প্রতীকী ছবি।
একলব্য স্কুলের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জনাকয়েক ছাত্রীকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলেছিলেন একাংশ অভিভাবক। এ নিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরের এই আবাসিক স্কুল চত্বরে গত কয়েক দিন ধরে ক্ষোভ-বিক্ষোভও চলেছে। অথচ এক অভিভাবকই এ বার পুলিশে লিখিত ভাবে জানালেন, তাঁর মেয়ে-সহ কয়েকজন ছাত্রীকে হেনস্থা করার অভিযোগ ঠিক নয়।
বুধবার ওই অভিভাবক পুলিশকে জানিয়েছেন, গত ২৫ জুলাই তাঁর মেয়ে-সহ কয়েকজন ছাত্রী স্কুল চত্বর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। পরে তারা ফিরেও আসে। কিন্তু ওই ছাত্রীদের হেনস্থার ঘটনা ঘটেনি। অথচ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন এলাকায় এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রীদের নামে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে ওই অভিভাবকের অভিযোগ। ফোনে আনন্দবাজারকেও তিনি বলেন, “মেয়ের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এ রকম ঘটনাই ঘটেনি।” একলব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী অভিভাবকদের অবশ্য দাবি, হেনস্থার ঘটনা সত্যি। ঝাড়গ্রাম একলব্য কর্তৃপক্ষের মতে, অনিয়মে দাঁড়ি টেনে স্কুলের মানোন্নয়নের ফলে যাদের স্বার্থে ঘা পড়েছে, তারাই স্কুলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে ইন্ধন জোগাচ্ছে। অন্তর্ঘাতের আভাস পাচ্ছে প্রশাসনও। তদন্তকারীদের ধারণা, পুরনো ছকে জঙ্গলমহলকে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০০৮ সালে পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রেক্ষিতেই উত্তাল হয়েছিল জঙ্গলমহল। তার পর তিন বছর খুন-সন্ত্রাস-নাশকতার সাক্ষী থেকেছে গোটা এলাকা। একলব্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার সাঁটিয়ে, প্রচারপত্র ছড়িয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভাবে জনমত তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছে প্রশাসন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৬ সদস্যের কমিটি গড়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে খোঁজ নিয়েছেন। সুষ্ঠু ভাবে চলা এই স্কুল সম্পর্কে কেন হঠাৎ এমন গুরুতর অভিযোগ উঠল, তা নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা শাখাও বিশেষ ভাবে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
কয়েকটি বিষয় ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রথমত, একলব্য স্কুলের টিচার ইন-চার্জকে কেন অভিযোগ জানায়নি ছাত্রীরা। দ্বিতীয়ত, কিছু অভিভাবকের অভিযোগ, স্কুলের দু’জন শিক্ষকের খারাপ আচরণে ছাত্রীরা পাঁচিল টপকে বেরিয়ে গিয়েছিল। অথচ সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অসঙ্গতি মেলেনি। রাজ্য আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, “সার্বিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” প্রশাসন আরও জানিয়েছে, ঝাড়গ্রামের যে সব যুবক সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy