Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Migrant Workers

৪৮ ঘণ্টা পার, খোঁজ নেই ৩ জনের

হড়পা বানে উত্তরাখণ্ডে  নিখোঁজের সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপরের এই তিন যুবক কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছেন, তার আশ্বাস দিতে পারছেন না লালুদের প্রজেক্ট ম্যানেজার জয় বিজয় সরকার।

দুশ্চিন্তায় সুদীপ গুড়িয়ার পরিজন। নিজস্ব চিত্র।

দুশ্চিন্তায় সুদীপ গুড়িয়ার পরিজন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মহিষাদল শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:৪৫
Share: Save:

মিনিট থেকে ঘণ্টা। ঘণ্টা থেকে দিন। ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে সময়ের কাটা। কিন্তু রবিবারের পরে ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি উত্তরাখণ্ডের হড়পা বানে নিখোঁজ মহিষাদলের তিন যুবকের। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করতে পারেননি পরিজন। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, তাদের তরফে উত্তরাখণ্ড সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

মহিষাদলের লাক্ষ্যা গ্রামের বাসিন্দা লালু জানা, বুলু জানা এবং চক দ্বারিবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ গুড়িয়া উত্তরাখণ্ডের তপোবন এলাকায় ঋষিগঙ্গা নদীর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বছর খানেক ধরে ঠিকাদারির কাজ করছিলেন। গত রবিবার হিমবাহ ভেঙে যখন নদী এবং সংলগ্ন এলাকায় হড়পা বান নেমে এসেছিল, তখন ওই তিনজন প্রকল্পের ভিতরেই কাজ করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে পরিবারের আর কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না।

রবিবার থেকেই ওই দুই পরিবার লাগাতার পুলিশ প্রশাসন, পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। জেলা পুলিশের তরফেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আর দুশ্চিন্তা কমছে কই! প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়-স্বজন একে একে সবাই আসছেন নিখোঁজ লালু, সুদীপদের বাড়িতে। সবার মুখেই উৎকণ্ঠার ছাপ। এসেছিলেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও।

মঙ্গলবার সুদীপের দাদা প্রদীপ গুড়িয়া বলেন, ‘‘কাল রাতে সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এসেছিলেন। গতকাল থেকে অনেকে নেতা আসছেন। কিন্তু কেউ কোনও সুসংবাদ দিতে পারেননি। ভাইয়ের সহকর্মীরা বলছেন যে, এখনও উদ্ধার কাজ শুরু হয়নি। রাজ্য এবং কেন্দ্রের কাছে আমাদের অনুরোধ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উদ্ধার করে আমাদের ছেলেকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হোক।’’

হড়পা বানে উত্তরাখণ্ডে নিখোঁজের সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়েছে। তাঁদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপরের এই তিন যুবক কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছেন, তার আশ্বাস দিতে পারছেন না লালুদের প্রজেক্ট ম্যানেজার জয় বিজয় সরকার। এ দিন তপোবন থেকে তিনি বলেন, ‘‘এখানে ৪ নম্বর গেট বন্ধ করে নদীর গতিমুখ অন্যদিকে করা হয়েছিল। আমাদের সংস্থার ২১ জন কর্মী ধৌলি গঙ্গার শুকনো নদীবক্ষে কাজ করছিল। এখন ওই জায়গায় জলস্তর ১০০ ফুটেরও উপরে। উদ্ধার কাজও শুরু করা যায়নি। বুঝতে পারছি না কী হবে। নিজেকে নিরুপায় লাগছে।’’

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, উত্তরাখণ্ডের প্রশাসনের সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মহিষাদলের ওই তিন যুবকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে মহিষাদলের বিধায়ক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত্রি ৯টা পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনের কাছে মহিষাদলের তিন যুবকের সন্ধানের কোনও খবর আসেনি।’’

বাড়ির ছেলের একটু খবরের আশায় তাই দুই পরিবার আপাতত নাওয়া-খাওয়া ভুলে নজর থাকছে টিভির পর্দায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Migrant Workers Uttarakhand Mahishadal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE