তৃণমূলের কর্মিসভা। প্রধান বক্তা মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ সেই সভার মূল মঞ্চে জায়গা পেলেন না দলের বর্তমান জেলা সভাপতিই! সেই সভায় অজিত মাইতির নাম দলের জেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করলেন স্বয়ং দলনেত্রী। তৃণমূলনেত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘মেদিনীপুর জেলার, সমগ্র জেলায় (পশ্চিম মেদিনীপুর) তৃণমূলের চেয়ারম্যান অজিত মাইতি। অজিত মাইতির নামটা আমি ঘোষণা করে যাচ্ছি এই কারণে, তিনি সব ব্লকগুলিকে নিয়ে কো-অর্ডিনেশন করে কাজ করবেন আগের মতো।’’
বর্তমানে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত। যখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দু’টি সাংগঠনিক ভাগ ছিল না তখন দলের জেলা সভাপতি ছিলেন অজিত। তিনি পিংলার বিধায়ক, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতিও। দলনেত্রীর নির্দেশ মতো এবার কর্মিসভার প্রস্তুতি দেখার দায়িত্ব বর্তেছিল অজিতের উপরেই। তবে কি দলে সাংগঠনিক পুনর্গঠন হবে, দুই সাংগঠনিক জেলার বদলে একটিই জেলা হবে পশ্চিম মেদিনীপুরে, কর্মিসভার পরে এ জল্পনা ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরে।
বুধবার মেদিনীপুরে কলেজ কলেজিয়েট স্কুল মাঠে তৃণমূলের ওই কর্মিসভা হয়। সেখানে অজিতকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘অজিত, তোমাকে আমি বলে যাব, যতক্ষণ নতুন ব্লক কমিটি না হচ্ছে, যাঁরা আছে, তাঁদের নিয়েই ব্লকে ব্লকে বৈঠক কর।’’ সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘কিছু কর্মী আছে। যাঁদের মধ্যে দূরত্ব আছে। যেখানে যেখানে দূরত্ব আছে, দূরত্ব কমিয়ে নিয়ে এসো। আমি নই, আমরা—এই কথাটা বলতে হবে। এটাই স্লোগান।’’ সভা থেকে দলের কর্মীদের কড়া বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি কেউকেটা হয়ে যাইনি। সবাইকে নিয়ে চললে তবেই সেটা সবার দল হয়। যাঁরা এসেছে, যাঁরা আসেনি, যাঁরা চিরকাল আছে, তাঁদের সম্মান দিয়ে কাজ করতে হবে, কথা বলতে হবে।’’ মঞ্চের একদিকে বসেছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ। মঙ্গলবারই তাঁকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারের সভাতেও তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, ‘‘একটা বিধায়ক, একটা জেলা পরিষদের সদস্য মানে এই নয়, আমি হলাম আর আমি আমার মতো করে নিলাম। ঘ্যাচাং ফু হবে! কেটে দেবো আমি।’’ তৃণমূলনেত্রীকে এদিন বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘যাঁরা কুকর্ম করে, তাঁদের কিন্তু মানুষ চিহ্নিত করে, মানুষ তাঁদের ঘৃণা করে, মানুষ তাঁদের ভালবাসে না। মানুষ যদি ভাল না বাসে আমি কেন ভালবাসব? আমি খুব রাফ অ্যান্ড টাফ লোক।’’