Advertisement
১৯ মে ২০২৪
জাতীয় সড়কে ৩৫ লক্ষ লুঠে গ্রেফতার ৫

১৪ লক্ষ টাকা উদ্ধার, আটক গাড়ি

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রসেনজিৎ সামন্ত, নির্মল সংগ্রাম, অমল দাস, দেবাশিস কর ও গাড়ির চালক মোহন শী। প্রসেনজিতের বাড়ি চণ্ডীপুর থানার ধান্যশ্রী গ্রামে হলেও সে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে থাকত।

উদ্ধার: লুঠ হওয়া টাকা ও ধৃতদের কাছে পাওয়া অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার: লুঠ হওয়া টাকা ও ধৃতদের কাছে পাওয়া অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তমলুকে জাতীয় সড়কে ধান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা লুঠের কিনারা করল পুলিশ। সোমবার রাতে তমলুকের রাধামনি বাজারের কাছে ওই ঘটনায় জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বুধবার রাতে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, ব্যবহৃত একটি গাড়ি ও ধারালো অস্ত্র।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রসেনজিৎ সামন্ত, নির্মল সংগ্রাম, অমল দাস, দেবাশিস কর ও গাড়ির চালক মোহন শী। প্রসেনজিতের বাড়ি চণ্ডীপুর থানার ধান্যশ্রী গ্রামে হলেও সে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে থাকত। নির্মল ও অমলের বাড়ি ভূপতিনগর থানার কলমিছাবাড় গ্রামে। দেবাশিস পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার পুনাপাট গ্রামের বাসিন্দা। মোহনের বাড়ি ভগবানপুর থানার তেঠিবাড়ি গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রসেনজিতের বিরুদ্ধে আগেও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। সে জেলও খেটেছে। বৃহস্পতিবার ধৃত ৫ জনকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের টাকা লুঠের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানা গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি টলছে। অন্য কেউ এদের ‘সুপারি’ দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, দুষ্কৃতীদের দলটি আগেও একাধিক এধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই দিন তারা কোলাঘাটের আগে থেকেই ব্যবসায়ীদের গাড়ির পিছু নিয়েছিল। এমনকী ব্যবসায়ীরা হোটেলে খাওয়াদাওয়া করার সময়ও তাঁদের উপর নজর রেখেছিল তারা। এরপর জাতীয় সড়কে ব্যবসায়ীদের গাড়ি আটকে টাকা লুঠ করে পালায় তারা। পরে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারাও করে নেয় তারা।

গত সোমবার রাতে পটাশপুর থানা এলাকার বাসিন্দা চার ধান ব্যবসায়ী অজয় মান্না, চৈতন্য খাটুয়া, নন্দদুলাল জানা ও লক্ষ্মীকান্ত জানা উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থেকে ধান বিক্রির টাকা নিয়ে ফিরছিলেন। কোলাঘাটের কাছে এক হোটেলে খাওয়াদাওয়া সেরে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক ধরে নন্দকুমারের দিকে আসার পথে রাত ১ টা নাগাদ রাধামনি বাজারের কাছে দুষ্কৃতীরা তাঁদের গাড়ি আটকায়। গাড়ির দরজার কাচ ভেঙে চার ব্যবসায়ীর মাথায় বন্দুক-ভোজালি ঠেকিয়ে ৩৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা লুঠ করে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীদের তল্লাশিতে নামে পুলিশ। জাতীয় সড়কে থাকা সিসি ক্যামেরায় হামলার ঘটনা ধরা পড়ে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে হামলাকারীদের ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর ও ছবি দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়। বুধবার রাতে ভূপতিনগর-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচজন পুলিশের জালে ধরা পড়ে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে নির্মল সংগ্রাম এবং অমল দাস পটাশপুরের ওই ধান ব্যবসায়ীদের চিনত। দু’জনের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগ রয়েছে। নির্মল ধান বিক্রি করতে আসত ধান ব্যবসায়ী অজয় মান্নার গোলায়।

তবে টাকা লুঠে দু’দিনের মাথায় পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার ও লুঠের টাকার অর্ধেক উদ্ধার করলেও জাতীয় সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। গত বছর জানুয়ারি মাসে কাপাসএড়িয়ার কাছে টহলদারির সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়েছিল মহিষাদল থানার কনস্টেবল নবকুমার হাইতকে। ওই ঘটনার পর জাতীয় সড়কে নিরপত্তা বাড়াতে পুলিশি টহলদারির পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এই ঘটনায় পুলিশি টহলদারি আরও বাড়ানোর দাবি উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loot Arrest Tamluk তমলুক
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE