Advertisement
E-Paper

থানায় জলসা, রাশ টানলেন পুলিশ সুপার

শুধু দাঁতন নয়। কালীপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল শালবনি থানাও। সেই অনুষ্ঠান নিয়েও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। শালবনি স্কুলের মাঠে ওই অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল পড়ুয়াদের একাংশ।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৬
পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।

পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।

থানা হোক বা ফাঁড়ি। কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে গেলে এবার অনুমতি নিতে হবে জেলার পুলিশ সুপারের। গত শুক্রবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, ‘‘এ বার থেকে অনুমতি নিয়েই থানায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা যাত্রা করতে হবে। লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট সকলকে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

সম্প্রতি কালীপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল দাঁতন থানা। সেই অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। পুলিশ সূত্রের খবর, এরই জেরে এই অনুমতি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি। এই বিজ্ঞপ্তির পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা পুলিশ মহলে। অনেকেই মনে করছেন,অনুমতি নেওয়ার কথা বলাই আগামী দিনে হয়তো থানায় অনেক অনুষ্ঠান কমে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুলিশকর্মী বলছেন, “আমাদের বিশেষ কোনও ছুটিছাটা নেই। উৎসব-অনুষ্ঠানেও ডিউটি করতে হয়। এলাকার মানুষকে নিয়েই অনুষ্ঠান করতাম। এ বার যে কী হবে!” দাঁতন থানার উদ্যোগে আয়োজিত সঙ্গীতশিল্পী মেখলা দাশগুপ্ত গান গাইতে এসেছিলেন। মেখলার অভিযোগ, অনুষ্ঠান চলাকালীন তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করে থানার পুলিশকর্মীদের একাংশ। থানার অনুষ্ঠানে এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়েই ফেসবুক লাইভে মুখ খোলেন মেখলা। যদিও উদ্যোক্তাদের দাবি,ওই অনুষ্ঠানে বাইরের দর্শকেরাও এসেছিলেন। তাই কারা এমন ঘটনায় যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তভার দেওয়া হয়েছে, খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীকে। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলেছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে ওইদিন পুলিশকর্মীদের সঙ্গেই মিশেছিলেন অনেক দর্শক। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করা গেলে শুরু হবে তদন্ত। সে ক্ষেত্রে তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে জেলা পুলিশ সুপারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মেখলা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সমাজ সংস্কারক নই। কিন্তু আমি চাই, এরকম পরিস্থিতি যাতে কাউকে ভোগ করতে না হয়। পুলিশ সুপারের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট ইতিবাচক।’’ এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘শুধু থানা নয়। অন্যত্র অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমন নজরদারি থাকলে ভাল। আমার সঙ্গে যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল, তারা শাস্তি পাক এই দাবি থাকবেই।’’

শুধু দাঁতন নয়। কালীপুজো উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল শালবনি থানাও। সেই অনুষ্ঠান নিয়েও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। শালবনি স্কুলের মাঠে ওই অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল পড়ুয়াদের একাংশ। তাদের বক্তব্য ছিল, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার সময় অনুষ্ঠান হলে অসুবিধার মুখে পড়তে হবে। হইচই শুরু হওয়ায় স্কুল চত্বরে অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়। পরে প্রস্তাব আসে, ঘেরা হলে অনুষ্ঠান হোক। শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয় ওই অনুষ্ঠান। গোটা রাজ্য জুড়েই থানায় কালীপুজো হয়। বাসিন্দারা সরাসরি যুক্ত থাকেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট কমিটি। তাদের উদ্যোগে নানারকমের অনুষ্ঠান করে। তবে আপাতত পশ্চিম মেদিনীপুরে থানায় বিনোদনে রাশ টানলেন পুলিশ সুপার।

Police Super Permission Function
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy