তাদের জন্য সবকিছুই বরাদ্দ ছিল— পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র। তবে শেষ মুহূর্তে উচ্চ মাধ্যমিকে গরহাজির থাকল একাংশ ছাত্রছাত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই সংখ্যাটা ৩৯২, জানিয়েছে সংসদের এক সূত্র। ওই সূত্রে খবর, শেষবেলায় অনুপস্থিতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রী। এই জেলায় গরহাজির ৩৯২ জনের মধ্যে ছাত্র ৬৮জন, আর ছাত্রী ৩২৪জন, শতাংশের নিরিখে যা ৮২.৬৫%।
এই পরিসংখ্যানে উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। শিক্ষা মহলের অনেকেই মানছেন, ওই ছাত্রছাত্রীর বেশিরভাগই স্কুলছুট হয়ে গিয়েছে। স্কুলছুট ছাত্রীদের অনেকের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মনিটরিং কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রামজীবন মান্ডি মানছেন, ‘‘বসার কথা থাকলেও, জেলার তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বসেনি। অনুপস্থিতদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি।’’ তিন জানান, ‘‘গরহাজিরার কারণ অনুসন্ধান করা হবে।’’
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক। গত বার অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৪০,৯৪৪। ২০২৩ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০,২০৪। সেখানে এ বার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটাই কমে হয়েছে ২৭,৯৪০। এর মধ্যে ছাত্র ১২,৯০৯, ছাত্রী ১৫,০৩১। অর্থাৎ, গতবারের চেয়ে এ বার পরীক্ষার্থী কমেছে ১৩,০০৪জন। ছাত্র কমেছে ৫,২৯৮জন, ছাত্রী কমেছে ৭,৭০৬। এটাও উদ্বেগের। খড়্গপুর গ্রামীণের মেউদিপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রলয়কান্তি সাঁতরা মানছেন, ‘‘কিছু সমস্যা রয়েছে। সে কারণেই কেউ কেউ মাঝপথে স্কুল ছাড়ছে।’’
জেলায় বাল্যবিবাহের সমস্যা রয়েছে। সোমবারই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মেদিনীপুরে এসেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বপন সরেন। তিনিও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমার জেলায় অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা বাড়বে কেন?’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর অবশ্য দাবি, ‘‘জেলায় অন্তঃস্বত্ত্বা নাবালিকার হারটা এক সময়ে ৩০ শতাংশ ছিল। এখন তা ১৬ শতাংশে নেমেছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)