Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Paschim Medinipur

TMC Leader: ‘দয়া করে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করবেন না’! প্রণামে বিরক্ত তৃণমূল নেতা নোটিস টাঙালেন

সুজয় বলেন, “আমার কাছে যাঁরা এসে তাঁদের সমস্যার কথা জানান, চেষ্টা করি তাদের সমস্যার সমাধান করার। কিন্তু কোনও কাজ করানোর জন্য এসেই প্রণাম করা বা কথা বলে যাওয়ার সময় প্রণাম করলে আমি তাঁদের কাজ করব না।”

তৃণমূল নেতা সুজয় হাজরার (ডান দিকে) সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল নেতা সুজয় হাজরার (ডান দিকে) সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ ১৮:০০
Share: Save:

বয়োজ্যেষ্ঠদের দেখলে অনেকেই তাঁদের পায় হাত দিয়ে প্রণাম করেন। এটা বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। কিন্তু সেই প্রণামের ঠেলাতেই জেরবার হয়ে এক তৃণমূল নেতা বাড়ির বাইরে নোটিস টাঙিয়ে দিলেন, ‘দয়া করিয়া পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করিবেন না’! তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজয় হাজরা। তাঁর বাড়ির দেওয়ালে টাঙানো এই নোটিস নিয়ে আলোচনা চলছে জোরদার।

সুজয় জানিয়েছেন, তিনি প্রণামের বিরোধী নন। তবে যখনই কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন বা কোনও কাজ নিয়ে আসেন, ঢিপ করে পায়ে হাত গিয়ে প্রমাণ ঠোকেন। এটাই যেন ক্রমে একটা বিড়ম্বনার পর্যায়ে পৌঁছচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। তাই বাধ্য হয়েই দেওয়ালে এমন একটা নোটিস টাঙিয়ে আগেভাগেই সতর্ক করে দেওয়ার একটা কৌশল মাত্র।

নিজের বাড়িতে যেমন বসেন, তেমনই নান্নুর চকে দলীয় কার্যালয়ে বসেন সুজয়। বাড়িতে দলের কর্মীরা এবং বহু মানুষ সমস্যা নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তেমনই দলীয় কার্যালয়েও তাঁর সঙ্গে অনেকেই দেখা করতে যান। তাঁদেরই অনেকে নেতার সঙ্গে দেখা করতে এসেই তাঁকে প্রণাম করার জন্য শশব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ আবার ‘গদগদ ভাব’ দেখিয়ে প্রণাম করেন নেতাকে। এ প্রসঙ্গে সুজয় বলেন, “আমি প্রণামে বিশ্বাস করি না। বাড়ির বড়দের প্রণাম করে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। দলের নেতা হিসেবে প্রণাম নেওয়া শোভনীয় নয়।” তিনি আরও মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, “কোন অনুষ্ঠানে বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে দেখা হলে তখন প্রণাম করা যেতে পারে।”

কিন্তু তাঁর দলীয় কার্যালয় এবং বাড়িতে প্রতি দিন শ’দুয়েক লোক আসেন বিভিন্ন কাজে দেখা করতে। দলের কর্মীরা আসেন দলগত কাজের বিষয়ে কথা বলতে। বাড়িতে এলেই বা দলীয় কার্যালয়ে দেখা হলেই অনেকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে ফেলেন। এখানেই আপত্তি সুজয়ের। প্রণাম-বিড়ম্বনা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে তাই দলীয় কার্যালয়ের দায়িত্বে যে সব কর্মীরা আছেন, তাঁদের আগে ভাগেই বলে রেখেছেন পায়ে হাত গিয়ে যেন কেউ প্রণাম না করেন। এই বার্তাটা যেন সাক্ষাৎ করতে আসা ব্যক্তিদের জানিয়ে দেওয়া হয়। অফিস তো নয় সামাল দিলেন দলীয় কর্মীদের কাছে সেই বার্তা দিয়ে। কিন্তু বাড়ি! সেখানে প্রণাম আটকানোর বার্তা কী ভাবে দেবেন? তাই একটা উপায় নিজেই বার করে ফেলেন। বাড়ির দেওয়ালে নোটিস টাঙিয়ে বড় বড় বাংলা হরফে লিখে দিয়েছেন, ‘দয়া করিয়া কেউ পায়ে হাত গিয়ে প্রণাম করবেন না।’

সুজয় বলেন, “আমার কাছে যাঁরা এসে তাঁদের সমস্যার কথা জানান, চেষ্টা করি তাদের সমস্যার সমাধান করার। কিন্তু কোনও কাজ করানোর জন্য এসেই প্রণাম করা বা কথা বলে যাওয়ার সময় প্রণাম করলে আমি তাঁদের কাজ করব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Paschim Medinipur tmc leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE