Advertisement
E-Paper

অবস্থা ভাল হচ্ছে, দাবি স্বাস্থ্যকর্তার

কয়েক মাস আগে পাঁশকুড়ার হাউর ও পুরসভা এলাকায় জ্বরে মৃত্যু হয়েছিল দুই মহিলার। কোলাঘাটের বরদাবাড় গ্রামের এক বধূও জ্বরে মারা গিয়েছিলেন। ওই তিন জনের মৃত্যুর পরে সোমবার ফের জ্বরে মৃত্যু হল পাঁশকুড়া পুর এলাকার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০০:০০
অসহায়: বারান্দাতেই ঠাঁই জ্বর আক্রান্তদের। তমলুক হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: বারান্দাতেই ঠাঁই জ্বর আক্রান্তদের। তমলুক হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে। নিজস্ব চিত্র

কয়েক মাস আগে পাঁশকুড়ার হাউর ও পুরসভা এলাকায় জ্বরে মৃত্যু হয়েছিল দুই মহিলার। কোলাঘাটের বরদাবাড় গ্রামের এক বধূও জ্বরে মারা গিয়েছিলেন। ওই তিন জনের মৃত্যুর পরে সোমবার ফের জ্বরে মৃত্যু হল পাঁশকুড়া পুর এলাকার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়ের।

উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, দেগঙ্গায় জ্বরে একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়াতেও পর পর জ্বরে মৃত্যুতে পুর এলাকা ও তার আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পাঁশকুড়া শহরের বাহারগ্রাম এলাকার বসিন্দা রাজেশ কাপুড়িয়া (৪৭) নামে তমলুক জেলা চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার রাতে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ হিসেবে জ্বরের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও শ্বাসকষ্টজনিত অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন। তবে কী ধরনের জ্বরে মৃত্যু হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজেশবাবু গত ২০ অক্টোবর জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথমে স্থানীয় এক চিকিৎসক চিকিৎসা করলেও পরে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার তাঁকে তমলুক জেলা হাসপাতালে আনা হয়। রাজেশের ভাই মনোজ বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে দাদার রক্ত পরীক্ষা করানো হলেও রিপোর্ট আমাদের জানানো হয়নি।।’’

পাঁশকুড়ার ওই এলাকায় আরও কয়েকজন বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, চারপাশে ডেঙ্গি নিয়ে যে ভাবে হইচই হচ্ছে তাতে এখানে জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় আতঙ্কিত সকলেই। কিন্তু পুরসভার তরফে সে ভাবে পদক্ষেপ কোথায়? এলাকায় নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই হয় না। কয়েকদিন আগে পুরসভার তরফে একবার মশা মারার ধোঁয়া স্প্রে করা হয়েছিল। ব্যস ওই পর্যন্তই।’’

শুধু পাঁশকুড়া পুর এলাকা নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকেই জ্বরে আক্রান্তদের ভিড় বাড়ছে তমলুক জেলা হাসপাতালে। মঙ্গলবারই জেলা হাসপাতালে ৫৩ জন জ্বরের রোগী ভর্তি হয়েছেন। পাঁশকুড়ার রাধাবল্লভচক, হরিনারায়ণচক, সাধুয়াপোতা, পূর্ব ও পশ্চিম চিলকা, ঘোলমাগুলি প্রভৃতি গ্রামে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে বলে ওই সব এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। কোলাঘাটের পুলশিটা এবং খেজুরির কালীনগর জ্বরে আক্রান্তরা জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

কালীনগর এলাকার বজবজিয়া গ্রামের রাজেশেখর বর সোমবার রাতে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর বাবা মনোরঞ্জন বর বলেন, ‘‘শনিবার থেকে জ্বর হয়েছিল। কিছুতেই না কমায় এখানে ভর্তি করেছি।’’ রাধাবল্লভচক গ্রামের যুবক নকুল মান্না জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রবিবার থেকে ভর্তি। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকায় অনেকেরই জ্বর হয়েছে। এখানে ভর্তির পর রক্ত পরীক্ষা করা হলেও রিপোর্ট আমাদের জানানো হয়নি।’’

প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে পাঁশকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় হইচই শুরু হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রক্ত পরীক্ষার শিবিরও করা হয়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তা বন্ধ হয়ে যায় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, শিবির চালু রাখলে ও অন্যান্য ব্যবস্থা নিলে জ্বরের প্রকোপ এ ভাবে বাড়ত না।

যদিও এখনই জ্বর নিয়ে এতটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘‘মঙ্গলবার পর্যন্ত তমলুক জেলা হাসপাতাল-সহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ৭২ জন জ্বরের রোগী ভর্তি রয়েছেন। এঁদের মধ্যে ২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত।’’ তিনি জানান, তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঁশকুড়ার যে ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিলেন না। জেলায় জ্বরের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জ্বরে আক্রান্তের হার আগের চেয়ে অনেকটাই কমেছে।

Dengue Fever Patients
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy