Advertisement
E-Paper

পাছে গোল বাধে! আগেই সতর্ক প্রশাসন

গত কয়েকদিনে ব্লকে নতুন করে কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তা হলে? মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “পুলিশের থেকে একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই আমরা বোর্ড গঠন স্থগিত করলাম।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০১

আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে স্থগিত ছিল পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে নতুন করে বোর্ড গঠনের দিনক্ষণ ঠিক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসন। বোর্ড গঠনের দু’দিন আগে ফের স্থগিত হল কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন। এ বারেও প্রশাসনের দাবি, ২২ জানুয়ারি বোর্ড গঠন হলে এলাকায় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে।

গত কয়েকদিনে ব্লকে নতুন করে কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তা হলে? মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “পুলিশের থেকে একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই আমরা বোর্ড গঠন স্থগিত করলাম।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলছেন, “আমরা সূত্র মারফত খবর পেয়েছি, ওই দিন বিপুল লোক জমায়েত হতে পারে। তাই আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে আমরা এই রিপোর্ট দিয়েছি।”

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আশঙ্কার জেরে বোর্ড গঠনে এমন স্থগিতাদেশ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিজেপি কেশিয়াড়ি দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি সনাতন দোলইয়ের কটাক্ষ, “প্রশাসনের চোখে কেশিয়াড়িতে কোথায় অশান্তি ধরা পড়ল জানা নেই। আমাদের কেউ আক্রান্ত হলে পুলিশকে পাই না। আর এখন গোলমালের আশঙ্কাতেই পুলিশ এত সক্রিয়!” আবার বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাস বলেন, “স্থানীয় নেতারা উপরমহলকে বুঝিয়েছিলেন তৃণমূলের বোর্ড হবে। তাই তৃণমূলের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে প্রশাসন বোর্ড গঠনের দিনক্ষণ জানিয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, প্রশাসনের এমন ভূমিকায় ওঁদের লোকেরাই ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের দলে আসতে চাইছে। তখন প্রশাসন বোর্ড গঠন স্থগিত করেছে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। আসলে বিজেপি ওখানে বাইরে থেকে গুন্ডাবাহিনী এনে অশান্তি করছে। তাই প্রশাসন ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করি।”

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে কেশিয়াড়িতে দাগ কেটেছে বিজেপি। ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে এখন ৫টি বিজেপির দখলে রয়েছে। এ ছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজেপি। গত ৪সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেও পরে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে তা স্থগিত করে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক জনসভায় কেশিয়াড়ির দায়িত্ব দেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। তার পরে বারবার শুভেন্দু কেশিয়াড়িতে এসেছেন। গত ১৩ জানুয়ারি কেশিয়াড়িতে জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই দিন সন্ধ্যায় কেশিয়াড়ির বাঘাস্তিতে তৃণমূলের কার্যালয়ের বাইরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ফেস্টুন পোড়ানোর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পরে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গোলমালের পরদিন, গত ১৪ জানুয়ারি মহকুমা প্রশাসন বিজ্ঞপ্তি জারি করে আগামী ২২জানুয়ারি বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত জানায়। অবশ্য তার দু’দিন আগেই ১৯জানুয়ারি তড়িঘড়ি বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার বিজ্ঞপ্তি জারি করে মহকুমা প্রশাসন। পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পর জেলায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিজেপির জয়ী সদস্যেরা শাসক দলে যোগ দেওয়ায় পাল্টে গিয়েছে হিসেবনিকেষ। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে গেরুয়ার পরিবর্তে বোর্ডের রং হয়েছে সবুজ। জেলার এক বিজেপি নেতা বলছেন, ‘‘কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি আমাদের কাছেও মর্যাদার লড়াই। দেখা যাক। শেষ পর্যন্ত কী হয়।’’

Panchayat BJP TMC Precaution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy