প্রতিবাদ: আরপিএফের শাস্তির দাবিতে খড়্গপুরে মিছিল। নিজস্ব চিত্র
শেষ পর্যন্ত মৌন রইল না মৌনী মিছিল।
অভিযুক্ত আরপিএফ জওয়ানদের শাস্তির দাবিতে উঠল স্লোগান। মোমবাতি হাতে নিয়েই মৃত দেবদাস কুণ্ডুর (২৮) বন্ধু, পড়শিরা চিৎকার করে বললেন, ‘‘ইউ ওয়ান্ট জাস্টিস।’’ মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুরে ডিআরএম অফিসের সামনে দেবদাসের মৃতদেহ নিয়ে তখন স্লোগান উঠছে অবিরাম। আরপিএফের এক আধিকারিক বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন। তিনি সঠিক তদন্তের আশ্বাস দিলেও বিরত হননি বিক্ষোভকারীরা। মৃতের পড়শি সৌরভ দত্তের কথায়, ‘‘দেহ পুড়িয়ে দিলে আর কেউ কিছু করবে না। এখনই শাস্তির ঘোষণা করতে হবে।’’ মিছিলে ছিলেন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, নির্মল ঘোষ, দেবাশিস চৌধুরী (মুনমুন)-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। এমনকী, দেখা গিয়েছে দু’একজন বিজেপি নেতাকেও (মিছিলে অবশ্য কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল না)। আরপিএফের আশ্বাসে তৃণমূল নেতারা আশ্বস্ত হতেই মেজাজ হারান দেবদাসের কাকা সন্দীপ কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘‘লোক হাসাতে আসিনি। আমি কাউকে চিনি না। শাস্তি না হলে ফিরব না।’’
দেবদাসের বাবা শান্তি গিয়েছিলেন দেহ আনতে। এ দিন তিনি ফিরে আসেন আগেই। এসএসকেএমে ময়নাতদন্তের পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দেবদাসের দেহ পৌঁছয় খড়্গপুরের শশ্মানকালী মন্দিরের কাছে। সেখানে বা়ড়ি কুণ্ডু পরিবারের। একতলা সাদা রংয়ের বাড়িতে পড়শিদের ভিড়। তাঁদের অনেকেই দেবদাসের মাকে সামলাতে ব্যস্ত ছিলেন। জটলা থেকে মাঝে মাঝে উঠছিল কান্নার রোল। মা কথা বলার অবস্থায় নেই। শান্তি শুধু বলেন, ‘‘আমার ছেলের হত্যাকারী আরপিএফ জওয়ানদের শাস্তি চাই।’’ দেবদাসের পরিজনেরা প্রথমে ঠিক করেছিলেন, দেহ সৎকার করা হবে। কিন্তু পড়শিরা জানান, দোষীদের শাস্তির দাবিতে মৃতদেহ নিয়ে মৌনী মিছিল হবে।
টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যেই শুরু হয় মৌনী মিছিল। মোমবাতি হাতে নিয়ে কৌশল্যা মোড় পর্যন্ত আসার পরই মিছিল থেকে শুরু হয় স্লোগান। মিছিল পুরসভার কাছে পৌঁছনোর পর সেখানে যোগ দেন
রাজনৈতিক নেতারা।
ডিআরএম অফিসের সামনে অবস্থানের সময়, মাঝেমাঝেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পুলিশ। পরে রাত ১০টা নাগাদ সকলের পাশে থাকার আশ্বাস পেয়ে মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টির জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, গত ২৪ জুন ঝা়ড়গ্রাম স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রস্রাব করার দায়ে দেবদাসকে মারধর করেছিল কর্তব্যরত আরপিএফ জওয়ানরা। গত রবিবার এসএসকেএমে মৃত্যু হয় দেবদাসের। জিআরপি থানায় অভিযোগ করে পরিবার। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy