Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাড়িতে না জানিয়েই নাবালিকার বিয়ে, ধৃত পাত্র-সহ ৬

মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও জানতেন না বাবা-মা। বৌভাতের প্রীতিভোজের দিন সব জানতে পারেন তাঁরা। সময় নষ্ট না করে ওই কিশোরীর মা পুলিশের কাছে গিয়ে তাঁদের মেয়ের বিয়ে আটকানোর আর্জি জানান। রবিবার ঘাটালে চন্দননগরে মামা বাড়িতে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
Share: Save:

মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও জানতেন না বাবা-মা। বৌভাতের প্রীতিভোজের দিন সব জানতে পারেন তাঁরা। সময় নষ্ট না করে ওই কিশোরীর মা পুলিশের কাছে গিয়ে তাঁদের মেয়ের বিয়ে আটকানোর আর্জি জানান। রবিবার ঘাটালে চন্দননগরে মামা বাড়িতে গিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে পুলিশ। পাত্র রাজু ঘোষ, পাত্রের মা নমিতা ঘোষ, বছর ষোলোর ওই কিশোরীর দিদিমা চায়না সাঁতরা, দুই মামিমা বীণা ও গায়ত্রী সাঁতরা এবং দাদু তপন সাঁতরাকে গ্রেফতার করা হয়।

আনন্দপুর থানার মধ্যম পিয়াশালা গ্রামের বাসিন্দা ওই নাবালিকা ছোট থেকেই ঘাটালের বীরসিংহ সংলগ্ন চন্দননগরে মামা বাড়িতে থাকত। মামা বাড়িতে থেকেই পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে সে। মাস কয়েক আগেই বাবা-মা ওই কিশোরীকে বাড়ি নিয়ে চলে আসে। তাকে বাড়ির কাছাকাছি একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তিও করে দেওয়া হয়।

দিন কয়েক আগে মেলা দেখতে মামা বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল সে। ওই নাবালিকার মায়ের দাবি, এই সুযোগেই তাঁর মেয়ের সঙ্গে বীরসিংহ গ্রামের বছর তিরিশের রাজু ঘোষের বিয়ে পাকা করে ফেলা হয়। রাজুর আগেও একবার বিয়ে হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “আমার মা-ভাইয়ের বৌ-রা এই ভাবে লুকিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতে পারে তা স্বপ্নেও ভাবিনি।”

পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার চন্দননগরে একটি কালী মন্দিরে ওই কিশোরী বিয়ে হয়। দিনকয়েক আগে এই বীরসিংহ গ্রামেই বিয়ে করতে না চেয়ে থানায় হাজির হয়েছিল এক নাবালিকা। তার রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসনিক কর্তারা। একইসঙ্গে ওই কিশোরীর বাবা-মা পুলিশের কাছে তাঁদের মেয়ের বিয়ে বন্ধ করার আর্জি জানানোয় আশার আলো দেখছে প্রশাসন।

ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান জানান, “দ্রুত ফের বীরসিংহ এলাকায় একটি সচেতনতা শিবির করব। এমনিতেই প্রচার চলছে। আগের থেকে সচেতনতাও অনেক বেড়েছে।” ঘাটালের বিডিও অরিন্দম দাশগুপ্ত বলেন, “লুকিয়ে মন্দিরে ওই নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা অপরাধ।” একই বক্তব্য চাইল্ড লাইনের জেলা কো-অর্ডিনেটর বিশ্বনাথ সামন্তেরও। তবে প্রশ্ন উঠছে, ওই কিশোরী বিয়ের কথা মা-বাবাকে জানাল না কেন? ওই নাবালিকার দাবি, “আমিও বুঝতে পারিনি আমার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে জোর করে একটি লোকের সাথে আমার বিয়ে দেওয়া হয়। খুব অসহায় লাগছিল। কিন্তু কিছু করতে পারিনি।” রবিবার বৌভাতের অনুষ্ঠানের দিন মেয়েটির মা ঘাটাল থানায় অভিযোগ জানান। অভিযোগ পেয়ে অনুষ্ঠানের দিনই পাত্র-সহ ছয় অভিযুক্তকে পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor Marriage Family Arrested Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE