Advertisement
১৮ মে ২০২৪

গোর্খাল্যান্ড চায় সালুয়া

সালুয়ার বুদ্ধ মন্দির থেকে শুরু হয়ে ওই মৌনী মিছিল শেষ হয় গোপালির কাছে ‘নো-শ্যুটিং’ জোনে। মিছিলে মহিলা ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ডে বার্তা, ‘গোর্খা অলওয়েজ ফাইট ফর পিস’।

পথে: সালুয়ায় মিছিল গোর্খাদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

পথে: সালুয়ায় মিছিল গোর্খাদের। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০৭:২০
Share: Save:

গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে অশান্ত পাহাড়। এ বার সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ও পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর বার্তা নিয়ে গোর্খারা পথে নামল সমতলে, খড়্গপুর গ্রামীণের সালুয়ায়। পাহাড় থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার।

পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকায় ইস্টার্ন ফ্রন্টেয়ার রাইফেল (ইএফআর)-এর তিনটি ব্যাটালিয়ানের অফিস ও জওয়ানদের আবাসন রয়েছে। সালুয়ার পাঁচটি বুথে প্রায় ১৭ হাজার গোর্খা জনজাতির মানুষ থাকেন। এই বসতি বেশ পুরনো। ইতিহাস বলছে, ১৯৪৭ সালে ঢাকা মিলিটারি পুলিশের (ডিএমপি) একটি অংশকে আনা হয়েছিল খড়্গপুরের হিজলি বা অধুনা আইআইটি এলাকায়। তখনই পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব সীমান্ত রক্ষার জন্য একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়া হয়, যার সব জওয়ান ছিলেন গোর্খা। ১৯৫০ সালে সেই বাহিনীই ইএফআর হিসেবে স্বীকৃত হয়। তবে সালুয়ার সবাই জওয়ানদের পরিবারের লোক নন। কেউ স্থানীয় ভাবে ব্যবসা করেন, কেউ বা রয়েছেন অন্য পেশায়। তাঁদের মধ্যেই কয়েকশো গোর্খা রবিবার মিছিলে সামিল হন।

সালুয়ার বুদ্ধ মন্দির থেকে শুরু হয়ে ওই মৌনী মিছিল শেষ হয় গোপালির কাছে ‘নো-শ্যুটিং’ জোনে। মিছিলে মহিলা ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। তাদের হাতে প্ল্যাকার্ডে বার্তা, ‘গোর্খা অলওয়েজ ফাইট ফর পিস’। মহিলা নেত্রী রিক্কি লামা বলছিলেন, “মৌনতাই মিছিলের কারণ বুঝিয়ে দিয়েছে। প্রত্যেকেই চায় নিজের অধিকার, নিজের ভূমি। গোর্খারা কি শুধু সীমান্ত পাহারার জন্য আত্মবলিদান দেবে! পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে আমরা সমর্থন করি। একই সঙ্গে পাহাড়ে দ্রুত শান্তি চাই।” মিছিলের পুরোভাগে থাকা বিকাশ থাপারও বক্তব্য, “আমরা দার্জিলিং-সহ যে কোনও এলাকায় অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তির দাবিতে এই মিছিল করেছি। আমরা চাই গোর্খাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সরকার শান্তি ফেরানোর ব্যবস্থা করুক।”

এ দিনের মিছিলে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল না। মিছিলে সামিল গোর্খারাও সেভাবে কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তৃণমূলের দাবি, বিজেপির মদতেই এই কর্মসূচি। তৃণমূলের সালুয়ার সভাপতি রোশন ঘিসিঙ্গ বলেন, “বিজেপির উস্কানিতে মিছিল হয়েছে। আমরা চাই গোর্খারা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচুক। কিন্তু বাংলা ভাগ চাই না।’’ মিছিল আয়োজনের কথা না মানলেও সালুয়ার গোর্খাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতারা। দলের খড়্গপুর গ্রামীণ দক্ষিণ মণ্ডল সভাপতি সৈকত শতপথী বলেন, “গোর্খারা দলমত নির্বিশেষে মিছিল করেছে। আমরাও চাই পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসুক। তাই মিছিলকে সমর্থন করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE