Advertisement
০৭ মে ২০২৪

সুয়োরানি বোগদা, হাল ফেরেনি অন্য প্রান্তের

গুরুত্বের বিচারে রেলের ‘এ ওয়ান’ স্টেশনের স্বীকৃতি মিলেছে। ঢেলে সাজা হয়েছে পরিকাঠামো। তারপরেও খড়্গপুর স্টেশনের দু’প্রান্তে দুই ছবি। এক প্রান্তের পরিকাঠামো বেশ উন্নত হলেও অন্য প্রান্তে প্রবেশপথ দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন।

তিমিরেই বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া টিকিট কাউন্টার। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

তিমিরেই বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া টিকিট কাউন্টার। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share: Save:

গুরুত্বের বিচারে রেলের ‘এ ওয়ান’ স্টেশনের স্বীকৃতি মিলেছে। ঢেলে সাজা হয়েছে পরিকাঠামো। তারপরেও খড়্গপুর স্টেশনের দু’প্রান্তে দুই ছবি। এক প্রান্তের পরিকাঠামো বেশ উন্নত হলেও অন্য প্রান্তে প্রবেশপথ দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন।

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা রূপসী দাস ছেলে প্রতীকের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার শেষে খড়্গপুরে বাপেরবাড়িতে এসেছিলেন। ফেরার দিন ওই গৃহবধূ রিকশায় খড়্গপুর স্টেশনের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারে পৌঁছে শ্রীরামপুরের টিকিট কাটলেন। তারপর কোন প্ল্যাটফর্মে ট্রেন আসবে জানতে তৎপর হলেন। কিন্তু বহু খুঁজেও নজরে এল না ‘ট্রেন ইন্ডিকেশন ডিসপ্লে বোর্ড’ (টিআইডি)। অনুসন্ধান কেন্দ্রও অমিল। অবস্থা দেখে স্থানীয় একজন বললেন, “দিদি এখানে দাঁড়িয়ে লাভ নেই। সিঁড়ি ভেঙে উঠে যান। তারপর ডিসপ্লে বোর্ড পাবেন।’’ রূপসীদেবী বলছিলেন, “খড়্গপুরের মতো এত বড় জংশন স্টেশনের এই প্রান্ত এখনও পিছিয়ে। এ দিকের যাত্রীরাও তো একই ভাড়া দিয়ে ট্রেনে ওঠেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

ব্রিটিশ আমলে বেঙ্গল নাগপুর রেলের অধীনে গড়ে উঠেছিল খড়্গপুর স্টেশন। এই স্টেশনে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এসকালেটর, লিফট, সাবওয়ে, এলইডি ডিসপ্লে, সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াই ফাই— সবই চালু হয়েছে। অবশ্য এ সবই গড়ে উঠেছে বোগদায় ডিআরএম অফিস সংলগ্ন স্টেশন চত্বরে। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া মালগুদাম এলাকায় স্টেশনের অন্য প্রান্ত এখনও আঁধারেই। সেখানে টিকিট কাউন্টার থেকে বেরিয়ে রাস্তা পেরিয়ে ফুটব্রিজ হয়ে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতে হয়। দীর্ঘ দাবি সত্ত্বেও সাবওয়ে হয়নি। এই অংশের টিকিট কাউন্টারে টিআইডি বোর্ড, অনুসন্ধান কেন্দ্র পর্যন্ত নেই। একমাত্র লিফট-ও অধিকাংশ সময় অকেজো হয়ে থাকে। এমনকী এই অংশে রেল সুরক্ষা বাহিনীর দেখা মেলাও ভার।

খড়্গপুর স্টেশন দিয়ে দিনে গড়ে ২১ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। রোজ গড়ে টিকিট বিক্রি হয় ১৬ লক্ষ টাকার। এর একটা বড় অংশ আসে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন টিকিট কাউন্টার থেকেই। কারণ, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাসে স্টেশনে আসা যাত্রীদের অধিকাংশ এই পথে স্টেশন ঢোকেন। তাছাড়া শহরের উত্তর দিকের বাসিন্দারাও এই টিকিট কাউন্টারের উপরে নির্ভরশীল। টাটানগরের যাত্রী সুমন পাণ্ডের কথায়, “খড়্গপুরের গোলবাজারে প্রায়ই ব্যবসার কাজে আসি। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্টেশনের এই অংশের হাল আর ফেরে না।’’ খড়্গপুরের বাসিন্দা সৌমেন দাস আবার বলেন, “বোগদার দিকেই তো রেলের ডিআরএম অফিস। রেলের কর্তারা এই পথে যাতায়াত করেন। তাই সব সুবিধা ওঁদের জন্য।’’

সত্যিই কি তাই?

সদুত্তর এড়িয়ে রেলের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “এটা ঠিক বাসস্ট্যান্ডের দিকটা উন্নয়নে একটু পিছিয়ে রয়েছে। তবে এটাও মানতে হবে ওই অংশের তুলনায় বোগদার দিকে টিকিট বিক্রি বেশি। তবে আমরা ইতিমধ্যে স্টেশনের আরও উন্নয়নের প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তা অনুমোদন হয়ে টাকা এলে বাসস্ট্যান্ডের দিকেও উন্নয়নে নজর দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ticket Counter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE