Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নীল তিমি রুখতে গুপী-বাঘার গান

এ বারে সেই ‘গুগাবাবা’-কেই ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো হিংসাত্মক ভিডিয়ো গেমের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমি। তাদের প্রযোজনায় মানুষে-পুতুলে জমজমাট হয়ে উঠছে গুপী গাইন বাঘা বাইনের কাহিনী।

যুগল: তৈরি হয়ে গিয়েছে গায়েন-বায়েন। নিজস্ব চিত্র

যুগল: তৈরি হয়ে গিয়েছে গায়েন-বায়েন। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:১১
Share: Save:

গান যে কত বড় অস্ত্র তা দেখিয়েছিল ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’। গানের জাদু আর ঢোলের মন্ত্রে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল হাল্লা রাজার বাহিনী। এ বারে সেই ‘গুগাবাবা’-কেই ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো হিংসাত্মক ভিডিয়ো গেমের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমি। তাদের প্রযোজনায় মানুষে-পুতুলে জমজমাট হয়ে উঠছে গুপী গাইন বাঘা বাইনের কাহিনী।

‘গানের গুপি ঢোলের বাঘা’-র শোয়ের জন্য গত ছ’মাস ধরে প্রচুর ‘পাপেট’ ও ‘মাপেট’ তৈরি করছেন তাদের শিল্পীরা। ‘পাপেট’ হল পুতুল আর ‘মাপেট’ হল পুতুলের খোলস। সেই খোলস পরে পুতুলের সঙ্গে অভিনয় করবেন অভিনেতারা। কয়েক দিন ধরে টানা মহড়া চলছে ঘোড়াধরার রামকিঙ্কর মঞ্চে। শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর প্রথম শো হবে ওই মঞ্চেই। শনি ও রবিবার সকাল ১১টা ও সন্ধ্যা ৭টায় দু’টি করে শো হবে। শুধুমাত্র ছোটদের জন্য আয়োজিত চারটি শোয়েই প্রবেশ অবাধ।

আর্ট অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্র জানান, এখনকার শিশুদের কল্পনাশক্তির বিকাশের ক্ষেত্রে নানা বাধা। সে কারণেই ভিডিয়ো গেমের আড়ালেও ঢুকে পড়ে হিংসা। ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো মোবাইল গেম ইতিমধ্যেই কেড়ে নিয়েছে একাধিক প্রাণ। সেই হিংসার বিরুদ্ধে শিল্পকেই অস্ত্র করেছেন সঞ্জীববাবুরা। তাঁর কথায়, “নবীনতম প্রজন্মদের জন্যই আমাদের এই যুদ্ধবিরোধী প্রযোজনা। যুদ্ধের বিরুদ্ধে শিল্পমাধ্যম দিয়েই শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা পৌঁছনো হবে।”

উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রচিত মূল কাহিনীর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় সত্যজিৎ রায় নির্মিত চলচ্চিত্রটি। তবে ৬৬ মিনিটের ‘গানের গুপি ঢোলের বাঘা’ অবশ্য মূল কাহিনীটি অনুসরণ করেই তৈরি হয়েছে। নাটকের প্রতিটি দৃশ্যের আবহে থাকছে চমক। প্রায় ১০০ ‘পাপেট’, ‘মাপেট’ ও দৃশ্যসজ্জার সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। ভূতের নাচ, ভূতের রাজা, বর পেয়ে গুপী-বাঘার গান, আকাশ থেকে মণ্ডা-মিঠাই পড়ার দৃশ্যগুলিতে ডিজিট্যাল এবং ইউভি লাইট ব্যবহার করা হয়েছে। নাট্যরূপ দিয়েছেন গণেশ মুখোপাধ্যায়। নির্দেশনা, আলো এবং পাপেট-মাপেট সঞ্চালনায় রয়েছেন আর্ট অ্যাকাডেমির সবাই। সহযোগিতায় কবি শুভ দাশগুপ্ত। সুর ও আবহসঙ্গীতে রয়েছেন কল্যাণ সেনবরাট। বিভিন্ন চরিত্রের ভাষ্য ও গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ক্যালকাটা কয়ারের শিল্পীরা। গুপীর গানগুলি গেয়েছেন শ্রীকান্ত আচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE