নতুন পার্কের উদ্বোধন। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র।
আদালতের ভরা এজলাসে চলছে সওয়াল জবাব। তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মইনুদ্দিন সাহেব বাদী-বিবাদী পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল জবাব শুনছেন। এমন সময় হঠাত্ শুরু হল দৌড়োদৌড়ি। সঙ্গে চিত্কার। আদালতের মতো নিস্তব্ধ জায়গায় হঠাত্ এমন চিত্কার চেঁচামেচি, দৌড় ঝাঁপ কেন? বিস্মিত বিচারক প্রশ্ন করবেন কী? সামনে তাকিয়ে নিজেই তো হতবাক। এজলাসে তখন ফনা তুলে দাঁড়িয়ে এক বিশাল খরিস। এ দৃশ্য দেখে কে আর চুপ থাকতে পারে। তখন কী আর আদালত বলে কারও খেয়াল থাকার কথা। বন্ধ রাখা হয় শুনানি। সকলের চিত্কার চেঁচামেচিতে কিছুক্ষণ পর অবশ্য খরিসও রণে ভঙ্গ দেয়। ধীরে ধীরে ফের ঢুকে যায় আদালত লাগোয়া জঙ্গলে।
তারপরই আদালতের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়, যাতে তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাস লাগোয়া জঙ্গল পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। পরিবর্তে তৈরি করা হোক একটি পার্ক। মেদিনীপুর খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে একটি পার্ক তৈরি করে। ২০১৪ সালেই পার্ক তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায়। যদিও এক বছর পর পার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল সোমবার। এ দিন পার্কের উদ্বোধন করেন পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মীনা, জেলা ও দায়রা বিচারক আশুতোষ কর-সহ আদালতের অন্য বিচারক ও আইনজীবীরা। উদ্বোধন করতে এত দেরি হল কেন? মৃগেনবাবু বলেন, “আগের জেলা ও দায়রা বিচারক আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অনুমতি দেননি। তাই দেরি হল।”
এ দিনই পার্কের চাবি তুলে দেওয়া হয় বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবীদাস মহাপাত্রের হাতে। পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে বিবেকানন্দের নামে। পার্কের মধ্যে রয়েছে বিবেকানন্দের মূর্তিও। পর্ষদের চেয়ারম্যান পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বার অ্যাসোসিয়েশনকে দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন জানান। বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দেবীদাস মহাপাত্র আদালত চত্বরের অন্যান্য জায়গার জঙ্গল পরিষ্কার করারও আবেদন জানান।
এ দিন পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে এক শিবিরের আয়োজন হয়। উদ্যোক্তা জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্র। শিবিরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা ও দায়রা বিচারক আশুতোষ কর বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সব সময় পরিবেশকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।” এক্ষেত্রে প্রত্যেকের ভূমিকাই জরুরি বলেই মনে করিয়ে দেন তিনি। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কৌঁসুলি রাজকুমার দাস, সুকুমার পড়িয়া, মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রণব বসু-সহ আদালতের আইনজীবীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy