শহরের পিপলস্ কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর নির্বাচন হবে আগামী ১৯ এপ্রিল। সমবায় দফতর সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। সবমিলিয়ে পদ সংখ্যা ১৫। মনোনয়নপর্ব শুরু হবে ৩০ মার্চ। ৩০- ৩১ মার্চ, এই দু’দিন মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়া যাবে। ১ এপ্রিল মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করা হবে। পরের দিন অর্থাৎ, ২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এরপরই প্রকাশিত হবে প্রার্থী তালিকা। জানা যাবে কারা ডিরেক্টর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিটার্নিং অফিসার তথা জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিষ্ট্রার অফ কো-অপারেটিভ সোসাইটি (এআরসিএস) মদনমোহন ঘোষ বলেন, “আগামী ১৯ এপ্রিল ওই সমবায় ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর নির্বাচন হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হচ্ছে।”
ডিরেক্টর নির্বাচন নিয়ে তৃণমূল শিবিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল-সমর্থিত ৫০ জন জয়ী প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন সুকুমার পড়্যা, মৃণাল চৌধুরী, সুব্রত সরকার, সঞ্জিত সরকারের মতো তৃণমূল নেতৃত্ব। সুকুমারবাবু শাসক দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। মৃণালবাবু প্রাক্তন কাউন্সিলর। সুব্রতবাবু তৃণমূল প্রভাবিত এক কর্মচারী সংগঠনের জেলা সম্পাদক। সঞ্জিতবাবু শহর তৃণমূলের নেতা। এই পরিস্থিতিতে কারা ডিরেক্টর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, সেই নিয়ে ইতিমধ্যে জলঘোলা শুরু হয়েছে তৃণমূল-শিবিরে। সাধারণত, একটি প্যানেলই জমা পড়ার কথা। কিন্তু মতানৈক্যে একাধিক প্যানেল জমা পড়তে পারে বলে দলেরই একাংশের আশঙ্কা। তখন ভোটাভুটি হবে।
এই সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়েও তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। দলের কাছ থেকে প্রার্থিপদ না পেয়ে কয়েকজন নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ডিরেক্টর নির্বাচনে কী দলের কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে পারে? মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতির জবাব, “দলের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই। যা হবে আলোচনার মাধ্যমেই হবে।” তাঁর কথায়, “পিপলস্ ব্যাঙ্কের ভোটে যে বিপুল জয় এসেছে, তা মানুষেরই জয়। মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছেন। মানুষের রায়কে মর্যাদা দিতেই হবে।”
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর শহরের এই সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির নির্বাচন ছিল। দীর্ঘদিন ধরে বামেদের দখলে থাকা এই সমিতির এ বার দখল নেয় তৃণমূল। মোট ৫১টি আসনের মধ্যে ৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন তৃণমূল-সমর্থিতরা। বাকি ৪৭টি আসনের মধ্যে ৪৬টিতেও তারাই জেতে। মাত্র একটি আসন পায় বামেরা। ফল তৃণমূলের অনুকূলে ৫০- ১।
বাম-সহ বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, তৃণমূল গুন্ডা-বাহিনী এনে বুথ দখল করে অবাধে ছাপ্পা দিয়েছিল। পুলিশ ছিল দর্শক। খোদ অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার কৌশিক চক্রবর্তীর রিপোর্টও সেই অভিযোগকে মান্যতা দেয়। সমবায় দফতর সূত্রে খবর, কৌশিকবাবু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট ২৪টি বুথের সবক’টিই ওই দিন দখল হয়ে গিয়েছিল। ছাপ্পা ভোটও পড়েছে। রিপোর্টে কৌশিকবাবু এ-ও দাবি করেন, তিনি জয়ী প্রার্থীদের শংসাপত্র দিতে চাননি। রিটার্নিং অফিসারই তাঁকে সার্টিফিকেট দিতে বাধ্য করেন। ইতিমধ্যে রাজ্য সমবায় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে এই সমবায়ে পুনর্নির্বাচন চেয়েছে বামেরা। কমিশন পদক্ষেপ না করলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy