E-Paper

পুরনো মাসির বাড়িতে এল না স্থানীয় রথ

এ বছর সেই মন্দিরের পাশেই সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে নতুন মন্দিরের জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ০৯:৪১
সরকারি রথের জেরে ভাটা পড়েছে পুরনো জগন্নাথ মন্দিরের রথের আয়োজনে ।

সরকারি রথের জেরে ভাটা পড়েছে পুরনো জগন্নাথ মন্দিরের রথের আয়োজনে । নিজস্ব চিত্র।

মাসির বাড়ি ছিল এটিও। দিঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দির হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে হয়েছে নতুন মাসির বাড়িও। সমারোহ নতুনকে ঘিরেই। স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা ‘উপেক্ষিত’ হয়েছে দিঘার পুরনো জগন্নাথ মন্দির। ছেদ পড়েছে পরম্পরায়। এ বছর মাসির বাড়িতে আসেনি স্থানীয় রথও।

ওল্ড দিঘায় ১৯৮৫ সালে প্রথমে মৎস্যজীবীদের আরাধ্য গঙ্গা ও মহাকাল মূর্তির পুজো হত। তালপাতার ছাউনি দেওয়া মন্দির ছিল। ১৯৯৮ সালে কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা সমীর মণ্ডল মন্দির গড়ে দেন। পরে তাঁরা সমুদ্রে ভেসে আসা জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মূর্তি স্থাপন করেছিলেন মন্দিরে। সেই মন্দিরেই জায়গা হয় গঙ্গা ও মহাকালের। গ্রামবাসীদের নিয়ে যৌথ কমিটি গড়ে শুরু হয় জগন্নাথের আরাধনা।

এ বছর সেই মন্দিরের পাশেই সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয়েছে নতুন মন্দিরের জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি। শুক্রবার নতুন মন্দির থেকে ত্রিমূর্তি এসে উঠেছেন সেখানেই। সন্ধ্যা থেকে ভিড় জমেছে নতুন মাসির বাড়িতে। মন্দির ঘিরে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

নতুন মাসির বাড়ি ঘিরে সমারোহের পাশে নিষ্প্রভই ছিল পুরনো মন্দিরের আয়োজন। এ দিন সকালে নমো নমো করে মন্দির কমিটির উদ্যোগে ঘটোত্তলনের মাধ্যমে পুরনো মন্দিরে পুজো মিটেছে। সেখানে এসেছিলেন মন্দির প্রতিষ্ঠাতা সমীর মণ্ডলের পরিবার। সমীরের স্ত্রী ঊর্মিলা বলেন, ‘‘স্থানীয় একটা মন্দিরের জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার মাসির বাড়ি ছিল এটা। ছোট ছোট মূর্তি আসত। আগে আমরাই জগন্নাথ এবং তার ভাই-বোনের জন্য সাধ্যমতো নতুন জামা কাপড় নিয়ে আসতাম। সকলে মিলে বহু মানুষকে খাওয়াতাম।"

পুরনো মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পূর্ণচন্দ্র নন্দকে এবার নতুন মাসির বাড়ির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বিকেলের আগেই পুরনো মন্দিরের পুজো সেরে ফেলেন। পূর্ণচন্দ্র বলছেন, ‘‘রথ আর আসেনি ঠিকই। এবার নতুন মন্দির থেকে সরকারি উদ্যোগে মাসির বাড়িতে প্রভুর নিম কাঠের মূর্তি এসেছে। তাদের যত্নের জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। ভেবেছি দু’টো মন্দিরের সকল দেবতাকে সেই অর্থ দিয়েই সেবা করার চেষ্টা করব।’’

যেখানে ওল্ড দিঘার একটি মন্দির থেকে কাঠের রথ এসে থাকত, সেখানেই এবার উল্টোরথ পর্যন্ত থাকবে সরকারি উদ্যোগে নির্মিত তিনটি রথ। জগন্নাথের পুরনো মন্দিরের পরম্পরায় ছেদ পড়ায় মন খারাপ পদিমা গ্রামের বাসিন্দাদের। বিষয়টি মানছেন মন্দির পরিচালন কমিটির কর্মকর্তারা। মন্দির পরিচালনা কমিটির সম্পাদক বসন্তকুমার জানা বলেন, "পুরনো মন্দিরে গ্রামের লোকেরা সাধ্যমতো সহযোগিতা করে রথের দিন পুজো করে। এবার পাশের সরকারি উদ্যোগে মাসির বাড়িতে অনেক কিছুই হচ্ছে। তার জেরে পুরনো মন্দির নিয়ে মানুষের আগ্রহ কিছুটা হলেও কমবে এটা একেবারেই অস্বীকার করা যায় না। তা হলে আমরা রীতি মেনে জগন্নাথ দেবের পুজো করেছি। আমাদের মন্দিরের স্থায়ী কোনও রথ ছিল না। সরকারি উদ্যোগে মাসির বাড়ি হওয়ায় সেখানে বড় বড় রথ থাকছে। তাই জায়গার কথা ভেবে এলাকার যে মন্দির থেকে প্রতি বছর রথ আসত তাদের আপাতত না বলা হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

digha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy