E-Paper

ভিন্ রাজ্যে আলু যাচ্ছে কম 

চাষিরা জানাচ্ছেন, এমনিতে আলু চাষে খরচ বাড়ছে। তার সঙ্গে আলুর মরসুমে নানা ঝঞ্ঝার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে এখন। এতেও প্রভাব পড়ে চাষে।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ০৮:২৮
জমি থেকে ট্রাক্টরে করে আলুর বস্তা হিমঘরে নিয়ে যাওয়ার সময় ।

জমি থেকে ট্রাক্টরে করে আলুর বস্তা হিমঘরে নিয়ে যাওয়ার সময় । চন্দ্রকোনার হেমতপুরে। নিজস্ব চিত্র

গোড়াতে দাম ছিল তলানিতে। বাড়তি ফলনেও আলু তুলতে আগ্রহ হারিয়েছিলেন অনেক চাষি। তাই হিমঘর খোলার অপেক্ষায় ছিলেন চাষি থেকে ব্যবসায়ী সকলে। হিমঘর খুলতে দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। ভিন্ রাজ্যেও ছুটছে বস্তা ভর্তি আলু। তাতেও অবশ্য অস্বস্তি কাটছে না চাষিদের। পাশাপাশি গত বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতায় আলুতে বিনিয়োগেও ঝুঁকি নিচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

চলতি মরসুমে আলুর ফলন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি। কাঠা প্রতি পাঁচ প্যাকেট করে আলু পাচ্ছেন চাষিরা। তবে সব জমিতেই বাড়তি ফলন হচ্ছে এমনটা নয়। ফলে বেশি ফলনেও প্রথমের দিকে একেবারেই স্বস্তিতে ছিলেন না আলু চাষিরা। তখন দাম অনেকটাই ছিল নিম্নমুখী। কুইন্টাল প্রতি তখন ৫০০ টাকা দরেও আলু বিক্রি হয়েছিল। তার সঙ্গে পুরনো আলুও ভাল মজুত ছিল। সবমিলিয়ে মরসুমে শুরুটা ভাল ছিল না। তবে ১ মার্চ থেকে হিমঘর খুলেছে। পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হলেও ভরা মরসুমেও চাঙ্গা হচ্ছে না আলুর বাজার।

চাষিরা জানাচ্ছেন, এমনিতে আলু চাষে খরচ বাড়ছে। তার সঙ্গে আলুর মরসুমে নানা ঝঞ্ঝার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে এখন। এতেও প্রভাব পড়ে চাষে। দিনদিন কীটনাশক, সার, সেচ ও মজুরির দামও বাড়ছে। সবমিলিয়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ পড়ে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে আলু বিক্রি করে বিঘা প্রতি খরচ বাঁচিয়ে দু’পয়সা লাভ হচ্ছে ঠিকই। তবে চারমাসে যে ভাবে পরিশ্রম, হয়রানি সহ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে,তাতে এই লাভে কী হবে? চন্দ্রকোনার এক চাষি হেমন্ত সরকার বলছিলেন,‘‘কমপক্ষে হাজার টাকা কুইন্টাল হলে চাষিদের কিছু টাকা ঘরে ঢুকবে। এখন তো সব খরচ তুলে দু’পাঁচ হাহার টাকা আয় হচ্ছে। চারমাস খেটে কী লাভ হল?” সূত্রের খবর, জেলায় এ বার ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এখন পযর্ন্ত মাঠ থেকে আলু উঠেছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। অধিকাংশ আলুই এখন জমিতেই পড়ে রয়েছে।

ভাল ফলনেও আলুর বাজার ওঠানামা করছে কেন?

আলু চাষি এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা জানাচ্ছেন, বাড়তি ফলন একটা কারণ। ফলন ভাল হওয়ায় চাহিদাও কমছে। তা ছাড়া গত বছর ভিন্ রাজ্যে আলু রফতানি নিয়ে কড়া ছিল রাজ্য সরকার। নানা বিধিনিষেধের কারণে শেষের দিকে দামও কমতে শুরু করেছিল। এ বারও আলু বাইরের রাজ্যে যাচ্ছে। তবে আগের চেহারায় নয়।

পশ্চিম মেদিনীপুর আলু ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে বরুণ পণ্ডিতের দাবি, ‘‘ব্যবসায়ীরা আলু কিনে কী করবেন? পড়শি রাজ্য গুলিতেও আলুর চাহিদা খুব একটা নেই। বাইরের রাজ্যে আলু যাচ্ছে না যে তা নয়, কিন্তু ফলন বেশি হওয়ায় চাহিদা নেই। তাছাড়া ব্যবসায়ীরাও ঝুঁকি নিচ্ছেন না। ফলে যেটুকু প্রয়োজন তার বেশি আলু কিনতেও ভয় পাচ্ছে অনেক ব্যবসায়ী।’’ (শেষ)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

ghatal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy