Advertisement
E-Paper

নামেই সুপার স্পেশ্যালিটি, পরিষেবা তিমিরেই

নামেই সুপার স্পেশ্যালিটি। বাস্তবে অন্তর্বিভাগে পরিষেবা দেবেন সেই গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরাই।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৭:১৪

নামেই সুপার স্পেশ্যালিটি। বাস্তবে অন্তর্বিভাগে পরিষেবা দেবেন সেই গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরাই।

জঙ্গলমহলের গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম ব্লকের দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে অন্তর্বিভাগ চালু হচ্ছে। অথচ পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নেই। ফলে, সংশয় দেখা দিয়েছে খোদ চিকিৎসক মহলে।

কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলি। আরও কয়েক কোটি টাকা খরচ করে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হয়েছে। অথচ ঝাঁ-চকচকে বাতানুকুল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালগুলিতে আগামী দিনেও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা মেলার ইঙ্গিত দিতে পারছেন না স্বাস্থ্যকর্তারাই। কারণ, দু’টি হাসপাতালেই এখনও কোনও শল্য চিকিৎসক নিয়োগ করা যায়নি। নেই কোনও কোনও টেকনিশিয়ান। ফলে অন্তর্বিভাগে ছোটখাটো অসুখের চিকিৎসা ছাড়া গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত থাকছে না। সুপার স্পেশ্যালিটির জন্য সদ্য কয়েকজন চিকিৎসক যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে বিশেষজ্ঞও হাতে গোনা। নেই পর্যাপ্ত নার্স। ফলে, কীভাবে পরিষেবা দেওয়া যাবে তা নিয়ে ধন্দে পড়ে গিয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

গত বছর নভেম্বরে নয়াগ্রাম ব্লকের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। চলতি বছরের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হয় গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনটির। উদ্বোধনের পরে দু’টি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালের আউটডোর স্থানান্তরিত করা হয় দু’টি ব্লকের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ভবনে। স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দৈনিক মোটা অঙ্কের সাম্মানিকের ভিত্তিতে মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসে সোম থেকে শনি পর্যায়ক্রমে আউটডোরে বসেন। সুপার স্পেশ্যালিটি ভবন উদ্বোধনের পাঁচ মাস পরেও দু’টি হাসপাতালেই অন্তর্বিভাগ চালু না হওয়ায় সম্প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই তড়িঘড়ি মঙ্গলবার ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের চেয়ারপার্সন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য গোপীবল্লভপুর ও নয়াগ্রাম ব্লকের দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। এ মাসের মধ্যে দু’টিতেই অন্তর্বিভাগ চালু করার নির্দেশ দেন চন্দ্রিমা। সুপার স্পেশ্যালিটি ভবনগুলিতে ৩০০ টি করে শয্যা রয়েছে। তবে চিকিৎসক ও নার্সের অভাবে দু’টি হাসপাতালেই মাত্র ১০০টি করে শয্যা চালু করা হবে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, তিরিশ শয্যা বিশিষ্ট ওই দু’টি গ্রামীণ হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ গুলি বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরিবর্তে দু’টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ১০০টি করে শয্যা-সহ অন্তর্বিভাগ চালু করার প্রস্তুতি চলেছে। গ্রামীণ হাসপাতাল গুলিতে ব্লক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশাসনিক কাজকর্ম, টীকাকরণ ও মহিলাদের প্রাক প্রসব কালীন রুটিন চেকআপ করা হবে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গোপীবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। এ ছাড়া সুপার স্পেশ্যালিটির অন্তর্বিভাগের জন্য আরও ১২ জন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (ইএনটি, চক্ষু ও প্যাথোলজিস্ট) রয়েছেন। মোট ১৬ জন চিকিৎসক দিয়ে অন্তর্বিভাগটি চালানো হবে। গোপীবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৬ জন নার্স এবং সুপার স্পেশ্যালিটির জন্য নবনিযুক্ত আরও ৮ জন নার্স অন্তর্বিভাগে পরিষেবা দেবেন।

নয়াগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে একজন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ও একজন অ্যানাস্থেটিস্ট-সহ ৫ জন চিকিৎসক আছেন। নয়াগ্রাম ব্লক সুপার স্পেশ্যালিটির অন্তর্বিভাগের জন্য নতুন ৮ জন চিকিৎসক এসেছেন। নতুনদের মধ্যে ৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (ইএনটি, শিশু, চক্ষু, প্যাথোলজি)। নয়াগ্রামে ১৭ জন নার্সের মধ্যে ৮ জন গ্রামীণ হাসপাতালের। বাকিরা নতুন। কম সংখ্যক নার্স ও গুরুত্বপূর্ণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া কীভাবে অন্তর্বিভাগ চলবে সেই প্রশ্ন উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ঝাড়গ্রামের সিএমওএইচ অশ্বিনীকুমার মাঝি অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বলেন, “বহু মানুষ উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। সে বিষয়ে আলোকপাত না-করে আপনারা শুধু সমালোচনা ও নেগেটিভ প্রচার করে চলেছেন।”

Hospital Doctors
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy