Advertisement
১৮ মে ২০২৪

নোটের চোটে সঙ্কটে মেসপাড়া

বাড়ি থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে পারছেন না সঙ্গীতা ঘোষ। ঘাটালের বাসিন্দা সঙ্গীতা মেদিনীপুরের এক মেসে থাকেন।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৪৭
Share: Save:

বাড়ি থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে পারছেন না সঙ্গীতা ঘোষ। ঘাটালের বাসিন্দা সঙ্গীতা মেদিনীপুরের এক মেসে থাকেন। হঠাৎ করে ঘাটালে যাওয়াও দুষ্কর। সঙ্গীতা বলছিলেন, “মাসের প্রথম দিকে বাড়ি থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে পারছি না তো!” সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকনো এই ছাত্রীর কথায়, “মেস ভাড়া, খাওয়ার খরচ মেটাতে পারছি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। কবে যে এই ভোগান্তি দূর হবে কে জানে!” মাসিক ভাড়ার টাকা না পেয়ে বিপাকে মেসের মালিকারাও।

হাতে টাকা না- থাকায় আবাসিকদের অনেকেই ভাড়া বকেয়া রাখায় সমস্যায় পড়েছেন মেস মালিকরা। উপায়ন্তর না- দেখে মেস মালিকদের একাংশ আবার রান্নার লোকেদের বেতন বকেয়া রেখেছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, পরের মাসে একসঙ্গে দু’মাসের বেতন দিয়ে দেবেন! মেদিনীপুরের মেস মালিক অনয় মাইতির কথায়, “নোট বাতিল ঘোষণার পর থেকেই কত সমস্যা! এখন তো পুরনো নোট নেওয়া যাবে না। আবাসিকদের কাছে নতুন নোটও কম। তাই অনেকে মেস ভাড়া বকেয়া রেখেছে। বকেয়া ভাড়া পরের মাসে দেবে বলেছে। ওঁদের তো আর জোরাজুরি করতে পারি না!”

মেদিনীপুরের রাঙামাটি, তাঁতিগেড়িয়া, অশোকনগরে অনেক মেস রয়েছে। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ, স্কুল পড়ুয়াদের একাংশও মেসে থাকেন। কারও বাড়ি জেলায়, কারও বাড়ি জেলার বাইরে। এক- এক মেসের এক- এক রকম ভাড়া। কোথাও মাসে ১০০০-১২০০, কোথাও আবার ১৬০০-১৮০০। একটি ঘরে চারটি শয্যা থাকলে একটু কম ভাড়া, একটি কিংবা দু’টি শয্যা থাকলে একটু বেশি ভাড়া। এর উপর রয়েছে খাওয়ার খরচ। পড়াশোনার খরচ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার খরচ। খাওয়ার খরচও মাসে কোথাও ১৪০০- ১৬০০ টাকা, কোথাও ১৬০০- ১৮০০ টাকার মতো পড়ে।

শহরের এক মেসে থাকেন অরুণাভ বেরা। তাঁর কথায়, “এটিএম থেকে টাকা পেতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। টাকার জন্য শহরের প্রায় সব এটিএমেই ঘুরেছি। খালি হাতে ফিরতে হয়েছে!” অরুণাভ বলছিলেন, “কাছে পুরনো নোট রয়েছে। কিন্তু পুরনো নোট তো এখন চলছে না। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চেনা- পরিচিত দোকান থেকে ধারেই নিচ্ছি।” অঙ্কিতা নন্দী বলছিলেন, “এটিএম থেকে দু’হাজার টাকার নোট বেরোচ্ছে। এই নোট ভাঙাব কোথায়!” মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় মানছেন, “আবাসিকদের অনেকে এখন ধারে কেনাকাটা করছেন। এছাড়া উপায়ও নেই! দোকানদাররা জিনিসপত্রের দাম খাতায় তুলে রাখছেন। ফোন নম্বর নিয়ে রাখছেন।” তাঁর কথায়, “নতুন দু’হাজার টাকার নোট এসেছে ঠিকই তবে তা ভাঙানো সমস্যার। অনেক দোকানদারই পরিচিত খদ্দেরদের খাতায় লিখে জিনিসপত্র দিচ্ছেন।”

শহরে নাটক। ভারতীয় গণসংস্কৃতি সঙ্ঘের মেদিনীপুর নিশান শাখার উদ্যোগে এক নাটক মঞ্চস্থ হল মেদিনীপুরে। গত শনিবার মেদিনীপুরে প্রদ্যোৎ স্মৃতি সদনে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হারানের নাতজামাই’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mess business crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE