Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

একা লক্ষ্মণে রক্ষে নেই , দোসর দীপক

জেলা কংগ্রেস সূত্রে খবর, বাম আমলে কংগ্রেস-সহ ডানপন্থীদের উপর পীড়ন চালানোর একাধিক অভিযোগ লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া ও কাঁথি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

‘বিতর্ক’ পিছু ছাড়ছে না সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া লক্ষ্মণ শেঠের। এক দশক বাদে সরাসরি লোকসভা রাজনীতির ময়দানে নেমে পড়েছেন তমলুকের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ সাংসদ। তাঁকে এ বার তমলুকর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাঁকে তমলুকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানালেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।

জেলা কংগ্রেস সূত্রে খবর, বাম আমলে কংগ্রেস-সহ ডানপন্থীদের উপর পীড়ন চালানোর একাধিক অভিযোগ লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে। এহেন নেতাকে দলে নেওয়ায় জেলা কংগ্রেসের একাংশ আপত্তি জানায়। কিন্তু দলে নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁকেই প্রার্থী ঘোষণা করায় লক্ষ্ণণকে ঘিরে দলের মধ্যে ক্ষোভ আরও তীব্র হচ্ছে। এবার সরাসরি প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রকে চিঠি পাঠালেন দলের দীর্ঘদিনের নেতা তথা গত লোকসভা উপ নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে হেরে যাওয়া পার্থ বটব্যাল। তিনি সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্যও বটে। বৃহস্পতিবার ওই চিঠি কলকাতায় বিধানভবনে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে লক্ষ্মণবাবুর প্রার্থী পদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি করা হয়েছে।

লক্ষ্মণ-বিরোধীদের অভিযোগ, হলদিয়া-সহ নানা প্রান্তে প্রাক্তন ওই সাংসদের প্রচুর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। তাই, টাকার জন্য তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রাজ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএমের জোট ভেঙে যাওয়া নিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু মন্তব্য করেছিলেন, ‘মানিব্যাগ এসেছে’। যা নিয়ে প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্রকেও বিঁধেছেন তিনি। প্রদেশ সভাপতিকে দেওয়া ওই চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে, হলদিয়া, সুতাহাটার ১০ জন কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনায় লক্ষ্মণ শেঠ অভিযুক্ত। পার্থবাবু বলেন, ‘‘উনি বরাবর জাতীয়তাবাদী বিরোধী। হলদিয়াতে ১০ জন ও নন্দীগ্রামে বহু মানুষ খুনে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী। ওঁকে দলে নেওয়া এবং প্রার্থী করা সমর্থন করি না।’’

শুধু লক্ষ্মণবাবুই নয়, কাঁথিতে দলীয় প্রার্থী দীপক কুমার দাসকে নিয়েও ক্ষোভ কংগ্রেসের একাংশে। বুধবার কাঁথিতে গোপন বৈঠকও করেন তাঁরা। সেখানে দলের ব্লক সভাপতিরা ছিলেন। বিক্ষুব্ধদের অন্যতম দেবাশিস পাহাড়ি নিজেকে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন জেলা যুব কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি বলে দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, “দীপকবাবু ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি। বয়স হয়ে গিয়েছে। কাঁথি আসনে নবীন প্রজন্মের কাউকে প্রার্থী করলে লড়াই আরও ভাল হত।’’

জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানিক ভৌমিক বলেন, “যা করছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী করছি। কারও ক্ষোভ থাকলে, তিনি মিডিয়ায় বিবৃতি না দিয়ে প্রদেশ সভাপতির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। আর দেবাশিসবাবু এককালে জেলা সম্পাদক ছিলেন। এখন আদপে কংগ্রেস করেন কিনা বা দলে সক্রিয় কিনা খোঁজ নিতে হবে।’’

তাঁদের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশের ক্ষোভ নিয়ে কী বলছেন দুই প্রার্থী?

লক্ষ্মণবাবুর বক্তব্য, ‘‘কারও সমস্যা থাকলে, জেলা সভাপতির কাছে বলতে পারেন। জেলা কমিটির সকলকে নিয়ে মিটিং করেছি। আমাকে নিয়ে আপত্তি থাকলে, ফের তাঁকে নিয়ে বসতে পারি।’’

আর দীপকবাবুর কথায়, ‘‘আমি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আমাকে যোগ্য প্রার্থী মনে করেই হাইকমান্ড টিকিট দিয়েছেন। যদি কারও পছন্দ না হয়, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’

ভোটের আগে দুই প্রার্থীকে নিয়ে কার্যত অস্বস্তিতে জেলা কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Congress Lakshman Seth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE