শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল জামাইয়ের। বুধবার এই সাজা দেন মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শান্তনু মুখোপাধ্যায়। ১৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়েছে। একই সঙ্গে দোষীর স্ত্রীকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করার সুপারিশ করেছেন বিচারক। রাজ্য সরকারের কাছেই ওই সুপারিশ করা হয়েছে।
ঘটনাটি ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারির। গড়বেতা থানার ওড়গঞ্জা গ্রামের। এই গ্রামের মেয়ে পুতুলকে বিয়ে করেন বাবলু সরেন। বাবলুর বাড়ি গোয়ালতোড় থানার পিংবনিতে। ওই সময় পুতুল বাপের বাড়িতে ছিলেন। সঙ্গে বাবলুও ছিলেন। ঘটনার দিন পুতুলকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে চান বাবলু। আপত্তি করেন শাশুড়ি মালতী সরেন। বচসা বাধে। বচসা চলাকালীন রান্নাঘর থেকে বঁটি বার করে শাশুড়িকে তাড়া করেন জামাই। পরে ওই বঁটি দিয়ে কুপিয়ে মালতীদেবীকে হত্যা করেন।
ঘটনার পর স্থানীয় কয়েকজন বাবলুকে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ অভিযুক্ত জামাইকে গ্রেফতার করে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়। মামলাটি চলছিল মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে। এই মামলায় ১৪ জন সাক্ষী দেন। সাক্ষ্যগ্রহণের পর মঙ্গলবারই বাবলুকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
বুধবার শুরুতে বাবলুর বক্তব্য জানতে চায় আদালত। বাবলু জানান, তাঁর পরিবার রয়েছে। সন্তান রয়েছে। পরে দু’পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনে আদালত। এরপরই সাজা শোনান বিচারক। সরকারপক্ষের আইনজীবী শক্তিপদ দাস অধিকারী বলেন, “মৃত মালতীর পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরাই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রধান সাক্ষী ছিলেন বাবলুর স্ত্রী পুতুল। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় পুতুল তাঁর স্বামীর সামনেই সেই দিনের ঘটনার কথা বলেছেন। পুতুলের সাক্ষ্যই মামলায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে।”
শক্তিপদবাবুর বক্তব্য, “বাবলু গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে সংশোধনাগারে থাকায় সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করতেও পারেনি।” তিনি বলেন, “আদালত পুতুলকে দু’লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করার সুপারিশ করেছে। রাজ্য সরকারের কাছেই ওই সুপারিশ করেছে। এতে আমিও খুশি। এই আর্থিক সাহায্য পেলে পুতুলের সংসার চালাতে সুবিধে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy