Advertisement
E-Paper

টাঙ্গাইল, ফুলিয়ার রমরমায় ধুঁকছে অমর্ষির তাঁত

৫৮ বছরের তাঁত শিল্পী গণেশ বেরা বলেন, ‘‘দশ বছর বয়স থেকে তাঁতের শাড়ি বানাচ্ছি। প্রথমে স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা ছিল। রোজগারও বেশি হতো। কিন্তু এখন আগের মতো কাজ হয় না। টাঙ্গাইল, ফুলিয়া শাড়ির কাছে আমাদের তাঁতের শাড়ি প্রতিযোগিতায় মার খাচ্ছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৮ ০৭:২০
ব্যস্ত: অমর্ষিতে তাঁত শিল্পী। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: অমর্ষিতে তাঁত শিল্পী। নিজস্ব চিত্র

ফ্যান্সি শাড়ির সঙ্গে ‘লড়াই’য়ে মার খাচ্ছে পটাশপুরের তাঁত শাড়ি।

পটাশপুর থানার অমর্ষি, কসবা বা পটাশপুর-২ ব্লকের প্রতাপদিঘির তাঁতি পাড়ায় এক সময় দিনের পাশাপাশি রাতেও লাগাতার চলত তাঁত মেশিন। বাংলা ছাড়াও ওড়িশাতেও রফতানি হতো সেই সব তাঁত শাড়ি। কিন্তু বর্তমানে ওই তাঁতি পাড়াগুলিতেই দেখা গিয়েছে দারিদ্রতার ছায়া। ধুলো জমেছে তাঁতের মাকুতে। স্বল্প আয়ের মধ্যেও শুধু বেঁচে থাকার তাগিদেই বয়স্ক তাঁত শিল্পীরা বাঁচিয়ে রাখছেন অমর্ষির তাঁত শিল্পকে।

বর্তমানে প্রধানত এলাকার আদিবাসী মহিলারাই বেশি পরেন তাঁতের কাপড়। ৫৮ বছরের তাঁত শিল্পী গণেশ বেরা বলেন, ‘‘দশ বছর বয়স থেকে তাঁতের শাড়ি বানাচ্ছি। প্রথমে স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা ছিল। রোজগারও বেশি হতো। কিন্তু এখন আগের মতো কাজ হয় না। টাঙ্গাইল, ফুলিয়া শাড়ির কাছে আমাদের তাঁতের শাড়ি প্রতিযোগিতায় মার খাচ্ছে।’’

তাঁতিদের কাছে থেকে জানি গিয়েছে, মহাজনের কাছে সুতো নিয়ে তৈরি হয় কাপড় গামছা। একজন সারাদিন তাঁত চালিয়ে একটি মাত্র কাপড় বুনতে পারেন। প্রতিটি কাপড়ের পিছু মজুরি থাকে মাত্র ৯০ টাকা। এক তাঁত শিল্পী কাজল বেরা বলেন, ‘‘সারা দিন নাগাড়ে মেশিন চালিয়ে কান্তি হয়ে পড়ি। নিজেদের সুতো দিয়ে কাপড় বানালে রোজকার অনেকটাই বেশি হতো। মহাজনের দেওয়া সুতোয় তেমন রোজকার নেই। শুধু মহাজনের সুতো দিয়ে কাপড় বোনা হয় না। তাকে ধুয়ে মাড় দিয়ে ববিনে সুতো গুছিয়ে তাঁতের জন্য প্রস্তুত করতে হয়। পরিশ্রম প্রচুর কিন্তু মুনাফা অনেক কম।’’

সরকারি তরফে যে একেবারেই সাহায্য মেলেনি, তা নয়। তাঁতিরা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে সরকারি ‘তাঁতি সাথী’ প্রকল্পে কয়েকজনকে তাঁত দেওয়া হয়েছিল। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলেই দাবি। অভিযোগ, এখনও শিল্পীদের নেই কোনও স্বাস্থ্যবিমা। তাঁত চালাতে কোনও সরকারি ঋণের সুবিধা নেই। তাঁতিদের দাবি, স্থানীয় খোলা বাজারে বা জেলার সরকারি মেলাগুলিতে তাঁতের শাড়ি ক্রেতাদের কাছে সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা করা হলে অনেকটাই লাভজনক হত তাঁত শিল্প।

এ বিষয়ে পটাশপুর-১ এর বিডিও রণজিৎ হালদার বলেন, “ রাজ্য সরকার তাঁত শিল্পকে বাঁচানোর জন্য নানা প্রকল্পের সূচনা করেছে। সেই সুবিধার এখনও অনেকগুলি আমাদের কাছে আসে পৌঁছয়নি। তবে পটাশপুরের তাঁত শিল্পের জন্য বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী দিনে সরকারিভাবে সুবিধা পাবেন তাঁত শিল্পরা।”

Tant Saree Fulia Tangail Saree Saree পটাশপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy