বছর তিনেক আগে রাজ্য বা দেশের বাইরে থাকা সোনা কারিগরেরা কবে দেশে ফিরবেন তার অপেক্ষায় থাকত গোটা গ্রাম। তাঁরা ফিরলে গ্রামে উৎসবের পরিবেশ তৈরি হতো। মুখে হাসি ফুটত ব্যবসায়ীদের। তাঁদের কেউ জমি-বাড়ি কিনতেন, কেউ কিনতেন গাড়ি। কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সময়ে কেউ কেউ আবার সেই গাড়ি বিক্রিও করে দিতেন। এসবের ‘মিডলম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন অনেক বেকার যুবক। কিন্তু নোটবন্দির পরে সেই সব এখন শুধুই অতীত।
পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ও ঘাটাল সোনার কারবারের অন্যতম কেন্দ্র। এখানকার কয়েক হাজার মানুষ স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কেউ এলাকাতেই সোনার কারবার করেন। কেউ মুম্বই, সুরাত, দিল্লিতে সোনার কারিগর হিসেবে কাজ করেন। ২০১৬-র নভেম্বরে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে ভিন্ রাজ্য থেকে বহু সোনা ব্যবসায়ী ও কারিগর ঘাটাল ও দাসপুরে গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, ফিরে আসার সেই সংখ্যা লক্ষাধিক। তারপর ধীরে ধীরে ওই এলাকায় সোনার ব্যবসার সুদিন চলে যায়। সে আর ফিরে আসেনি।
নোটবন্দির আগে ঘাটাল-দাসপুরের মতো রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, বন্যা হওয়া জনপদে রাস্তার ধারে কাঠা প্রতি জমির দাম ছিল ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা। কোথাও সেই দাম ৪০ লক্ষ টাকা ছুঁয়ে যেত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোনার কারবারিরা একই জমি বার বার কিনে ও বেচে জমির দাম বাড়িয়ে দিতেন। নোটবন্দির পরে জমি কেনাবাচা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেও দাম ওঠেনি। নোটবন্দির পরে কাজ হারানো যুবকদের পাশে দাঁড়াতে সমর্থন প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার।