Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: অজিতেই আস্থা মমতার

প্রধান বক্তা মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ সেই সভার মূল মঞ্চে জায়গা পেলেন না দলের বর্তমান জেলা সভাপতিই!

সভামঞ্চে মমতার সঙ্গে অজিত।

সভামঞ্চে মমতার সঙ্গে অজিত। নিজস্ব চিত্র।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২২ ০৮:১২
Share: Save:

তৃণমূলের কর্মিসভা। প্রধান বক্তা মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ সেই সভার মূল মঞ্চে জায়গা পেলেন না দলের বর্তমান জেলা সভাপতিই! সেই সভায় অজিত মাইতির নাম দলের জেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করলেন স্বয়ং দলনেত্রী। তৃণমূলনেত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘মেদিনীপুর জেলার, সমগ্র জেলায় (পশ্চিম মেদিনীপুর) তৃণমূলের চেয়ারম্যান অজিত মাইতি। অজিত মাইতির নামটা আমি ঘোষণা করে যাচ্ছি এই কারণে, তিনি সব ব্লকগুলিকে নিয়ে কো-অর্ডিনেশন করে কাজ করবেন আগের মতো।’’

বর্তমানে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত। যখন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় দু’টি সাংগঠনিক ভাগ ছিল না তখন দলের জেলা সভাপতি ছিলেন অজিত। তিনি পিংলার বিধায়ক, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতিও। দলনেত্রীর নির্দেশ মতো এবার কর্মিসভার প্রস্তুতি দেখার দায়িত্ব বর্তেছিল অজিতের উপরেই। তবে কি দলে সাংগঠনিক পুনর্গঠন হবে, দুই সাংগঠনিক জেলার বদলে একটিই জেলা হবে পশ্চিম মেদিনীপুরে, কর্মিসভার পরে এ জল্পনা ঘুরছে তৃণমূলের অন্দরে।

বুধবার মেদিনীপুরে কলেজ কলেজিয়েট স্কুল মাঠে তৃণমূলের ওই কর্মিসভা হয়। সেখানে অজিতকে ডেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘অজিত, তোমাকে আমি বলে যাব, যতক্ষণ নতুন ব্লক কমিটি না হচ্ছে, যাঁরা আছে, তাঁদের নিয়েই ব্লকে ব্লকে বৈঠক কর।’’ সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘কিছু কর্মী আছে। যাঁদের মধ্যে দূরত্ব আছে। যেখানে যেখানে দূরত্ব আছে, দূরত্ব কমিয়ে নিয়ে এসো। আমি নই, আমরা—এই কথাটা বলতে হবে। এটাই স্লোগান।’’ সভা থেকে দলের কর্মীদের কড়া বার্তাও দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি কেউকেটা হয়ে যাইনি। সবাইকে নিয়ে চললে তবেই সেটা সবার দল হয়। যাঁরা এসেছে, যাঁরা আসেনি, যাঁরা চিরকাল আছে, তাঁদের সম্মান দিয়ে কাজ করতে হবে, কথা বলতে হবে।’’ মঞ্চের একদিকে বসেছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ। মঙ্গলবারই তাঁকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারের সভাতেও তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, ‘‘একটা বিধায়ক, একটা জেলা পরিষদের সদস্য মানে এই নয়, আমি হলাম আর আমি আমার মতো করে নিলাম। ঘ্যাচাং ফু হবে! কেটে দেবো আমি।’’ তৃণমূলনেত্রীকে এদিন বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘যাঁরা কুকর্ম করে, তাঁদের কিন্তু মানুষ চিহ্নিত করে, মানুষ তাঁদের ঘৃণা করে, মানুষ তাঁদের ভালবাসে না। মানুষ যদি ভাল না বাসে আমি কেন ভালবাসব? আমি খুব রাফ অ্যান্ড টাফ লোক।’’

দুই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মূল মঞ্চে জায়গা না পাওয়ায় দলের একটি অংশ ক্ষুব্ধও। তাদের প্রশ্ন, দলের সভার মূল মঞ্চে দলের জেলা সভাপতিই থাকবেন না, এটা হতে পারে? আবার দলের অন্য একটি অংশের মতে, নেত্রীর নাম যখন মমতা, দলের নাম যখন তৃণমূল, তখন অনেক কিছুই হতে পারে। যা অপ্রত্যাশিত। মূল মঞ্চে ছিলেন দলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কেরা। পাশে আরও দু’টি মঞ্চ ছিল। সেখানে ছিলেন জেলা ও ব্লকের নেতারা। ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস ওই পাশের একটি মঞ্চে বসেছেন। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় মূল মঞ্চে জায়গা না পেয়ে মঞ্চের নীচেই দাঁড়িয়ে থেকেছেন। পাশের মঞ্চে যাননি। নতুন কর্মাধ্যক্ষ হতে চলেছেন কণিকা মান্ডি। অনেককে অবাক করে কণিকা মূল মঞ্চে বসেছেন। নেত্রী আসার আগে বক্তৃতাও করেছেন। দলের দুই রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ এবং আশিস চক্রবর্তী শুরুতে পাশের মঞ্চেই ছিলেন। পরে অবশ্য তাঁদের মূল মঞ্চে ডেকে নেওয়া হয়েছে।

কোনও মঞ্চেই যে দেখা গেল না? তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় বলছেন, ‘‘সভার মাঠেই ছিলাম। মঞ্চের কাছেই ছিলাম!’’ ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দল যেখানে বসতে বলেছে, সেখানে বসেছি। চটে বসতে বললে চটে বসব। চেয়ারে বসতে বললে চেয়ারে বসব। মাটিতে বসতে বললে মাটিতে বসব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE