E-Paper

ভোটের তেকাঠি ভেদ করতে মাঠ বড়ো করতে চাইছে তৃণমূল  

তৃণমূল সূত্রে খবর, মূলত দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার উদ্যোগেই ব্লকে ফুটবল অথবা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৪২
চন্দ্রকোনা রোডে যুব তৃণমূলের ফুটবল প্রতিযোগিতা।

চন্দ্রকোনা রোডে যুব তৃণমূলের ফুটবল প্রতিযোগিতা। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গীতা পাঠ বনাম ফুটবল সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়েছিল। তৃণমূল তখন দাবি করেছিল, বিজেপি সভাপতি অপমান করেছেন স্বামী বিবেকানন্দকে। এ বার বিবেকানন্দের জন্মদিবসের আগে ফুটবল খেলাকেই আন্দোলনের হাতিয়ার করল তৃণমূল। রইল বিবেকানন্দের ছবি। উল্লেখযোগ্য ভাবে একসঙ্গে দেখা গেল তৃণমূলের যুযুধান নেতাদের। উল্লেখ্য, বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জেলার নেতাদের ডেকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলার বার্তা দিয়েছেন। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের এই কর্মসূচি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলা রাজনীতিতে।

তৃণমূল সূত্রে খবর, মূলত দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার উদ্যোগেই ব্লকে ফুটবল অথবা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে। চন্দ্রকোনা রোড ব্লকে (গড়বেতা ৩) যুব তৃণমূলের উদ্যোগে ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হল বৃহস্পতিবার। খেলা হচ্ছে চন্দ্রকোনা রোড ফুটবল ময়দানে। ফাইনাল আজ, শুক্রবার। খেলা হলেও এটা যে শুধু খেলা নয়, তা বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের বক্তৃতায়। খেলার মাঠ হলেও সেখানে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়াচ্ছেন তাঁরা। হচ্ছে জনসংযোগও। গরীব মানুষদের ডেকে কম্বল দেওয়া হচ্ছে। এদিন চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের ফুটবল প্রতিযোগিতায় ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি প্রমুখ। সেখানে ওই ব্লকের ৮টি অঞ্চলের ৮টি দল যোগ দিয়েছে। ওই ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি মানস নায়েক বলেন, "৮টি অঞ্চল দলকে দু’টি ভাগে ভাগ করে নক আউট ভিত্তিতে খেলা হচ্ছে, দু'দিনের প্রতিযোগিতার।"

এদিন থেকে গড়বেতা ২ ব্লকের গোয়ালতোড় ১ নম্বর অঞ্চল তৃণমূলের উদ্যোগেও ফুটবল প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেখানে যোগ দিয়েছে ১৬টি দল। গোয়ালতোড় ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি উজ্জ্বল রায় বলেন, "অঞ্চলের ১৬ টি দলকে নিয়ে নক আউট ফুটবল প্রতিযোগিতা হচ্ছে। খেলার আসরে মানুষকে সংগঠিতও করা হচ্ছে।" গড়বেতা ১ ব্লকেও তৃণমূলের উদ্যোগে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে বলে দলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ জানিয়েছেন।

ভোটের আগে দলীয় ব্যানারে ঘটা করে খেলার আয়োজন কেন? তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার দাবি, "এটা একধরনের নীরব প্রতিবাদ। বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদ। ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে খালি পায়ে ফুটবল খেলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বাঙালিরা। এখন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ব্রিটিশদের মতোই আচরণ করছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন। খেলার মাঠেও তার প্রতিফলন ঘটছে।" বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, "তৃণমূল এখন সবেতেই বিজেপির ভূত দেখছে। তাই খেলার মাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবেতেই আমাদের বিরুদ্ধে বলছে। এসবে কাজ হবে না। লোকসভা ভোটে বিজেপির জয় নিশ্চিত।"

খেলার সময়ে ফুটবলারদের উদ্দেশ্যে কোচেরা মাঝে মধ্যেই বলে থাকেন, ‘মাঠ বড়ো করে খেল।’ যার অর্থ, মাঠের মাঝখান দিয়ে না খেলে দুই প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণ তৈরি করো। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলও হয়তো রাজনৈতিক ময়দানের দুই প্রান্ত দিয়ে খেলতে চাইছে।

এক প্রান্তে সরাসরি রাজনীতি, অন্য প্রান্তে জনসংযোগ, খেলা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chandrakona Road

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy