বিনা হেলমেটের চালক ও আরোহীদের জরিমানা। রবিবার ঝাড়গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
পথ গিয়ে মেশার কথা ছিল স্কুল-কলেজে। কিন্তু পথের বাঁকে হাজির পুলিশ। রবিবার সরস্বতী পুজোর দিনে মোটা টাকা জরিমানা গুনতে হল হেলমেটহীনদের। নগদে অবশ্য নয়। অনলাইনে। পুজোর দিনে ঝাড়গ্রামের রাস্তাঘাট রঙিন পোশাকে ঝলমলে ছিল। কিন্তু রাস্তার নানা মোড় মোড়া ছিল নানা রংদার ঘটনায়। জরিমানা করার আগে পুলিশকে শুনতে হল নানা বায়নাক্কা। এমনকি হুমকিও।
সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালির কাছে অঘোষিত ‘প্রেমদিবস’ বা ভ্যালেন্টাইন্স ডে’। স্কুল-কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের অনেক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা থাকে এই দিনটির জন্য। চুলের ছাঁট, পোশাক নিয়ে চিন্তাভাবনা। আর বাইক নিয়ে ঘোরাঘুরি। এঁদের বহুজনেরই হেলমেট নেই। এ বছর কিছুটা ধাক্কা খেতে হয়েছে তাঁদের। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরের সারদাপীঠ মোড়, কলেজ মোড় এলাকায় ট্রাফিক ওসি শাহনাওয়াজ হোসেনের নেতৃত্বে দিনভর চলে অভিযান। ই-চালানে করা হয় জরিমানা। তখনই ধরা পড়ে নানা ঘটনা।
কলেজ মোড়ে একটি মোটর বাইকে বিনা হেলমেটে তিন জন যাচ্ছিলেন। তাঁদের ধরতেই এক যুবক বলেন, ‘‘আমি রাজ কলেজে রাজনীতি করি। দাদকে ফোন করছি।’’ আরেকজন বিনা হেলমেটের আরোহী মামার ভয় দেখিয়েছিলেন পুলিশকে। এক তরুণ তাঁর প্রেমিকাকে নিয়ে বিনা হেলমেটে যাচ্ছিলেন। পুলিশ ধরতেই তরুণটি বলেন, ‘‘আমার বাবা ডাক্তার।’’ ট্রাফিক পুলিশের জবাব ছিল, ‘‘বাবা ডাক্তার হলে কি হেলমেট পরার দরকার নেই?’’ হেলমেটহীন অন্য এক যুবকের অনুনয় ছিল, পুজোর জন্য ‘স্টাইল’ করে চুল কেটেছেন। হেলমেট পরলে সেই কায়দা কেউ দেখতে পাবেন না। তিনি অনুনয় করেন, ‘‘আজকের দিনটা ছেড়ে দিন।’’ পুলিশ অবশ্য হেলমেটহীনদের অনলাইনে এক হাজার টাকা জরিমানা করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন হেলমেটহীন ৭০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করার পর মেসেজ চলে যায় বাইক চালকের কাছে। তাঁকে অনলাইনে এক হাজার টাকা পেমেন্ট করতে হবে। জেলা পুলিশের ডিএসপি (ট্রাফিক) মিহিরলাল নস্কর বলেন, ‘‘ধরা পড়লে নানা অজুহাত দেয়। এ ধরনের অজুহাত কাম্য নয়। এখন নিয়মিত চেকিং চলবে। নানা ভাবে সচেতন করা হচ্ছে। তবুও অনেকে কর্ণপাত করছেন না। তবে জরিমানা করার মাধ্যমে অনেকে সচেতন হচ্ছেন। কারণ, একবার হাজার টাকা দেওয়ার পরে হেলমেট না পরলে আবার পকেটে টান পড়বে।’’
সম্প্রতি শেষ হয়েছে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। সচেতনতা প্রচার করেছে পুলিশ। তুবও হেলমেট পরতে অনীহা অধিকাংশের। অনেক সময়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে ১৮ বছরের নীচের বাচ্চারাও। স্বাভাবিক কারণেই যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ডিএসপি বলছেন, ‘‘১৬ বছরেই ছেলে মেয়েদের গাড়ি কিনে দেওয়াটা হচ্ছে অভিভাবকদের ব্যর্থতা। অভিভাবকদের সচেতন হওয়া খুবই প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy