Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
flower

Flower Garden: ফুলপ্রেমীদের অতি উৎসাহে তছনছ বাগান

পাঁশকুড়ার ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার দোকান্ডায় ফুলবাগিচার টানে ফি বছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস, পর্যটকদের ঢল নামে। সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে।

ফুলের বাগানে নেমেই ছবি তোলার হিড়িক। নিজস্ব চিত্র

ফুলের বাগানে নেমেই ছবি তোলার হিড়িক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দোকান্ডা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:২৪
Share: Save:

ফুলের টানে রবিবার রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকের ভিড় দেখল দোকান্ডা। সেই সঙ্গে সাক্ষী থাকল পর্যটকদের অতি উৎসাহের ফলে পানের পিকের চিহ্ন থেকে প্লাস্টিক আর পানমশলার প্যাকেট, মোবাইলে নিজস্বী তোলার তাগিদে পায়ের চাপে নষ্ট হওয়া ফুলবাগিচার। সড়ক পথে দোকান্ডাগামী গাড়ির ধুলোয় বিপন্ন ভবানীপুর, পশ্চিম কোলা-সহ নদীচরের একাধিক জায়গার ফুলের বাগান। কেন দোকান্ডাকে ঘিরে আজও কোনও সুষ্ঠু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করল না প্রশাসন। তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ক্ষতিগ্রস্ত ফুলচাষিরা।

পাঁশকুড়ার ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার দোকান্ডায় ফুলবাগিচার টানে ফি বছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস, পর্যটকদের ঢল নামে। সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় স্থানীয় প্রশাসনকে। ফুলবাগানের পাশে কংসাবতী নদীর চরে বসে মেলাও।ফুলের পাশাপাশি আনাজ, ফুলের চারা, ফাস্টফুড থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কী মেলে না সেখানে!বাইকের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে ছোট গাড়ি, বাস ভাড়া করে দোকান্ডায় আসে পর্যটকরা। নদীর চরে চলে পিকনিক। ফি বছর দোকান্ডায় পর্যটকের ঢল নামলেও প্রশাসনিক উদ্যোগে সেখানে ন্যূনতম ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতি রবিবার সব থেকে বেশি ভিড় হয় দোকান্ডায়।রাস্তার দু'ধারে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে পড়ে যায় গাড়ির লাইন। অভিযোগ পর্যটকদের একাংশ ফুলের গাছে ও বাগানে পানের পিক ফেলে চলে যায়। প্লাস্টিক ও পানমশলার প্যাকেটে ভরে যায় ফুলবাগিচা, নদীর চর।বিপুল সংখ্যক পর্যটকের পায়ের ধুলোয় ঢাকা পড়ে যায় বাহারি ফুল।

সড়ক পথে পাঁশকুড়া শহর থেকে কংসাবতী নদীর বাঁধের দুই দিকের রাস্তা দিয়ে পৌঁছান যায় দোকান্ডায়।এবার কংসাবতী নদীতে একাধিকবার বন্যা পরস্থিতি তৈরি হওয়ায় বাঁধের রাস্তাগুলি বেহাল হয়ে পড়েছে।দোকান্ডার অদূরে নদী বাঁধের পূর্ব দিকের রাস্তার ধারে ভবানীপুর ও পশ্চিম কোলায় কংসাবতীর চরে ব্যাপক হারে চাষ হয় চন্দ্রমল্লিকা।এলাকাগুলি পাঁশকুড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।এখানকার চন্দ্রমল্লিকা ভিন রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশেও যায়। বেহাল রাস্তার ওপর দিয়ে দোকান্ডাগামী অসংখ্য গাড়ি,মোটর বাইক যাওয়ার সময় ধুলোয় ধেকে যাচ্ছে চন্দ্রমল্লিকার বাগান। ধুলো ভরা ফুলের পাপড়িতে শিশির পড়ে নষ্ট হচ্ছে ফুলের গুণগত মান।

দোকান্ডায় পর্যটক সমাগমের কথা মাথায় রেখে দু'বছর আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সেখান একটি বায়ো-ডাইভার্সিটি পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়। জমি জরিপের কাজও হয়। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ। ফুলচাষিদের অভিযোগ দোকান্ডায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পর্যটক সমাগমের তুলনায় খুবই কম।ফলে এক শ্রেণির বেপরোয়া পর্যটকের দৌরাত্ম্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুলচাষ। ফুলচাষি নিমাই সামন্ত বলেন, ‘‘রবিবার ২০ হাজারেরও বেশি পর্যটক এসেছিল। বাগানে ঢুকে সেলফি তুলতে গিয়ে অনেক গাছ ভেঙে দিয়েছে তারা।আপত্তি করলেও কেউ শোনে না।’’

লাগাতার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর করোনা কাঁটায় আর্থিক ভাবে বিপর্যস্ত ফুলচাষিরা।তার ওপর পর্যটক দৌরাত্ম্যে নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে দোকান্ডার ফুলচাষিদের। এ বিষয়ে তমলুকের এসডিও শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধানের জন্য বিডিও এবং থানাকে নির্দেশ দেওয়া হবে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আমি নিজে এলাকা পরিদর্শনে যাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

flower midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE