সিনেমা নিয়ে আলোচনার তেমন সুযোগ থাকে না মেদিনীপুরের মতো মফস্সলে। এ বার শীতে সেই সুযোগই আসতে চলেছে।
চলতি মাসের শেষের দিকে মেদিনীপুরে এই সিনেমা কনফারেন্স হওয়ার কথা। পশ্চিম মেদিনীপুরের তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদারের কথায়, “মেদিনীপুরে সিনেমা কনফারেন্স হবে। ইতিমধ্যে এর প্রস্তুতিপর্বও শুরু হয়েছে।’’
কলকাতার মতো মেদিনীপুরেও সরকারি উদ্যোগে হবে সিনেমা কনফারেন্স। সিনেমা কনফারেন্সের উদ্যোক্তা তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত ‘রূপকলা কেন্দ্র’। ইতিমধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জেলায় নির্মিত তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিও প্রদর্শিত হবে। এর ফলে জেলার চলচ্চিত্র নির্মাতারা উত্সাহিত হবেন বলেই আশা। কারণ, জেলায় তৈরি তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি প্রদর্শনের তেমন সুযোগ মেলে না।
প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, প্রদর্শনীর জন্য বিভিন্ন সরকারি দফতর, ফিল্ম সোসাইটি, তথ্যচিত্র- কাহিনিচিত্র নির্মাতা প্রমুখদের কাছ থেকে তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি আহ্বান করা হয়েছিল। সিডি- ডিভিডি জমা দিতে বলা হয়েছিল। সেই মতো বেশ কয়েকটি সিডি-ডিভিডি জমা পড়েছে। জেলা থেকে প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে তা রূপকলা কেন্দ্রে পাঠানো হবে। প্রদর্শনীর জন্য চূড়ান্ত বাছাই রূপকলা কেন্দ্রই করবে। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক আধিকারিক মানছেন, “যারা উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের ছবি অবাণিজ্যিক ভাবে প্রদর্শনের জন্য এই দফতরকে দিতে আগ্রহী, তাদের কাছে সিডি-ডিভিডি আহ্বান করা হয়েছিল। জেলা থেকে নির্বাচিত সিনেমাগুলো রূপকলা কেন্দ্র বাছাই করে জেলায় প্রদর্শনের জন্য পাঠিয়ে দেবে।”
এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছে মেদিনীপুর ফিল্ম সোসাইটিও। সোসাইটির অন্যতম কর্তা সিদ্ধার্থ সাঁতরা বলছিলেন, “এখন মেদিনীপুরের মতো মফস্সলেও অনেকে সিনেমা নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তথ্যচিত্র তৈরি করছেন, স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি বানাচ্ছেন। ইতিউতি সেই সবের প্রদর্শনও হচ্ছে। তবে সেই ভাবে বড় প্ল্যাটফর্ম মেলে না। সরকারি এই উদ্যোগের মঞ্চ একটা বড় প্ল্যাটফর্মই। নিশ্চিত ভাবেই এমন প্ল্যাটফর্ম পেলে জেলার নির্মাতারা উৎসাহিত হবেন।”
মেদিনীপুরে আয়োজিত এই সিনেমা কনফারেন্সে ফিল্ম সোসাইটির কর্মকর্তাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে প্রশাসনের এক সূত্রে খবর। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “সিনেমা কনফারেন্সের এই আয়োজন তো সিনেমার প্রচার, প্রসারের জন্যই।’’
মেদিনীপুরের মতো শহরে এক সময় সিনেমা নিয়ে কম হইচই হত না। শহরে তিন-তিনটি সিনেমা হল ছিল। গোটা ছয়েক ভিডিও হল ছিল। সপ্তাহের শেষের দিকে হলগুলোয় ভালই ভিড় হত। মাঝেমধ্যে হাউসফুল বোর্ড ঝুলত। শহরের হলে এক সময় রমরমিয়েই চলেছে একের পর এক সিনেমা। অনেকের কাছে এখন সেই সব নস্টালজিয়া। মেদিনীপুরে এখন সবেধন একটি মাত্র সিনেমা হল। মেদিনীপুর ফিল্ম সোসাইটির অন্যতম কর্তা সিদ্ধার্থবাবুর মতে, “তখনকার শহর আর এখনকার শহরের ফারাক অনেক। অনেক কিছু বদলে গিয়েছে।” তবে তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘বসন্ত বিলাপ’ সিনেমার কিছুটা শ্যুটিং এই শহরে হয়েছিল।
সিনেমার এই মরা গাঙে জোয়ার আনতে কনফারেন্স সহায়ক হবে বলে আশা। ফিল্ম সোসাইটির এক কর্তার কথায়, “সরকারি এই উদ্যোগ সময়োপযোগী। আশা করি, এই সিনেমা কনফারেন্স মেদিনীপুরের কাছে অন্য রকম প্রাপ্তি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy