দলের নতুনদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার জন্য আগেই পুরনো কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। তারপরেও একাধিকবার নতুন-পুরনো বিবাদে অস্বস্তিতে পড়েছেন নেতারা। এ বার তৃণমূলে নবাগত কর্মীদের সম্মান দেওয়ার জন্য দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানালেন সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া।
বুধবার সবং ব্লক অফিস সংলগ্ন বাজারে এক সম্প্রীতি সভার আয়োজন করে তৃণমূল। গত ৫ নভেম্বর ওই সভা হওয়ার কথা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ, জেলা নেতা অমূল্য মাইতি প্রমুখ। সাংসদ দেবের আসার কথা থাকলে মঙ্গলবার জানানো হয়, তিনি আসতে পারছেন না।
সম্প্রতি মানসবাবু-সহ একঝাঁক কংগ্রেস নেতা-কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এরপর থেকেই দলে নতুন-পুরনো কর্মীদের বিভেদ কমাতে তৎপর হয়েছেন নেতৃত্ব। যদিও তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। গত সোমবার সবংয়ের দেভোগ ও ভিকনি বাটিটাকি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের পুরনো ও নতুন কর্মীদের কোন্দলে ভেস্তে যায় গ্রাম সংসদ সভা। তারপরে আরও বিড়ম্বনায় পড়েন শাসকদলের নেতারা। বুধবারের সভায় মানসবাবুর গলায় শোনা গেল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার বার্তা। মানসবাবু বলেন, ‘‘নতুন পুরনো বিতর্ক দূরে সরিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুন। যাঁদের গায়ে নতুনের গন্ধ রয়েছে তাঁদের অসম্মান করবেন না। মঞ্চে যে নেতারা রয়েছেন তাঁরাও এই বার্তা পৌঁছে দিন। একটি সমন্বয় কমিটি গড়ুন।”
মানসবাবুর কথায়, ‘‘প্রতিহিংসার সঙ্গে উন্নয়নের প্রতিযোগিতা হোক। আমি দু’মাস চার দিন আগে দলে এসেছি। অন্যরা তিনমাস চার দিন আগে দলে এসেছে। তাঁদের গ্রহণ করুন। বিভেদের পাঁচিল রাখবেন না। কাল থেকে যেন কেউ নিজেকে অপমানিত না ভাবেন।” জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “নতুন-পুরনো বিভেদ রাখা যাবে না। সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আগামী দিনে নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে জয়ী করতে সকলকে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আমি খুব দ্রুত সমন্বয় কমিটি গঠন করব।”
একইভাবে, জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মলবাবুও বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে যাঁর সঙ্গে লড়াই করেছিলাম সেই মানসবাবু আমাদের দলে আসায় আমি খুশি। নতুন-পুরনোদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।” এ দিনের সভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরনো ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণারও সমালোচনা করেছেন মানসবাবু। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি নোট বাতিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। আজ দু’শোজন সাংসদ দিল্লিতে ধর্নায় বসেছেন। সকলকে ধন্যবাদ।”