Advertisement
E-Paper

শরীরী বাধা সত্ত্বেও ভোটের কাজে  

জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুরেই এ বার প্রতিবন্ধী বুথ হচ্ছে। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট বুথের সমস্ত দায়িত্ব সামলাবেন প্রতিবন্ধীরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ১০:২৪
শারীিরক প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণে। নিজস্ব চিত্র

শারীিরক প্রতিবন্ধীদের প্রশিক্ষণে। নিজস্ব চিত্র

ওঁরা সকলেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাতে কী! ভোটের কাজে উৎসাহে খামতি নেই এক ফোঁটা। ওঁরা মানে শুভদীপ দাস, দীপক বেতালরা। রবিবার সকালে চলে এসেছিলেন ভোটের কাজের প্রশিক্ষণে। শুভদীপ বলছিলেন, ‘‘ভোটের কাজ করতে আমার ভাল লাগে।’’ একই মত দীপকের। প্রশিক্ষণপর্ব সরেজমিনে দেখতে এসেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী। প্রতিবন্ধী ভোটকর্মীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনাদের কোনও রকম সমস্যা হলে আমাদের জানাবেন। আপনাদের সমস্ত রকম সুযোগ- সুবিধে আমরা দেব।’’ জেলাশাসকের সংযোজন, ‘‘আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা এগিয়ে এসেছেন বলেই আমরা এটা করতে পেরেছি।’’

জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুরেই এ বার প্রতিবন্ধী বুথ হচ্ছে। অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট বুথের সমস্ত দায়িত্ব সামলাবেন প্রতিবন্ধীরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর এবং খড়্গপুরে ৭টি প্রতিবন্ধী বুথ হচ্ছে। এই ৭টি বুথের সমস্ত ভোটকর্মীই প্রতিবন্ধী। কেন এমন উদ্যোগ জেলার? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ইচ্ছে আর মনের জোর থাকলে প্রতিবন্ধীরা যে সব কাজই পারেন, আমরা তারই একটা উদাহরণ রাখতে চাইছি।’’ জেলাশাসক পি মোহনগাঁধীও বলছিলেন, ‘‘জেলার ৭টি বুথের দায়িত্ব প্রতিবন্ধী ভোটকর্মীরা সামলাবেন। এটা পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রথম।’’ এক-একটি বুথে ৪ জন করে ভোটকর্মী প্রয়োজন। সেই হিসেবে ৭টি বুথে ২৮ জন ভোটকর্মী প্রয়োজন। সঙ্গে অতিরিক্ত ভোটকর্মীও রাখতে হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার মোট ৪২ জন প্রতিবন্ধী ভোটকর্মীকে ভোটের কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ওই সূত্রে খবর, এই বুথগুলো থাকছে মেদিনীপুর, খড়্গপুর শহর এবং শহরতলিতে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগে কখনও জেলায় প্রতিবন্ধী বুথ হয়নি। এ বার হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে। তাই বুথগুলো শহর, শহরতলিতে রাখা হচ্ছে। যাতে ভোটকর্মীদের কোনও সমস্যা না হয়।’’ জেলার বিভিন্ন দফতরেই কমবেশি প্রতিবন্ধী কর্মী রয়েছেন। তাঁদের নামের তালিকা জেলায় রয়েছে। সেখান থেকেই এই ভোটকর্মীদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলায় প্রতিবন্ধী কর্মীর সংখ্যা কম নয়। অনেকেই চান, ভোটকর্মী হিসেবে কাজ করতে। যাঁরা ইচ্ছুক, আমরা তাঁদেরকেই ভোটকর্মীর কাজে নিয়েছি।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

প্রতিবন্ধী ভোটকর্মীদের মধ্যে ছিলেন শুভদীপ দাস, দীপক বেতাল প্রমুখ। শুভদীপ কেশপুর ব্লকের টুকুরিয়াপাট হাইস্কুলের শিক্ষক। তাঁর ডান পা অনেকটাই অচল। ভালভাবে চলতে পারেন না। ছোট থেকেই এই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগিয়েছেন। দীপক গড়বেতা- ৩ ব্লকের বাঁশডিহা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁর বাঁ পা অনেকটাই অচল। তিনিও ছোট থেকে এই প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এগিয়েছেন। কেউই একটানা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না। দীপক বলছিলেন, ‘‘ইচ্ছে আর মনের জোর থাকলে প্রতিবন্ধকতা কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।’’ মেদিনীপুরের মোহনানন্দ হাইস্কুলে প্রতিবন্ধী ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ Vote Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy