স্কুলজীবনের গণ্ডি পেরিয়েছি বেশ কিছুদিন। এখন আমি কলকাতায় ইংরেজি সাহিত্যর স্নাতকোত্তরের ছাত্রী। ইংরেজি মাধ্যম হলেও আমাদের স্কুলে রবীন্দ্রজয়ন্তী খুব ধুমধাম করে হত। সে সব অনুষ্ঠানে সুযোগ পাওয়া ছিল ভাগ্যের ব্যাপার। আমি নাচের দলে সুযোগ পেতাম। সে সব দিনের কথা জীবনের সম্পদ। ২৫ শে বৈশাখ মা আমাকে খুব সকালে লালপাড় হলুদ শাড়ি পরিয়ে দিতেন। চারদিকে উৎসবের গন্ধ।
ছোটবেলায় রবিঠাকুরের কত গান গেয়েছি, নেচেছি। তখন বুঝতে পারিনি গানের মাহাত্ম। কিন্তু আজ মন খারাপ সেই সব গানেই আশ্রয় খুঁজি। মন ভালো হয়ে যায়। গানের কথায় কি যেন একটা শক্তি আছে।
আমার কাছে রবীন্দ্রনাথ একজন যুগপুরুষ। ভাবতে অবাক লাগে রবীন্দ্রনাথ এত ধরনের মানুষের মনের কথা কেমন করে ঠিক জেনে ফেলেছিলেন। একবার রবীন্দ্র নৃত্যে পুরস্কার পেয়েছিলাম একটা ‘গীতাঞ্জলি’। সেই বই এখনও আমাকে আলোড়িত করে। ভাল লাগে যখন ছোট্ট মোবাইলটাই খুলে যায় পুরো গীতবিতানটা। এই তো সে দিন ফিরছি, ট্রেনে দেখলাম বেশ কিছু ছেলেমেয়ে সেজে গুজে চলছে। স্কুলের অনুষ্ঠানে হয়তো। কেউ কেউ কবিতা মুখস্থ করছিল। আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম আমার অতীতে। মনে মনে বলছিলাম,
বজ্র তোমার বাজে বাঁশি
সে কি সহজ গান
সেই সুরেতে বাজব আমি
দাও মোরে সেই কান।
শাখী মুখোপাধ্যায়, স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষ।