Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ডেঙ্গির লড়াইয়ে ঠুঁটো পুরসভা

জেলায় ডেঙ্গির হানা শুরু হয়েছে মাস দেড়েক আগে। তারপরেও টনক নড়েনি পুরসভাগুলির। পরিণাম, গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি এখন মেদিনীপুর-খড়্গপুর শহরেও থাবা বসিয়েছে মশাবাহিত এই রোগ। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ২৭৮।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৭
Share: Save:

জেলায় ডেঙ্গির হানা শুরু হয়েছে মাস দেড়েক আগে। তারপরেও টনক নড়েনি পুরসভাগুলির। পরিণাম, গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি এখন মেদিনীপুর-খড়্গপুর শহরেও থাবা বসিয়েছে মশাবাহিত এই রোগ। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ২৭৮। এর মধ্যে মেদিনীপুর শহরের ৪১ জন। আর খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৩৬ জন।

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বেলদার তরুণ রাহুল রায় (১৮) সোমবার রাতে মেদিনীপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। জেলার সদর শহরের পুরসভা অবশ্য ডেঙ্গি মোকাবিকাল তৎপর নয় বলেই মেদিনীপুরবাসীর অভিযোগ। শহরবাসীর দাবি, বেহাল নিকাশি, অনিয়মিত আবর্জনা সাফাইয়ের ফলে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। বিভিন্ন এলাকায় জল জমছে। সেখানে জন্মাচ্ছে মশার লার্ভা। শহরের বাসিন্দা তন্ময় বসাক, শম্পা হাজরাদের বক্তব্য, পুরসভার উচিত নিয়মিত নর্দমা পরিষ্কার করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো। কিন্তু তা হচ্ছে না। জমা জল পরিষ্কারের ব্যাপারে পুরসভা এখনও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও মানছেন, সদর শহরে মশার উপদ্রব বাড়ছে। নিয়মিত আবর্জনা পরিস্কার না হওয়ার জন্যই এই সমস্যা। যত্রতত্র আবর্জনা জমছে। বৃষ্টিতে তা ধুয়ে নর্দমায় নামছে। জল জমছে। ফলে, নোংরা জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে।

মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুর যদিও দাবি, ‘‘পুর-এলাকায় ডেঙ্গি ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ শহরের পুর-পারিষদ (জঞ্জাল) শিপ্রা মণ্ডলও বলছেন, ‘‘বিভিন্ন এলাকায় মশা তাড়ানোর জন্য ধোঁয়া ছড়ানো হয়েছে, এখনও হচ্ছে। মশার লার্ভা মারার তেল, মশানাশক রাসায়নিক স্প্রে করার কাজও চলছে।’’ আশ্বস্ত করছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ঠিকই, তবে সকলে চিকিৎসাধীন। অনেকে পুরোপুরি সুস্থও হয়ে গিয়েছেন। উদ্বেগের কিছু নেই।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তার জানালেন, ইতিমধ্যে পুরসভার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কী করণীয় তা
জানানো হয়েছে।

জুলাই মাসের শেষে গড়বেতা-৩ ব্লকের নবকোলায় জ্বরে আক্রান্ত দুই কিশোরীর মৃত্যুর পরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেয় জেলায়। পরে জ্বরে আক্রান্ত ১৮ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়। রিপোর্টে দেখা যায়, ১১ জনের রক্তেই ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে। সেই শুরু। এরপর নানা এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। গত মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরোয়। আর এখন তা তিনশো ছুঁইছুঁই। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, মেদিনীপুর-খড়্গপুর শহর বাদেও গড়বেতা-৩, সবং, নারায়ণগড়, কেশপুর, শালবনি প্রভৃতি এলাকায় ডেঙ্গির প্রভাব রয়েছে।

কবে এই রোগ বাগে আসে, সেটাই দেখার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality ineffective dengue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE