Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Bangodhani yatra

বাড়ি চাই, ভাতা চাই শুনে ধৈর্য ধরার নিদান

সরকারের উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড হাতে নিয়ে বাড়ি ছুটছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। সেখানে কড়া নজর রয়েছে ‘পিকের টিমে’র।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

উন্নয়নের ‘রিপোর্ট কার্ড’ হাতে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন তৃণমূলের নেতা,বিধায়কেরা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথাও বলে বোঝাচ্ছেন, গত দশ বছরের তৃণমূল সরকার কত উন্নয়ন করেছে। কিন্তু পাল্টা প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাঁদের। শুনতে হচ্ছে বাড়ি চাই, বার্ধক্য ভাতা চাই বা বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দিন। এ সবের চটজলদির সমাধানও শাসকদলের নেতাদের হাতে নেই। ফলে, প্রাথমিক অস্বস্তি কাটিয়ে ‘একটু অপেক্ষা করুন’ বলেই পরিস্থিতির সামাল দিচ্ছেন যুব নেতা থেকে বিধায়ক— শাসকদলের সব স্তরের প্রতিনিধিরাই।

বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা চালুর দাবি বহু পুরনো। এই সব পরিষেবা পেতে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরেও প্রচুর ভিড় হচ্ছে। দেখা যাচ্ছ, স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথীর পরই রয়েছে ভাতার দাবি। বাড়ি বাড়ি উন্নয়ন প্রচারেও সে কথাই শুনতে হচ্ছে তৃণমূলের নেতা, জনপ্রতিনিধিদের।

প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, এখন ষাট বছর বয়স পেরোলেই প্রতি মাসে এক হাজার করে টাকা করে বার্ধক্য পাতা পাওয়া যাবে। রয়েছে বাংলা আবাস যোজনা, পুর এলাকায় ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্প। প্রতিটি ক্ষেত্রেই একটি নির্দিষ্ট নিয়মে উপভোক্তা চিহ্নিত হয়। চলতি আর্থিক বছরে তফসিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণিভুক্ত পরিবারের কারও ষাট বছর হলেই বার্ধক্য ভাতা চালু করেছে সরকা। ‘জয় জোহার’ ও ‘তফসিলি বন্ধু’ নামে পৃথক দুটি প্রকল্পও চালু হয়েছে। প্রকল্পের সংখ্যা বাড়লেও ‘কোটা’র গেরোয় অনেকেই ভাতা চেয়েও পাচ্ছেন না। একই ছবি বাড়ির তৈরির ক্ষেত্রেও।

ভোটের আগে জনসংযোগের লক্ষ্যে এখন চলছে তৃণমূলের ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’ কর্মসূচি। সরকারের উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড হাতে নিয়ে বাড়ি ছুটছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। সেখানে কড়া নজর রয়েছে ‘পিকের টিমে’র। পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়েও তৃণমূলের যুব নেতা থেকে বিধায়ক, ব্লক সভাপতি-সহ সব স্তরের নেতারা এখন এই জনসংযোগে ব্যস্ত। আর সেখানেই শুনতে হচ্ছে,কবে চালু হবে সাধারণ ভাতা? কবেই বা মিলবে বাড়ির টাকা? চন্দ্রকোনার বিধায়ক ছায়া দোলই ও চন্দ্রকোনা পুরসভার প্রশাসক অরূপ ধাড়ারা মানছেন, “এটা সত্যি, সবার এখন সাধারণ ভাতা এবং বাড়ির দাবি রয়েছে। কার্ড ধরালেই তাঁরা এগুলির দাবি তুলছেন। সরকার পদক্ষেপ করেছে। আমরা এ কথাই তাঁদের বলছি।’’ ঘাটালের যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ মণ্ডল ও ঘাটাল শহর তৃণমূল সভাপতি অরুণ মণ্ডলেরও বক্তব্য, “রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুতের কোনও চাহিদা নেই। এখন শুধু বাড়ি আর ভাতা।’’

ঘাটাল মহকুমা জুড়েই এক ছবি। দাসপুরের দুই ব্লক তৃণমূল সভাপতি আশিস হুতাইত ও সুকুমার পাত্র এবং ক্ষীরপাই পুরসভার প্রশাসক দুর্গাশঙ্কর পান বলছিলেন, “দুয়ারে সরকারে এসেও অনেকে নাম লেখাচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের কাছেও আবেদন করছেন।’’ এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘এতদিন মিথ্যা প্রতিশ্রুতি চলছিল। নেতাদের কাছে পায়নি সাধারণ মানুষ। নাগালে পেয়েই তাই তাঁরা চাহিদার কথা তুলে ধরছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bangodhani yatra TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE