Advertisement
E-Paper

অনুমতি ছাড়াই খোলামেলা পোশাকে সমুদ্রসৈকতে চলছে বাণিজ্যিক ভিডিয়োশুট

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই সব ফ্যাশন ভিডিয়ো নির্মাতাদের পছন্দের জায়গা এখন মন্দারমণি, তাজপুর, জুনপুট, বাঁকিপুট, বগুড়ানজলপাইয়ের মতো সৈকত। অভিযোগ, প্রশাসনের কোনও অনুমতি না নিয়েই চলছে ভিডিয়ো নির্মাণ।

আরুণি মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০০:০৭
মন্দারমণি।—ফাইল চিত্র।

মন্দারমণি।—ফাইল চিত্র।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি-ধন্য শান্তিনিকেতনে ‘খোলামেলা’ শাড়ির ফ্যাশন ভিডিয়ো শ্যুটিং নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন অনেকে। পরিস্থিতি বিচার করে প্রশাসনের তরফে শ্যুটিংয়ের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই সব ফ্যাশন ভিডিয়ো নির্মাতাদের পছন্দের জায়গা এখন মন্দারমণি, তাজপুর, জুনপুট, বাঁকিপুট, বগুড়ানজলপাইয়ের মতো সৈকত। অভিযোগ, প্রশাসনের কোনও অনুমতি না নিয়েই চলছে ভিডিয়ো নির্মাণ। এতে একদিকে স্থানীয় লোকজনের মাঝে ‘খোলামেলা’ পোশাকের মডেলদের অস্বস্তি যেমন বাড়ছে, তেমনই প্রশ্নের মুখে পড়ছে নিরাপত্তার বিষয়টি।

পরনে শাড়ি, তন্বী মডেলদের ফ্যাশন ভিডিয়ো এই মুহূর্তে ইউটিউবে হটকেক! নতুন ভিডিয়ো আপলোড হতেই চড়চড়িয়ে বাড়ছে ভিউয়ার। নিয়ম মতো, প্রকাশ্য স্থানে বাণিজ্যিক ভিডিয়ো শ্যুটিং করতে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। প্রয়োজন বুঝে ইউনিটকে নিরাপত্তাও দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ, এই ধরনের ভিডিয়ো নির্মাতারা অনুমতির তোয়াক্কা না করেই বেলাভূমিতে শ্যুটিং করছেন। বেশ কয়েকজন মডেলের অভিযোগ, পুরো শ্যুটিংই হচ্ছে অপেশাদার ঢঙে। ফলে, অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের নানা কটূক্তিরও মুখেও পড়তে হচ্ছে। শাড়ির ফ্যাশন ভিডিয়োয় অভিনয় করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মডেল বললেন, ‘‘শ্যুটিংয়ের সময় একাধিকবার কটূক্তি শুনতে হয়েছে। পেশাগত দক্ষতায় ব্যাপারটা এড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব শ্যুটিংটা শেষ করার চেষ্টা করেছি।’’

একদিকে নির্জন সৈকত, অন্যদিকে ঝাউবনের সারি। নির্জনতার এমন সুযোগ নিয়েই ভিডিয়ো নির্মাতারা ‘সাহসী’ হয়ে উঠছেন বলে অভিযোগ। যে সব সৈকতে পর্যটকের আনাগোনা কম, সেই সব জায়গাকেই শ্যুটিংয়ের জন্য বাছা হয়। পাঁচ থেকে সাতজন সদস্য থাকেন ইউনিটে। অনেক মডেলের অভিযোগ, ভিডিয়োর ব্যাপারে তাঁদের আগাম জানানো হচ্ছে না। প্রথমে শাড়ির ফোটোশ্যুট করা হবে বলা হয়। সেই মতো ফোটোশ্যুট করাও হয়। তারপর অপেশাদার ঢঙে মডেলদের কিছু ভিডিয়ো ক্লিপ শ্যুট করে নেওয়া হয়। সেগুলিই সম্পাদনা করে আপলোড করা হয় ইউটিউবে। এক মডেলের কথায়, ‘‘আমাকে তো আগে জানানোই হয়নি যে এই রকম কিছু একটা হতে চলেছে। শাড়ির ফোটোশ্যুট শেষ হলে, অ্যামেচার স্টাইলে আমার কয়েকটা ভিডিয়ো ক্লিপ তোলা হয়েছিল। পরে দেখলাম, সেগুলিই এডিট করে ইন্টারনেটে পোস্ট করা হয়েছে।’’

কলকাতার এমন ভিডিয়ো নির্মাতাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তাঁরা অবশ্য কথা বলার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাননি। তবে সৈকতে এই ধরনের ফ্যাশন ভিডিয়োর শ্যুটিং যে হচ্ছে তা মানছেন স্থানীয়রা। মন্দারমণির বাসিন্দা লক্ষ্মীনারায়ণ জানার কথায়, ‘‘উপকূল এলাকায় নায়িকাদের নিয়ে নানা রকম শ্যুটিং হয় এখানে। ব্যাপারটা আমাদের গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।’’

সমস্যা অজানা নয় পুলিশেরও। কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৈয়দ মহম্মদ মামদোদুল হোসেন বলছিলেন, ‘‘কোনও ইউনিট শুটিং করতে এসে আমাদের জানালে সিভিক ভলান্টিয়ার পাঠিয়ে দিই। তবে ইদানিং বহু ইউনিট এখানে শ্যুটিং করছে যারা পুলিশকে জানিয়ে আসছে না। সব সময় আমাদেরও নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’’

এখনও সে ভাবে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি ঠিকই, কিন্তু বিপদের আশঙ্কা কি তাতে কমে!

(সহ-প্রতিবেদন: শান্তনু বেরা)

Video Youtube Mandarmani
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy