সূর্যকান্ত অট্ট ও মিহির চন্দের মাঝে লক্ষ্মী শীট। নিজস্ব চিত্র
বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে ফের সরগরম নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর। ওই অঞ্চলে তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্বে ফের আনা হল লক্ষ্মী শীটকে।
২০১৮ সালের ২৩ অগস্ট মকরামপুর অঞ্চলের দলীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরণে তিনজন তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তখন ওই অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন লক্ষ্মী। তাঁর বিরুদ্ধেই বোমা মজুতের অভিযোগ উঠেছিল। আরও অনেকের নাম জড়ায় সেই ঘটনায়। যার সুরাহা এখনও হয়নি। বিস্ফোরণের পরে লক্ষ্মীকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্বে আনা হয় নাকফুড়ি মুর্মুকে। লক্ষ্মীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। যদিও তা ছিল অন্য একটি মামলায়। ফের তাঁকেই ওই অঞ্চলের সভাপতি পদে ফিরিয়ে আনল তৃণমূল। রবিবার সন্ধ্যায় বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলে অঞ্চল সভাপতি বদলের ঘোষণা করেন ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ ও জেলা সহ সভাপতি সূর্যকান্ত অট্ট। মিহির বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে মকরামপুর অঞ্চলে ভাল ফলের জন্য এলাকার মানুষের মতামতের ভিত্তিতেই পুনরায় লক্ষ্মী শীটকে দায়িত্ব দেওয়া হল।’’
তবে এরপরে মকরামপুরে নতুন করে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। সদ্য প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি নাকফুড়ি মুর্মু সরাসরিই বলছেন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে মকরামপুর দলীয় কার্যালয়ে বিস্ফোরণ ও তার ফলে তিনজন কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ আছে তাকে মানা অসম্ভব। একসঙ্গে কাজ করার কোনও প্রশ্ন নেই।’’ এই বদলের বিষয়ে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি বলেও দাবি করেছেন নাকফুড়ি। ওই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল সুদীপ্ত ঘোষ, বিমল চৌধুরী, বিকাশ ভুঁইয়ার। এই খবরে তাঁরাও ক্ষুব্ধ। সুদীপ্তের বাবা মনোরঞ্জনের ক্ষোভ, ‘‘বিচার পেলাম না। সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বৌমা দিন কাটাচ্ছে। চাকরি দেবে বলেও কথা রাখেনি দল।’’ বিকাশের স্ত্রী মৌসুমী বলেন, ‘‘জানি না কারা কী করছেন ! তবে আমরা কোনও বিচার পেলাম না।’’
বিতর্ক হবে জেনেও এই রদবদল কেন? তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, মকরামপুর অঞ্চলে ভোটে লক্ষ্মীলাভের জন্যই ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সূর্যকান্ত অট্টের অনুগামী বলে পরিচিত লক্ষ্মীকে। রবিবার রদবদলের কথা জানাতে গিয়ে সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘যে কোনও ভোটের নিরিখে মকরামপুর অঞ্চলে দলের সবচেয়ে ভাল ফল লক্ষ্মী অঞ্চল সভাপতি থাকার সময়েই হয়েছিল। পরে কোনও একটা কারণে দল তাকে সরিয়ে দেয়। এরপরে আমরা লোকসভাতে খারাপ ফল করেছি। তাই দলের কর্মী ও এলাকার মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হল।’’ লক্ষ্মী নিজে বলছেন, ‘‘দল ভোটের মুখে বিবেচনা করেছে তাই দায়িত্ব দিয়েছে। দলের হয়ে কাজ করে যাব।’’
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনি দীর্ঘদিন দলের কাজ করছিলেন না। তাই নেতৃত্ব বদলের কথা বলা হয়েছে। তবে কাকে করা হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy