মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বারবার অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কেন ডেবরার হোমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি— খড়্গপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে জানতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব রোশনি সেনকে ওই হোম সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও নির্দেশ দেন তিনি।
সোমবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে আলোচনার মাঝেই ডেবরা কলেজের কাছে চককুমারে একটি শিশু-কিশোর হোমের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানতে চান, ডেবরার ওই হোম সম্পর্কে বারবার তাঁর কাছে অভিযোগ পৌঁছেছে। কিন্তু এখনও কেন ওই হোমের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব রোশনি সেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই হোমে রাজ্যের প্রতিনিধি পাঠিয়ে তদন্ত করেও বিশেষ কিছু ত্রুটি পাওয়া যায়নি। এরপরেই মমতা বলেন, “ডেবরার ওই হোম সম্পর্কে বারবার অভিযোগ আসছে। রোশনি ভাল করে ওই হোমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করতে হবে।”
সমাজকল্যাণ দফতরের অধীনে থাকা ডেবরার ওই হোমটি পরিচালনা করে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল সার্ভিস’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলা ওই হোমে সবমিলিয়ে ১০০ জন শিশু-কিশোরের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত শিশু-কিশোর বন্দি ছাড়াও অনাথ শিশুদেরও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ওই হোমে।
২০১২ সালে হোমের কাছেই মাটি খুঁড়ে আফতাব নামে এক আবাসিক শিশুর কঙ্কাল উদ্ধার হয়। সেই সময় হোমে ভাঙচুর চালায় স্থানীয় বাসিন্দারা। হোমে যারা ভাঙচুর চালায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন হোম কর্তৃপক্ষ।
২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে কোলাঘাটের দেনানের বাসিন্দা সব্যসাচী মাইতি নামে এক বিচারাধীন কিশোরের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই হোমে। এ ছাড়া শিশু নিখোঁজ, নিম্ন মানের খাবার দেওয়া, শিশুদের মারধর-সহ আরও নানা অভিযোগ ওঠে হোমের বিরুদ্ধে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকেই পরপর ওই হোমের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট দেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ।
সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকের পর ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রেখা হুঁই বলেন, “২০১২ সালে জেলার ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই থেকে এই হোম নিয়ে লড়াই করছি। কিন্তু কোনও দিন ঠিক ভাবে তদন্ত হয়নি। দিদির নির্দেশে আমরা খুশি।”
ডেবরার বিধায়ক সেলিমা খাতুনেরও দাবি, “মাস কয়েক আগে তিনি ওই হোমে গিয়েও ঢুকতে পারেননি।”
যদিও ওই হোমের সম্পাদক ত্রিদীপ দাস বেরা বলছেন, “রোজ আমার হোম নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। আবার তদন্ত হলেও আমার কোনও অসুবিধা নেই।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘২০১২ সালে হোমে ভাঙচুরের ঘটনায় আমি তৃণমূলের কয়েকজনের নামে মামলা করেছিলাম। সেই রাগ থেকেই এ সব হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy