Advertisement
E-Paper

জল সামলাবে না চোর, নাজেহাল ঘাটাল

বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে চোরের উপদ্রবে অতি‌ষ্ঠ দুর্গতেরা। তার উপর জল জমে থাকায় থানায় অভিযোগও দায়ের করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গত দু’সপ্তাহে মহকুমায় অন্তত তিরিশ-চল্লিশটি চুরির ঘটনা ঘটেছে।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৭ ০৬:২০
চুরি: ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে ২ নম্বর চাতালে এই তাঁবু থেকেই চুরি হয়েছে গরু। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।

চুরি: ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে ২ নম্বর চাতালে এই তাঁবু থেকেই চুরি হয়েছে গরু। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।

জল সামলাবেন না চোর!

প্লাবিত ঘাটালের সর্বত্র এমন কথাই শোনাচ্ছেন দুর্গতেরা। অভিযোগ, গরু-ছাগল থেকে ঘরের জিনিসপত্র তো বটেই এমনকী বাইক, গাড়ির লুকিং গ্লাসও বেমালুম হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। গাড়ির লুকিং গ্লাস খোওয়া গিয়েছে দাসপুরের এমনই এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘জল বাড়তে পরিবারকে বাঁচাতেই ব্যস্ত ছিলাম। গাড়ি নিয়ে ভাবার সময় ছিল না। তবু ভাল অল্পের উপর দিয়ে গিয়েছে। ভাগ্যিস পুরো গাড়িটা লোপাট করে দেয়নি।’’

বস্তুত, বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে চোরের উপদ্রবে অতি‌ষ্ঠ দুর্গতেরা। তার উপর জল জমে থাকায় থানায় অভিযোগও দায়ের করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, গত দু’সপ্তাহে মহকুমায় অন্তত তিরিশ-চল্লিশটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হলেও মহকুমার একটা বিস্তীর্ণ অংশ এখনও জলের তলায়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দাসপুরে। ঘাটাল ব্লকের দু’টি অঞ্চলের অবস্থাও একই। স্থানীয় মানুষের‌ অভিযোগ, চোরেদের আরও পোয়াবারো হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায়। বহু জায়গা এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। ফলে চোরেদের দাপটে চিন্তায় ওই সব এলাকার মানুষ।

চুরি-ছিনতাই বাড়তে থাকায় উদ্বেগে পুলিশ-প্রশাসনও। বন্যায় বহু ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে ভিটে ছেড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গোয়াল ভেসে বহু গবাদি পশু উঁচু এলাকায় ঠাঁই নিয়েছে। ঘাটাল, দাসপুরের বিভিন্ন রাস্তা এবং নদীর বাঁধ সহ স্কুলের ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন বন্যার্তরা। বাড়িতে জল ঢোকায় ঘাটাল-দাসপুরের উঁচু এলাকায় সার সার দিয়ে দাঁড়িয়ে চারচাকা সহ অন্যান্য যানবাহন। জল কমার পর গাড়ি নিতে এসে অনেকের চোখে কপালে। কোনও গাড়ির লুকিং গ্লাস নেই তো কোনওটার চাকা উধাও। হদিস নেই বহু বাইকেরও। দাসপুরের বাসিন্দা সন্তু চোঙদারের কথায়, “সোনাখালির একটি উঁচু এলাকায় বাইক রেখেছিলাম। দু’দিন পর গিয়ে দেখি বাইক নেই। জল কমলে থানায় অভিযোগ জানাব।” ঘাটালের মনোহরপুরের গৃহবধূ সোনালি খমরুই বলেন, “বাড়ির নীচের তলায় জল ঢুকে গিয়েছিল। সেখানে রাখা একটি খালি গ্যাস সিলিন্ডার ছাদে তোলার সময় হয়নি। গত শুক্রবার জল কমলে নেমে দেখি সিলিন্ডার হাওয়া।”

বন্যার সময় চোরের উপদ্রব নতুন না হলেও এ বার ঘাটালে তা রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করে দিয়েছে। ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে কেন গেলেন এমন আফসোসও শোনা গিয়েছে অনেকের গলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল ব্লকের আজবনগর পঞ্চায়েতের বহু মানুষ শহর সংলগ্ন তিন নম্বর চাতালের উপর ক’দিন ধরেই বাস করছেন। রাস্তার পাশেই বাঁধা রয়েছে গরু-ছাগল। সোমবার রাতে সেখান থেকেই দশটি গরু চুরি হয়ে যায়। মঙ্গলবার ঘটনা জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ দুর্গতেরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। গরুচোরদের ধরতে ঘাটাল থানায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বন্যার ঘাটালে চুরির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “আমরা মৌখিক ভাবে খবর পাচ্ছি। তাই সন্ধ্যা নামলেই নৌকায় টহলদারি শুরু করা হয়েছে।”

Flood Rain Thieves ঘাটাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy