং বালি, মাটির বস্তা দিয়ে কংক্রিটের ঢালাই করে বাঁধ দেওয়া হয়। বাঁধের উপরে ‘জিও ব্যাগ’ও তৈরি হয়। বাঁধ থাকলে সমুদ্রের ঢেউ পাড়ে সরাসরি ধাক্কা মারতে পারবে না— এমনই দাবি করা হয়েছিল সে সময়। তবে, গত কয়েক বছরে মৈত্রাপুর এলাকা সমুদ্রের ঢেউয়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরনো বাঁধের গায়ে গর্তও তৈরি হয়ে গিয়েছে। বাঁধের কিছুটা অংশ সমুদ্র গর্ভেও চলে গিয়েছে। ২০২০ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রশাসনিক সফরে এসে ওই গ্রামে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার মৎস্যজীবী পরিবারগুলির আর্থিক দুর্দশা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছিলেন তিনি। ওই গ্রামে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ ধীর গতিতে চলছে বলে স্থানীয়রা সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেঅভিযোগ করেছিলেন।

এ বার এলাকায় নতুন করে আধুনিক প্রযুক্তিতে বাঁধ তৈরি করার কথা জানালেন সেচমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কতটা এলাকায় বাঁধ তৈরি করতে হবে, তা সমীক্ষা করা দরকার। তার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একটি স্কিম অর্থ দফতরে জমা দিতে হবে। এরপর অনুমোদন পেলেই নতুন করে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’’ সেচমন্ত্রী সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখায় আশায় বুক বাঁধছেন এলাকার মৎস্যজীবীরা। তবে হতাশও অনেকে। রামনগরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা স্বদেশ নায়ক বলেন, ‘‘শঙ্করপুর মৎস্য বন্দর ভৌগোলিক ভাবে অবলুপ্ত হতে চলেছে। দীর্ঘ এলাকায় যে বাঁধ ছিল, তা ইয়াসে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

digha River Erosion Partha Bhowmik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE