আনিসুরের বাড়িতে ভারতী ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
দিন পনেরো আগে এসেছিলেন পাঁশকুড়ায় প্রচারে। সে সময় তাঁকে ঘিরে এলাকায় তৈরি হয়েছিল উত্তেজনা। ঝামেলায় জড়িয়েছিল তৃণমূল-বিজেপি।
শনিবার তিনি ফের এলেন পাঁশকুড়ায়। প্রচার চালালেন। এ বার কোনও উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে তাঁর একটি পদক্ষেপ ঘিরে বিজেপি’র স্থানীয় কর্মীদের একাংশের মধ্যে তৈরি হল ক্ষোভ।
ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ এ দিন পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে পাঁশকুড়ায় এসেছিলেন ভোটের প্রচারে। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মেচগ্রামে আসেন ভারতী। পৌনে ১১টা নাগাদ শুরু হয় বিজেপি’র বাইক র্যালি। আর গাড়ির জানালা দিয়ে জনতার উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে প্রচার চালাতে থাকেন প্রার্থী। প্রচারের মাঝে ভারতীর গাড়ি এসে থামে পাঁশকুড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের বাড়ির সামনে। গাড়ি থেকে নেমে সটান আনিসুরের বাড়িতে ঢুকে যান ভারতী। সেখানে তিনি প্রায় আধ ঘণ্টা ছিলেন। উল্লেখ্য, একদা তৃণমূলের দাপুটে নেতা আনিসুর দলবদল করে বিজেপি যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি জেলে রয়েছেন।
ভারতীর আনিসুরের বাড়ি যাওয়া নিয়ে এলাকায় নিচুতলায় বিজেপি কর্মীদের একাংশের মধ্যে দেখা গিয়েছে ক্ষোভ। তাঁদের অভিযোগ, যে আনিসুর তৃণমূলে থাকার সময় এলাকায় ‘অত্যাচার’ চালিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে কেন যাচ্ছেন দলীয় প্রার্থী! পাঁশকুড়ার ফতেচক গ্রামের বিজেপি কর্মি বিভাস দলুই বলেন, ‘‘দুবছর আগে পাঁশকুড়ায় মিছিল করতে এসে তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের বাহিনীর হাতে আমরা বেধড়ক মারধর খেয়েছিলাম। আজ আনিসুর বিজেপিতে এসেছেন। তাই বলে প্রচার ফেলে এতো সময় ওঁর বাড়িতে প্রার্থীর যাওয়া ঠিক হয়নি।’’
উল্লেখ্য, আনিসুরের বিজেপি যোগ দিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের মধ্যে যথেষ্ট ‘ক্ষোভ’ ছিল। পাঁশকুড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড অফিসে তালা দেওয়া, বোমাবাজির মত ঘটনায় আনিসুরের দিকে আঙুল তুলেছিলেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সহ-আহ্বায়ক সিন্টু সেনাপতি। এ দিন যখন প্রার্থী আনিসুরের বাড়িতে ছিলেন, তখন প্রায় ১৫ মিনিট দলীয় কর্মীর গাড়িতেই কার্যত নিজেকে ‘বন্দি’ রাখলেন সিন্টু। তবে এ ব্যাপারে সিন্টু বলেন, ‘‘আমি দলের সৈনিক। আমাকে ভারতীদির প্রচারে অংশ নিতে বলা হয়েছিল। কর্মী-সমর্থকেরা উপস্থিত হয়ে প্রচার সফল করেছেন। এর বেশি আমার বলার কিছু নেই।’’
আনিসুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি হেঁটে জন সংযোগ করেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে মুড়িপুকুরের হাট হয়ে চলে যান রাধাবল্লভচক এলাকায় ভোট প্রচারে। আনিসুরের বাড়িতে কেন গিয়েছিলেন, সে বিষয়ে ভারতী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ওঁর মা-কে সান্ত্বানা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলাম। কেবল বিজেপি করার জন্য আনিসুরকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এ নিয়ে অবশ্য ভারতীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কুরবান শা বলেন, ‘‘ভারতী ঘোষ পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি থাকাকালীন আমাদের সরকারের কাজে মুগ্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ সম্বোধন করেছিলেন। এখন উনি বিজেপির প্রার্থী। আর আনিসুরকে তৃণমূল বহিষ্কার করেছে। এই দু’জনে এখন এককাট্টা হয়ে বিজেপিতেও জলঘোলা করছেন। উনি আনিসুরের বাড়িতেও যাচ্ছেন। তবে মানুষ এঁদের ষড়যন্ত্রের জবাব ইভিএমে দিয়ে দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy