Advertisement
E-Paper

দুই শনিবার ছুটি, পুর-সিদ্ধান্তে বিতর্ক

সম্প্রতি পুর-কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করেছে, প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার পুরসভা ছুটি থাকবে। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘প্রতি মাসের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ শনিবার পুরসভা ছুটি থাকবে। প্রথম এবং তৃতীয় শনিবার সপ্তাহের আর পাঁচদিনের মতো কাজ হবে। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:১১

পুর-পরিষেবার চেহারা ফেরার নাম নেই। অথচ ছুটি বেড়ে গেল মেদিনীপুর পুরসভায়।

সম্প্রতি পুর-কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করেছে, প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার পুরসভা ছুটি থাকবে। মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘প্রতি মাসের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ শনিবার পুরসভা ছুটি থাকবে। প্রথম এবং তৃতীয় শনিবার সপ্তাহের আর পাঁচদিনের মতো কাজ হবে। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

জঞ্জাল, নিকাশি, পানীয় জল— মেদিনীপুরে সমস্যার অন্ত নেই। তার মধ্যে আবার কেন ছুটি বাড়ানো, প্রশ্ন একাংশ শহরবাসী, এমনকী পুরকর্মীরও। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে পুর-কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেননি বলেও অভিযোগ। আর বিরোধীদের বক্তব্য, পুরসভার এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেন খান বলেন, “শহরে প্রায় দু’লক্ষ মানুষের বাস। তাঁদের পরিষেবা সুষ্ঠু ভাবে দিতে আরও কাজ না করে হঠাৎ কেন ছুটির বহর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হল তাই বুঝতে পারছি না। পুরসভা কি ব্যাঙ্ক না অন্য সরকারি দফতর!”

ঘটনা হল, ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার গোড়া থেকেই দিলদরিয়া। ছুটি ঘোষণায় বাম আমলকে ছাপিয়ে গিয়েছে তারা। ২০১০ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত বাম সরকারের শেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০১১ সালে সরকারি কর্মীদের ছুটি ছিল ১৭ দিন। এর সঙ্গে সেকশনাল হলিডে ৪ দিন। সব মিলিয়ে বছরে ২১ দিন ছুটি। চলতি বছরে ৩২ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। আগামী বছরে তাঁদের জন্য বরাদ্দ ৩০ দিন ছুটি। এ বার ছুটির বহর বাড়ানোর দৌড়ে সামিল হল মেদিনীপুর পুরসভাও।

পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁদের যুক্তি, এত দিন শনিবারগুলোয় অর্ধদিবস কাজ হত। অর্থাৎ, দুপুর পর্যন্ত। এখন মাসে দু’টি শনিবার ছুটি থাকছে ঠিকই, তবে অন্য দু’টি শনিবার পুরো কাজ হবে। ফলে, কাজের সময় কমছে না। তাছাড়া, এই সিদ্ধান্তের ফলে পুর-পরিষেবার ঘাটতি হবে না বলেই কর্তৃপক্ষের দাবি। কারণ, জল, আলো, জঞ্জালের মতো জরুরি বিভাগগুলি খোলা থাকবে। শুধু পুরসভার প্রশাসনিক কাজকর্ম হবে না। এখানেও প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। কংগ্রেস কাউন্সিলর সৌমেনবাবুর কথায়, “ছুটি হলে তা সবার জন্যই হওয়া উচিত। সাফাইকর্মী, অন্য জরুরি বিভাগের কর্মীদের কাজ করতে হবে আর শুধু পুরসভার প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানো কর্মীরা ছুটি পাবেন, এটা হতে পারে না।’’

ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছে না পুরকর্মী সংগঠনের একাংশও। মেদিনীপুর মিউনিসিপ্যাল কর্মচারী সংগঠনের সভাপতি শিবু পানিগ্রাহী বলেন, “কিছু বিভাগ খোলা থাকবে। কিছু বিভাগ বন্ধ থাকবে। এটা ঠিক নয়। পুরসভা নতুন করে এই সিদ্ধান্ত না নিলেই পারত।’’ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে জরুরি বিভাগের কর্মীদের মধ্যেও। সুশান্ত বেহেরা, বাবু নিমাইয়ের মতো সাফাই কর্মীদেরর কথায়, “পুরসভার উচিত, সব কর্মীর স্বার্থ দেখা। শুধু কয়েকটি বিভাগের নয়!’’ সাফাই মজদুর ইউনিয়নের নেতা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুরসভার এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। সাফাই শ্রমিকদের নানা দাবি রয়েছে। তাঁরা নানা সমস্যার মধ্যে থেকে কাজ করেন। সেই দিকে নজর নেই। অথচ ছুটি বাড়ানো হচ্ছে।’’ এমনকী নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক কাউন্সিলরও মানছেন, “ছুটি নিয়ে এখন ছোটাছুটি না করলেই হত। অযথা নতুন একটা বিতর্ক সামনে আনা হল।’’

Midnapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy