Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মমতার ধমক, ধুলো ঝেড়ে ফাইলে টান

মুখ্যমন্ত্রীর এক ধমকেই ধুলো জমতে থাকা ফাইলগুলো ফের নড়াচড়া করতে শুরু করেছে। মাস কয়েক আগে গড়বেতা-৩ ব্লকের এক স্কুল ভবন নির্মাণে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৬
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর এক ধমকেই ধুলো জমতে থাকা ফাইলগুলো ফের নড়াচড়া করতে শুরু করেছে।

মাস কয়েক আগে গড়বেতা-৩ ব্লকের এক স্কুল ভবন নির্মাণে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অথচ, এখনও কাজ শুরু হয়নি। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। শুক্রবার দুপুরে ডাক পড়ে জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের। ডাক পেয়ে তড়িঘড়ি সভাধিপতির দফতরে আসেন শ্যামপদবাবু। সভাধিপতির প্রশ্ন, ‘শ্যামদা, টাকা তো সেই কবে বরাদ্দ হয়েছে। এখনও ওই কাজ শুরু হল না কেন?’ জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের আশ্বাস, ‘কাজটা তো শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। এখনই স্কুল পরিদর্শককে ধরছি। দেখছি ঠিক কি হয়েছে।’ উত্তরাদেবী জানিয়ে দেন, শুধু এই কাজটা নয়, দফতরে আর কী কী কাজ পড়ে রয়েছে, কেন পড়ে রয়েছে, তা আগামী সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, সভাধিপতির এমন নির্দেশ পৌঁছেছে বাকি সব কর্মাধ্যক্ষের কাছেই।

বাকি থাকা কাজের তালিকা চাওয়ার কথা মানছেন সভাধিপতি উত্তরাদেবী। তাঁর কথায়, “দ্রুত সব কাজ শেষ করতে হবে। তাই তালিকা চেয়েছি।” তালিকা তৈরি নিয়ে শুক্রবারই সভাধিপতির সঙ্গে কথা হয়েছে জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ জরিনা ইয়াসমিনের। জরিনার আশ্বাস, “আগামী সপ্তাহের শুরুতেই ওই তালিকা জমা দিয়ে দেবো।”

কেন এই তত্পরতা? জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, এ সবের পিছনে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ধমক। সম্প্রতি দু’দিনের জেলা সফরে এসে খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে জেলার কাজকর্মের অগ্রগতি দেখে খুব একটা সন্তুষ্ট হননি মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা, অতিরিক্ত জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা, জেলার সভাধিপতি উত্তরা সিংহ। প্রশাসনিক বৈঠকে জেলাশাসকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে এও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আপনি তো আগে ভাল কাজ করতেন। এই এক বছরে এমন হল কেন?’ সভাধিপতিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘কাজের প্রস্তাব পাঠিয়ে দেওয়া আর কাজটা তুলে আনা এক জিনিস নয়।’ এমন চলতে থাকলে প্রশাসনের খোলনলচে বদলে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন মুখ্যমন্ত্রী।

আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সরকারি পরিষেবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। আর তারপরই নড়ে বসেছে জেলা পরিষদ। সব ঠিক থাকলে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তৃণমূলের এক সূত্রের মতে, এই জন্যই গ্রামস্তরে সরকারি পরিষেবা দ্রুত পৌঁছনো নিশ্চিত করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণত, তিন মাস অন্তর জেলা সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, জেলার কাজকর্মের অগ্রগতি দেখে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, পরের মাসেই তিনি ফের মেদিনীপুরে আসবেন। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার আশ্বাস, “মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাড়াতাড়ি কাজ চাই। পড়ে থাকা ফাইলগুলো দেখার কাজ শুরু হয়েছে। সমস্ত কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করার সব রকম চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midnapore Mamata banerjee Old information
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE