ক’দিন আগেই তিনি এসেছিলেন সবংয়ে। গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও সে বার পুলিশের কাছে তিনি থেকে গিয়েছিলেন অধরা। ফের মেদিনীপুরে এলেন বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। এবং এ বারও পুলিশ তাঁকে দেখতে পেল না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো পুজো মিটতেই শুক্রবার বৈঠকে বসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতারা। শুক্রবার মেদিনীপুরে শাসক দলের এই বৈঠকেই এসেছিলেন সবংয়ের বিধায়ক মানসবাবু। দলবদলের পরে এই প্রথম মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলের কোনও বৈঠকে যোগ দিলেন তিনি। সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে আসা মানসবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁর এই বৈঠকে যোগ দেওয়া।
গত এপ্রিলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সবংয়ে তৃণমূল কর্মী জয়দেব জানাকে খুনের মামলায় নাম জড়ায় মানসবাবুর। সেই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে। বিরোধীদের দাবি, মামলা থেকেই বাঁচতেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন প্রবীণ এই নেতা। আর তাই এখন বারবার জেলায় এলেও পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক অনিল শিকারিয়া বলেন, ‘‘মানসবাবু তো এখন তৃণমূলের বিধায়ক। আর শাসকদলে থাকলে সব ছাড়!’’ জেলার পুলিশ কর্তারা অবশ্য এ ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। এক পুলিশ কর্তার আবার দাবি, ‘‘মানসবাবু যে মেদিনীপুরে এসেছিলেন, সে কথা আমাদের জানা ছিল না।’’
এ দিন দুপুরে মেদিনীপুর শহরের ফেডারেশন হলে এই বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়, বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ, আশিস চক্রবর্তী, জেলা কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, পুরপ্রধান প্রণব বসু প্রমুখ। দলের এক সূত্রে খবর, সাংগঠনিক কিছু বিষয় নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। উপস্থিত বিধায়কেরা নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতির কথা জানান। ঠিক হয়েছে আগামী রবিবার খড়্গপুরে শান্তি মিছিল হবে। বড়বাতি থেকে পুরাতনবাজার পর্যন্ত। এ দিন দুপুরে তৃণমূল বিধায়কদের একটি দল রেলশহরে আসে। দলের কার্যালয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনাও সারেন মানসবাবু, অজিতবাবু, দীনেনবাবুরা। ছিলেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার-সহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর।
দলবদলের পরে এর আগে মেদিনীপুরে এসে তৃণমূলের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন মানসবাবুর ভাই বিকাশ ভুঁইয়া। তবে তৃণমূলে আসার পরে মানসবাবু এ দিনই প্রথম মেদিনীপুরে দলীয় বৈঠকে যোগ দিলেন। জেলা সভাপতি অজিতবাবুর ঠিক পাশেই বসেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন তাঁকে ডেকে নিতে দেখা যায় নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষকে। বৈঠকের আগে-পরে দলের কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে মানসবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সভাপতি অজিতবাবু, চেয়ারম্যান দীনেনবাবুর নেতৃত্বে আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হল। সাংসদ তথা সর্বভারতীয় যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীও আমাকে বলেছিলেন এই বৈঠকে আসার জন্য।’’