Advertisement
১৭ জুন ২০২৪

ভোটের মাঠেই গড়ায় পানীয়-নিকাশির জল

পুরসভার দাবি, রেলশহর আসলে রেলের জলেই ভাসে। কারণ শহরের কেন্দ্রে রেল এলাকা রয়েছে। সেখানকার জলই চারপাশে থাকা পুর এলাকায় চলে আসে। 

চেনা-ছবি: খড়্গপুরের বিদ্যাসাগরপুর এলাকায় উপচে গিয়েছে নালা।  নিজস্ব চিত্র

চেনা-ছবি: খড়্গপুরের বিদ্যাসাগরপুর এলাকায় উপচে গিয়েছে নালা।  নিজস্ব চিত্র

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

গরম পড়লেই শহরে দেখা যায় জলসঙ্কট। বর্ষায় জেরবার হতে হয় বেহাল নিকাশিতে। এ বার শীতের শুরুতেও জলসঙ্কট ও বেহাল নিকাশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে রেলশহরে। কারণ, সামনেই উপ-নির্বাচন।

খড়্গপুর শহরের ১০ বারের বিধায়ক ছিলেন শহরের ‘চাচা’ প্রয়াত জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। গত বিধানসভা নির্বাচনে চাচাকে হারিয়ে জেতেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তবে পানীয় জল ও নিকাশি সমস্যার পুরো সমাধান হয়নি। এ বারের প্রচারেও জল ও নিকাশি নিয়ে ক্ষোভের কথা উঠে এসেছে। বছর দু’য়েক আগে পুরসভার মাধ্যমে দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। তার পরে সমস্যা কিছুটা মিটলেও সেই প্রকল্প নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, কাজ পুরো শেষ না করেই দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের উদ্বোধন করে দেওয়া হয়েছে। কাঁসাই নদী থেকে জল পুরনো পাইপ লাইন দিয়েই শহরে ঢুকছে। শহরের মধ্যেও পাইপলাইন সংযুক্ত করার কাজ বাকি। যে জল সরবরাহ করা হচ্ছে তার গুণমান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অভিযোগ, গরমকাল ছাড়া বছরের বাকি সময়ে কখনও কালো, কখনও ঘোলা জল বার হয়। তবে শুধু পুরসভা নয়, পানীয় জলের অভাব রয়েছে রেল এলাকাতেও। রেলের বাজার এলাকায় জলকর নেওয়া নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

পুরসভার দাবি, রেলশহর আসলে রেলের জলেই ভাসে। কারণ শহরের কেন্দ্রে রেল এলাকা রয়েছে। সেখানকার জলই চারপাশে থাকা পুর এলাকায় চলে আসে।

বেশিরভাগ শহরবাসীর বক্তব্য, পুরসভা এলাকায় রেলের জল আসে এটা ঠিক। তবে পুর এলাকাতেও সঠিক নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় এই সমস্যা কমছে না। শহরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সুনীল প্রামাণিক বলেন, “দ্বিতীয় জলপ্রকল্পের পরে পর্যাপ্ত জল এলেও তাতে অনেক সময়ে নোংরা থাকছে। নিকাশির হালও খারাপ। যিনিই বিধায়ক হন তাঁর কাছে সুষ্ঠু নিকাশি ও পরিস্রুত পর্যাপ্ত জলের দাবি থাকবে।”

উপ-নির্বাচনের প্রাক্কালে ইস্তাহার প্রকাশ করে আইআইটির সাহায্যে নিয়ে নিকাশি ব্যবস্থার সার্বিক পুনর্গঠনের অঙ্গীকার রয়েছে তৃণমূল। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে টাইম কল দিয়ে পরিস্রুত জল সরবরাহ করা হবে। সেটা দেখে বিরোধীরা পাল্টা বলেছেন, এখন যে জল সরবরাহ হয় সেটা তাহলে পরিস্রুত নয়। তৃণমূলের প্রার্থী তথা শহরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের দাবি বলেন, “নিকাশির জন্য আমরা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করব। শহরে এখন পানীয় জল পর্যাপ্ত। আমরা ওয়াটার ট্রিটমেন্টের জন্য রাজ্যের কাছে ১৩ কোটি টাকা চেয়েছি। দিলীপ ঘোষ তো বিধায়ক হয়ে কোনও উন্নয়ন করেননি। রেল-পুরসভার সমন্বয়ের উদ্যোগও নেননি।’’ বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝার আবার অভিযোগ, ‘‘দু’বছর আগেই ফিরহাদ হাকিম ও প্রদীপ সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসে নিকাশি সমাধানে অমরুট প্রকল্পে টাকা চাইতে বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। পুরপ্রধান হিসাবে প্রদীপ সরকার কেন্দ্রের কাছে সেই আবেদন করেননি।’’

উপ-নির্বাচনও চলে যাবে। আসবে পুর নির্বাচন। তারপরে বিধানসভা। জল নিয়ে টানাটানি কি কমবে রেলশহরে? ভুক্তভোগীরা সেদিকেই তাকিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By Election Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE